শুক্রবার হঠাত করেই লাদাখে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীর এই সফরের কথা জানা ছিল না সংবাদ মাধ্যমের কাছেও। সেনার পাশে দাঁড়িয়ে সেখানে চিনকে সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে হুঁশিয়ারি দিলেও শনিবার প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল অহিংসার কথা। এদিন অসধা পূর্ণিমা বা গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে ভিডিও বার্তা দেন। যেখানে তাঁকে স্মরণ করতে দেখা গেল গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা ও বাণী।
গৌতম বুদ্ধের দেখানো পথে হেঁটেই বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান সম্ভব। ধর্মচক্র দিবসে এমনই বার্তা দিতে দেখা যায় প্রধাননমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তিনি বলেন, ‘এই পূর্ণিমাকে গুরু পূর্ণিমাও বলা হয়ে থাকে। আজকের দিনে আমাদের গুরুদের স্মরণ করার দিন, তাঁরা আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন তা মেনে জীবনের পথে এগিয়ে চলার দিন। সেই উপলক্ষ্যেই আমরা ভগবান বুদ্ধকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, গৌতম বুদ্ধ মানুষকে একে অপরের প্রতি, গরিবের প্রতি, নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে শিখিয়েছিলেন। সব সময়ে শান্তি এবং অহিংসার পথে চলতে বলেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘ভগবান বুদ্ধের দেখানো আট-দফা পথই মানুষ এবং জাতির ভালো থাকার রসদ। তাঁর শিক্ষায় বার বার উঠে এসেছে করুণা ও দয়াশীল হওয়ার মাহাত্ম্য। ভাবনা এবং কাজে সরলতা রক্ষা করে চলার উপরেই তিনি বার বার জোর দিয়েছেন।’
মোদীর কথায়, “গৌতম বুদ্ধের বাণী আজও প্রাসঙ্গিক। আর ভবিষ্যতেও তা থাকবে।” গত শুক্রবারই লেহতে দাঁড়িয়ে গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এর পিছনে কূটনীতি রয়েছে বলে দাবি করছেন অনেক আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞই।
রাজনৈতির মহলের কথায়, লাদাখে দাঁড়িয়ে বুদ্ধের দেখানো শান্তির পথে হাঁটার বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। যা আদপে লাদাখের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে টানার বার্তা। ভোটের কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী এই পথে হেঁটেছেন বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। আবার এই কথার মাধ্যমে তিব্বত এবং চিনকেও ঘুরিয়ে বার্তা দেওয়া গেল বলে দাবি করছেন অনেকে।
প্রতিবছর এই ধর্মচক্র দিবসে প্রায় ৩০ লাখ ভক্ত অংশ নেন। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের উদ্যোহে আন্তর্জাতিক বুদ্ধিস্ট কনফেডারেশন এই উৎসবের আয়োজন করে থাকে। তবে এবার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে যে যার বাড়িতেই প্রার্থনা করে ধর্মচক্র দিবস পালন করছেন। অসধা পূর্ণিমায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরে বিমানবন্দর তৈরি হওয়ার প্রসঙ্গও এদিন তোলেন মোদী। কথিত আছে কুশিনগরেই দেহত্যাগ করেছিলেন গৌতম বুদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেন নতুন বিমানবন্দর তৈরি হলে এখানে আরও তীর্থযাত্রী ও পর্যটক আসতে পারবেন।