দেখতে দেখতে মণিপুর হিংসার এক মাস হয়ে গেল। গত ৩ মে থেকে জাতিগত দাঙ্গার কারণে উত্তাল হয়েছিল মণিপুর। সংঘর্ষে মৃত ৯৮। আহত হয়েছে ৩০০ জন।
দেখতে দেখতে এক মাসে পৌঁছে গেল মণিপুরের সংঘর্ষ। জাতিগত হিংসায় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৮ জনের মৃত্যু নিহত হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। মেইতি সম্প্রদায়ের তাফসুলু উপজাতির মর্যাদার দাবিতে গত ৩ মে আন্দোলন শুরু করে। তারপরই ১০টি জেলায় সংর্ঘষ ছড়িয়ে পড়ে। তারপর টানা একমাস ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে মণিপুরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উত্তর - পূর্বে রাজ্যে পৌঁছেছেন অমিত শাহ।
মণিপুরের জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতি সম্প্রদায়ের। এই রাজ্যের মূল বাসিন্দারা হল নাগা ও কুকরি। যারা জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে বর্তমানে মণিপুরের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। বর্তমানে বেশ কয়েকটি জেলায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। পশ্চিম ইম্ফল , পূর্ব ইম্ফল ও বিষ্ণুপুরে ১২ ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। জিরিরামে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ৮ ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। থৌবাল ও কাকচিং-এর সাত ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছে। চারাচাঁদপুর ও চান্দেল জেলায় কয়েকটি জায়গায় ১০ ঘণ্টা কার্ফু থাকবে। অন্যদিকে তামেংলিং, ননি-সহ কয়েকটি জেলায় একদমই কার্ফু থাকবে না।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী মণিপুরের ৪ হাজারেরও বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে। কুকি ও মেইতিদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েক হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গতকালই অমিত শাহের চার দিনের মণিপুর সফর শেষ হয়েছে। এই সফরে তিনি যে মূলত রাজ্যের শান্তি ও শৃঙ্খলার ওপর জোর দিয়েছেন তা প্রথম থেকেই জানিয়েছেন তিনি। তিনি যুযুধান দুই সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছেনন। নিরাপত্তা বাহিনীকে সক্রিয় থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। অমিত শাহের কথায় ২০ এপ্রিল মণিপুর হাইকোর্ট একটি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়ে রাজ্যের মতামত জানতে চাওয়ার পরেই রাজ্যে দাঙ্গা তৈরি হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন।
গত রবিবার মণিপুরের প্রায় ৬টি জায়গায় আবার নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সশস্ত্র গোষ্ঠী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে এন বীরেণ সিং বলেছেন, সাম্প্রতিক সংঘর্ষটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। এটি কুকি জঙ্গে ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সশস্ত্র জঙ্গিরা স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যা করতে ও ভয় দেখাতে AK-47, M-16 এবং স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করছে। তাই নিরাপত্তা বাহিনী পাল্টা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। সেই সময়ই এখনও পর্যন্ত রাজ্যে প্রায় ৪০ জন বিচ্ছিন্নতাবাদীর মৃত্যু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, এই ৪০ জনই স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও সাধারণ মানুষদের ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় যুক্ত ছিল।