মহারাষ্ট্রের বিশেষ এএনআই আদালত এই দুজনকেই ৮বছরের সাজা শুনিয়েছে। বেআইনী কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী দুজনকে সাজা শোনানো হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ের মালভানি আইসিস মামলায় (Malvani ISIS Case) সাজা শোনাল আদালত (NIA Court)। মুসলিম যুবকদের ইসলামিক স্টেটের (ISIS) সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া ও উগ্রবাদী ভাবধারা প্রকাশের জন্য গ্রেফতার (Arrest) করা হয় দুই যুবককে। এরা হল রিজওয়ান আহমেদ ও মহসিন ইব্রাহিম। মুম্বইয়ের (Mumbai) মালভানি আইএসআইএস মামলায় (Malvani ISIS Case)সাতই ডিসেম্বর অর্থাৎ শুক্রবার মহারাষ্ট্রের বিশেষ এএনআই আদালত এই দুজনকেই ৮বছরের সাজা শুনিয়েছে। বেআইনী কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের ২০ ধারা অনুযায়ী দুজনকে সাজা শোনানো হয়েছে। কারাদন্ডের পাশাপাশি, দুজনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে।
আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে জরিমানা না দিলেন শাস্তি আরও তিন মাস বাড়ানো হবে এই দুই আসামীর। উল্লেখ্য, অ্যান্টি টোরিরিজম স্কোয়াড ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুম্বইয়ের কালাচৌকি পুলিশ স্টেশনে মামলাটি দায়ের করেছিল। ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ মামলাটি পুণরায় দায়ের করা হয়েছিল। সেই বছরই ১৮ জুলাই মামলায় চার্জশিট দাখিল হয়েছিল। ধৃতদের বিরুদ্ধে ১৮টি ধারায় মামলায় দায়ের করা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছে ইউএপিএ ধারাও।
তদন্তে জানা গেছে রিজওয়ান আহমের ও মহসিন ইব্রাহিম সাইয়িদ মাওয়ানি এলাকার মালাদ ও মুম্বই থেকে মানসিকভাবে ধর্মভীরু মুসলিম যুবকদের প্ররোচিত করে অথবা ভয় দেখিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল। ইসলামের জন্য ফিদায়িন যোদ্ধা হতে বাধ্য করেছিল। পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যে পাঠানোর ক্ষেত্রেও এই দুই অভিযুক্ত সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। রিওয়ান ও মহসিন মূলত আইসিসি সংগঠনের জন্যই জঙ্গিদের নিয়োগের কাজ করত।
এই মামলায় দুই আসামী আদালতে দাঁড়িয়ে নিজেদের দোষ কবুল করে নেয়। এর পাশাপাশি ৩৯ জন সাক্ষীর বয়ানও নথিভুক্ত করা হয়েছে। মামলা চলাকানী এক আসামী বছর ৩২এর মহসিন ইব্রাহিম বলে, 'আমি গত ৬ বছর কারাগারে বন্দি ছিলাম, আমি আইএসআইএস এর ভিডিও ও প্রচারে দীর্ঘ দিন ধরেই প্রভাবিত ছিলাম। আইএসআইএস সংগঠনে যোগদানের জন্য দেশ ছেড়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেছি। কিন্ত ব্যর্থ হয়েছি। ' পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল বলেও জানিয়েছে সে। তবে কারাগারে থাকার সময়ই নিজের ভুল সে বুঝতে পারে বলেও জানিয়েছে। পুলিশের ভুল সংশোধন করতে ইচ্ছুক বলেও সে জানিয়েছেন। পাশাপাশি পুনর্বাসনের আবেদনও জানিয়েছিল। যদিও কারাগার তার ওপর কোনও চাপ তৈরি করেনি বলেও জানিয়েছে সে।
রিওয়ান আহমেদ বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল, সে মূল ধারার সমাজে ফিরতে চায়। পুনর্বাসনেরও আবেদন জানিয়েছিল সে। সে আরও বলেছিল জেলে থাকাকালীন সে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। সেই সময় তার ওপর কোনও চাপ তৈরি করা হয়নি। সে আরও জানিয়েছেন আইসিসি জঙ্গে সংগঠনের হয়ে প্রচারের কাজে সে যুক্ত ছিল। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের থেকে এসেছে সে। স্ত্রী বৃদ্ধ অভিভাবক ও দুই সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব তার ওপর রয়েছে। তাই সে পুনর্বাসনের আবেদন জানিয়েছে। এনআইএর বিশেষ আইনজীবী প্রকাশ শেট্টি বলেন আদলতের উচিৎ নিঃশর্ত আবেদন গ্রহণ করা।