শ্রীধরের মা আনুশা চামরে জানিয়েছেন তাঁর ছেলের বয়স ৩২। মাত্র তিন মাস আগেই খালাসি বা মৎস শ্রমিক হিসেবে জয়ন্তীলাল রাঠোরের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেছিল।
'আমার ছেলে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করেনি। দেশের সীমান্তের মধ্যেই ছিল।' পাকিস্তানের মেরিনটাইম সিকিউরিটি এজেন্সির
(PMSA) গুলিতে নিহত ভারতীয় মৎসজীবীর (Indian Fishermen) মা এমনটাই জানিয়েছেন দিপ্ত কণ্ঠে। পাক নেভির গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক মৎসজীবীর। এই ঘটনায় রীতিমত ক্ষুদ্ধ সন্তানহারা মা। সূত্রের খবর পাকিস্তান নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন মহারাষ্ট্রের পালঘরের বাসিন্দা মৎসজীবী শ্রীধর চামরে। তিনি ভাদ্রাই গ্রামে থাকতেন। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই মৎসজীবী। পেটের টানে সমুদ্রে যান মাছ ধরতে। তাই শ্রীধরের মৃত্যু স্বভাবতই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে।
শ্রীধরের মা আনুশা চামরে জানিয়েছেন তাঁর ছেলের বয়স ৩২। মাত্র তিন মাস আগেই খালাসি বা মৎস শ্রমিক হিসেবে জয়ন্তীলাল রাঠোরের সঙ্গে কাজ করতে শুরু করেছিল। সূত্রের খবর তার ছেলে শ্রীধরেকে বুকে বেশ কয়েকটি গুলি করেছে পাকিস্তান নেভির সদস্যরা। গত ২৬ অক্টোবর রাঠোদের নৌকা জলপরীতে রওনা দিয়েছিল। খুব তাড়াতাড়ি উপকূলে ফিরে আশার কথা ছিল। তেমনই জানিয়েছেন নিহত মৎসজীবী শ্রীধরের বাবা রমেশ। তিনিও পেশায় একজন মৎসজীবী ছিলেন। তিনি আরও বলেছেন তাঁরা গোটা ঘটনা শুনেছেন। তিনি আরও বলেন তিনি শুনেছেন পাকিস্তানের নৌবাহিনী ৬ ভরতীয় মৎজীবীকে অপহরণ করেছে। আর তাদের নৌকাটি বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে এখনও পর্যন্ত সরকারি তরফে তাদের কিছু জানান হয়নি বলেও জানিয়েছে।
নৌকার আরেক এক সদস্য দিলীপ ট্যান্ডেলও গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে গুজরাটের ওখা হাসপাতালে। দ্বারকার পুলিশ সুপার সীনীল যোশি বলেছেন ভারতীয় দণ্ডিবিধির ৩০৩ ধারায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর মেরিন কমান্ডারদের বিরুদ্ধে। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পোরবন্দরের নভিবন্দর উপকূলীয় থানার পুলিশ। শ্রীধরের দেহ ইতিমধ্যেই দেশে ফেরত পাঠিয়েছে পাকিস্তান। শ্রীধরের দেহ ময়না তদন্ত করা হচ্ছে। শ্রীধরের নিথর দেশ সোমবার সন্ধ্যায় পালঘরে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Fisherman Shot Dead: ভারতীয় মৎসজীবীকে গুলি করে হত্যা, পাকিস্তানের কার্যকলাপ নিয়ে তদন্ত শুরু
BJP Executive Meeting: বিজেপি কেন ক্ষমতায়, কংগ্রেসকে খোঁচা দিয়ে দলীয় বৈঠকে কারণ জানালেন মোদী
মৎসজীবী সমিতির পক্ষ থেকে শ্রীধরের মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপুরণ দাবি করা হয়েছে। কারণ দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরির বিনিয়ম কাজ করত শ্রীধর। তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে। শ্রীধরের অকাল মৃত্যুতে গোটা পরিবারের সামনে অন্ধকার নেমে এসেছে। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়ই যাতে ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থা করে তারও আবেদনে জানান হবে। মৎজীবীদের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে মাছধরা নৌকা জলপরী ভারতীয় জলসীমানার মধ্যেই ছিল। পাকিস্তানের সীমান্তে অনুপ্রবেশ করেনি। ভারত ও পাকিস্তানের জলসীমার মধ্যে কোনও সীমারেখা নেই। কিন্তু দুই দেশের সীমারেখা নির্ধারণের জন্য ভারতীয় মৎসজীবীরা জিপিএস বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম ব্যবহার করেন। অন্য দেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করলে এই প্রযুক্তি সতর্ক করে। জিপিএস-এ ত্রুটিও থাকতে পারে। কিন্তু ভারতীয় মৎসজীবীরা আঞ্চলিক সীমানা জানে। তাই পাকিস্তানের জলসীমায় তারা প্রবেশ করে না।
পাকিস্তান ইন্ডিয়া পিপিলস ফোরাম ফর পিস অ্যান্ড ডেমোক্রেসির সদস্য যতীন দেশাই নিহত মৎসজীবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানি.য়েছেন পাশাপাশি পাকিস্তানের এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। দেশাই আরও বলেন এবার বিষয়টি নিয়ে ভারতের কথা বলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে।