কলকাতা কেন ভারতের রাজধানী হবে না
নেতাজির ১২৪তম জন্মদিবসে বৈপ্লবিক প্রস্তাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শাসন কাঠামোয় আমূল পরিবর্তনের সুপারিশ তৃণমূল সুপ্রিমোর
ঠিক কী বললেন বাংলার মুক্যমন্ত্রী
নেতাজি-র ১২৪তম জন্মদিন ঘিরে রাজ্যে একেবারে সাজো সাজো রব। বিকালে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিকে সকাল থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মূল অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে এক অভিনব প্রস্তাব তুললেন মমতা। এদিন ভাষণ চলাকালীন তিনি বলেন, একসময় ইংরেজ রা কলকাতা থেকে গোটা ভারত শাসন করত। কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী হলে বর্তমানে কেন কলকাতা ভারতের একটি রাজধানী হবে না, সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি।
মমতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর দেশ ভারতে তাঁর মতে অন্ত ৪টি রাজধানী থাকা উচিত। একটি রাজধানী হতে পারে দক্ষিণ ভারতে, কর্নাটক, কেরল, তামিলনাড়ু বা অন্ধ্রে এই রাজধানী হতে পারে। আরেকটি উত্তরভাতে, দিল্লি অথবা উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব হরিয়ানার কোনও এক জায়গায়। তৃতীয় রাজধানী পূর্বভারতের কলকাতায়। এবং আরও একটি রঝধানী দেশের উত্তর-পূর্ব অংশে করা উচিত বলে মত দেন তিনি। মমতা বলেন, দেশের সংসদের চারটি অধিবেশন, এই চার রাজধানীতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে করা হোক। তৃণমূল সাংসদদের এই প্রস্তাব সংসদের অধিবেশনে তোলার নির্দেশও দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন - কলকাতায় আসার আগেই মোদীর বাংলায় টুইট, বঙ্গের ভাই-বোনদের কী বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রসঙ্গত ১৭৭৩ সালে কলকাতায় স্থাপিত হয়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পারনির সদর দফতর। ধীরে ধীরে কলকাতা হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। ১৯১১ সালে রাজধানী কলকতা থেকে নয়াদিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। এর মূল করণ ছিল, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিপ্লবী সংগঠনগুলির কার্যক্রম ক্রমে বাড়ছিল কলকাতায়।
পূর্ব ভারতের রাজধানী কলকাতায় কেন করা উচিত, তার পিছনে যুক্তিও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, প্রথমত একসময় এই কলকাতাই ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল। দ্বিতীয়ত, এই রাজ্যেই বেলেঘাটার গান্ধী ভবনে আন্দোসলন করতে আসতেন গান্ধীজি। রবীন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনও শুরু করেছিলেন এই রাজ্য থেকেই। আর এই রাজ্য থেকেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ভারত কে স্বাধীন করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তাই কলকাতায় ভারতের একটি রাজধানী করার দাবি জানান মমতা।
তবে মমতার এই প্রস্তাব অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। পদ্ম শিবিরের মতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনেকর বক্তৃতা তাঁর মানসিক সুস্থতা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এদিন বক্তৃতায় আরও একবার আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসাবে সাঁওতাল নেতা সিধু-কানহু'র সঙ্গে 'ডহর' বলে এক কাল্পনিক ব্যক্তিক্তকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি পদ্ম শিবির। এমনকী আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা বলেই কী তাঁদের এইভাবে বারবার অপমান করা হচ্ছে, এমন অভিযোগও তুলেছে তারা।