দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের নেপথ্যে ছিল ডেল্টা প্রজাতি। যা বি.১.৬১৭.২ নামেও পরিচিত। ইতিমধ্যেই সেই প্রজাতি নিজের রূপ পরিবর্তন করেছে। করোনার এই নতুন প্রজাতির নাম ডেল্টা প্লাস। যা কে৪১৭এন নামেও পরিচিত। ডেল্টার থেকে এই প্রজাতি আরও মারাত্মক হতে পারে বলে সতর্ক করলেন এইমস প্রধান রণদীপ গুলেরিয়া। ইতিমধ্যেই ব্রিটেনে ছড়িয়ে পড়েছে ডেল্টা প্লাস প্রজাতি। ফলে সেখানে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সেখান থেকে ভারতকে শিক্ষা নিতে বলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন- করোনার টিকা নিলেই ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে সেলুন, ছাড় মিলছে রেস্তরাঁতেও
করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশের একাধিক রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি হয়েছিল। কিন্তু, এখন দেশে করোনার দৈনিক সংক্রমণের পরিমাণ অনেক কম। আর সেই কারণে আনলক পর্ব শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্যে। আবার কিছু রাজ্যে বিধিনিষেধ জারি থাকলেও একাধিক ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে অনেক বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গুলেরিয়া। তাঁর মতে, দেশবাসী যদি করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ না মানেন তাহলে ফের সংক্রমণ দ্রুত হারে বাড়তে থাকবে।
তবে ডেল্টা প্লাস কতটা দ্রুত সংক্রমণ ছড়ায় সে বিষয়ে স্পষ্টভাবে কিছু বলেননি গবেষকরা। গুলেরিয়া জানিয়েছেন, "এই প্রজাতি আসলে ডেল্টার পরিবর্তিত রূপ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও নতুন এই প্রজাতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে যখন গোটা বিশ্বে সংক্রমণ নিম্নমুখী তখন করোনার নতুন এই প্রজাতি কতটা মারাত্মক হবে বা আদৌ হবে কি না তা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে কয়েক সপ্তাহ নতুন এই প্রজাতির দিকে নজর রাখতে হবে। তা হলেই একটা ধারণায় পৌঁছনো সম্ভব হবে।"
আরও পড়ুন- মাত্র ৫ মিনিটিরে ব্যবধানে কোভিশিল্ড আর কোভ্যাক্সিন, দুরকম করোনা টিকা নিয়ে কী হল মহিলার
বি.১.৬১৭.২ প্রজাতি অত্যন্ত দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়ায়। আর এই স্পাইক প্রোটিন হল ভাইরাসকে মানুষের কোষের মধ্যে ঢুকতে ও সংক্রমণ ছড়াতে সাহায্য করে। আর কে৪১৭এন প্রজাতি শরীরের কতটা ক্ষতি করবে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। তাই গুলেরিয়ার পরামর্শ, "নতুন এই প্রজাতিকে খুব হালকা ভাবে নিলে চলবে না। আমাদের এই ভাইরাসের পরিবর্তনকে ভালো ভাবে বুঝতে হবে। তার পর সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে হবে। সংক্রমণ ঠেকাতে ব্রিটেনে কয়েক মাস ধরে লকডাউন জারি ছিল। কিন্তু, লকডাউন ওঠার পরই সেখানে নতুন করে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ফলে এখনই যদি আমরা সতর্ক না হই তাহলে ৩ থেকে ৪ মাসের মধ্যে আমাদের দেশেও সেই একই ঘটনা ঘটবে। ফের সংক্রমণ দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়বে।"
আরও পড়ুন- অনুমোদনের অপেক্ষায় কোভিড টিকা ZyCov-D, ছাড়পত্র পেলেই টিকা পাবে শিশুরা
এর সঙ্গে জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের উপর আরও জোর দিতে বলেছেন গুলেরিয়া। বলেন, "এই ভাইরাসের চরিত্র বোঝার জন্য জিনোম সিকোয়েন্সিং-এর উপর আরও জোর দিতে হবে। এক্ষেত্রে টিকা কতটা কার্যকরী সেগুলি খতিয়ে দেখতে হবে।" যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে চলতি বছরের মার্চ থেকেই দেশে এই প্রজাতির হদিশ মিলেছিল। তাই এখনই এই প্রজাতি নিয়ে চিন্তাভাবনার কোনও দরকার নেই।