ভারতবাসীকে ৫ ট্রিনিয়ন অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেইমতই বাজেট পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। কিন্তু কী হবে সেই স্বপ্ন। নতুন অর্থবর্ষ শুরুর আগেই ভারতীয় আর্থনীতিতে আঘাত দিতে শুরু করেছে করোনাভাইরাস। ইতিমধ্যেই একাধিক ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বড়সড় ধাক্কা খেতে চলেছে দেশের সরকারি বেসরকারি উড়ান সংস্থাগুলি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে একাধিক উড়ান। কমছে যাত্রী সংখ্যা। ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে উড়ান সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যেই পুণরুজ্জীবনের প্যাকেজ নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রায় ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে। কিন্তু ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে তুলনামূলক ক্ষুদ্র শিল্পগুলিও।
আরও পড়ুনঃ করোনা আতঙ্কে নিম্নগামী শেয়ার বাজার, বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কায় ভারতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
বিজ্ঞানীদের মতে করোনার জীবানু মোকাবিলায় আগামী ৩০ দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সামাজিক দৃরত্ব বজায় রেখে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আতঙ্কে অনেকেই ঘর থেকে বার হতে চাইছেন না। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ, শপিং মল, সিনেমা-থিয়েটার হল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে জিম ও সুইমিংপুলগুলিও। এই সব সংস্থায় যুক্ত কর্মরত মানুষেরা ইতিমধ্যেই কাজ হারানোর আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই দিল্লি এক রেস্তোরা কর্মী বিমল জালান জানিয়েছেন গত ১২ বছর ধরে তিনি একটি রোস্তোরাঁয় কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সরকার বন্ধ ঘোষণা করার পরই তাঁর মাইনের ২৫ শংতাংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসে কাজ থাকবে কিনা তাই নিয়েও রয়েছে দুশ্চিন্তা। একই অসস্থা বেঙ্গালুরুর সুইমিং পুল ইন্সট্রাক্টরের। তিনি জানিয়েছেন, বিনা বেতনেই তাঁকে ছুটিতে পাঠিয়েছে মালিক। গত দুদিন ব্যবসায় মন্দা বলে সরাসরি জানিয়েছেন মুম্বই সেন্ট্রাল স্টেশনের এই ফল ব্রিক্রেতা। মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে দুইমেয়ে নিয়ে রীতিমত পথে বসার উপক্রম হবে তাঁর। তবে কিছুটা হলেও খুশির হাওয়া মাস্ক বিক্রেতাদের মধ্যে। একই ছবি দেখা গেল কলকাতায়। এখানে অবস্য শমিং মল, নিউমার্কে খোলা থাকলেও ক্রেতার দেখা নেই। ফাঁকা পড়ে রয়েছে নামিদামি রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে ফুটপাথের খাবারের দোকানগুলিও। সকলের একটাই প্রশ্ন কবে ঠিক হবে পরিস্থিতি।
আরো পড়ুনঃ ভারতের বুকে করোনার থাবা, স্থগিত আইসিএসসি-আইএসসি পরীক্ষা
ভারতের জিডিপি গ্রোথও তেমন আশাজনক নয়। ফেব্রুয়ারির প্রথম দুই সপ্তাহেই জিডিপি ৫.৪ শতাংশ থেকে নেমে হয়েছে ৫.৩ শতাংশ। আগামী দিনে হাল ফেরার সম্ভাবনা খুবই। ২০১৯ সালের সেপ্টম্বরে ভারতে গত সাত বছরের মধ্যে সবথেকে খারাপ জিডিপি গ্রোথ ছিল ভারতে। জিডিপি ছিল ৪.৭ শতাংশ। যা ৫ ট্রিনিয়ান অর্থনীতিতে পৌঁছানোর লক্ষ্য মাত্রার থেকে অনেকটাই কম। আগামী দিন গুলিতে কী হবে তাই নিয়েই আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা।
শুধু ভারত নয়। ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে চলেছে বিশ্ব অর্থনীতিও। সবমিলিও করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেলেও পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে রীতিমত সংশয় রয়েছে।