
২০২০-এর নির্বাচনের পর দীর্ঘদিন ধরেই বিজেপির সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য অব্যাহত। মঙ্গলবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চাইলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করেছে জেডিইউ।
ইতিমধ্যে আরজেডি নেত্রী রাবড়ি দেবীর বাড়ির সামনে দুপুর থেকেই ভিড় জমে আছে। তাঁর সঙ্গেই দেখা করতে আসছেন নীতীশ কুমার। আরজেডি-র সমর্থনেই ফের নতুন করে সরকার গঠন করতে পারেন তেজস্বী যাদব।
একদিকে নীতীশ কুমার যখন বিজেপির সঙ্গে তাঁর অবস্থান নিয়ে নিজের দলীয় বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন, তখনই তড়িঘড়ি পটনায় রাবড়ি দেবীর বাসভবনে আরজেডি, কংগ্রেস এবং বাম বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসেন লালুপ্রসাদের পুত্র তেজস্বী যাদব। ওই বৈঠকে তেজস্বীকে মহাজোটের বিধায়করা নীতীশ সরকারকে সমর্থনের পক্ষেই মত দিয়েছিলেন। আরজেডি এবং কংগ্রেসের সমর্থন পাওয়া প্রায় পুরোটাই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। আর তা হওয়ার পরই ইস্তফা দেওয়া নিয়ে খুব বেশি ভাবতে হয়নি নীতীশকে। কারণ মহাজোটের বিধায়কদের সমর্থন পেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকেও আরও অনেক বেশি সংখ্যক বিধায়ক থাকবে তাঁর পক্ষে।
২০২০ সালে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-র থেকে যথেষ্ট কম আসন পেয়েছিল জেডিইউ। তা সত্ত্বেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিল বিজেপি। ২০২২-এ নরেন্দ্র মোদীর নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি তিনি। তা নিয়েই রাজনীতির ময়দানে নতুন জল্পনা দানা বাঁধে। এমন আবহেই জেডিইউ ছেড়ে দেন নীতীশ কুমারের একসময়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত জেডিইউ-এর প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি আরসিপি সিংহ। নীতীশের আপত্তি সত্ত্বেও আরসিপি-কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হয়, যা নিয়ে অসন্তোষ বাড়ে। পরে আরসিপিকে আর রাজ্যসভা থেকে মনোনীত করা হয়নি। তাঁর বিষয়-সম্পত্তির হিসেব নিয়ে তদন্তের ইঙ্গিত দেন নীতীশ। ঠিক তখনই দলত্যাগ করে নীতীশকে ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বলে নিশানা করেন আরসিপি।
এই পরিস্থিতির পরেই মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নিজেদের দলের কোনও প্রতিনিধি থাকবেন না বলে জানিয়ে দেয় জেডিইউ। বলা বাহুল্য, নীতীশ বনাম বিজেপির দূরত্ব এই পর্যায়ে আরও স্পষ্ট হয়। এই ঘোষণার পরেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধিকে ফোন করেন নীতীশ কুমার। যার জেরে এই বিরোধিতা নয়া মাত্রা পায়। এর পরই দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। আরজেডি ও কংগ্রেস মিলেও বামেদের সঙ্গে আলাদাভাবে বৈঠক ডাকে। বিহার রাজ্য জুড়ে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দোলাচল আবারও স্পষ্ট হল।
আরও পড়ুন-
নীতিশ কুমারকে সমর্থন কংগ্রেস থেকে সিপিআইয়ের, আজ বিহারে জোট নিয়ে জোর আলোচনা
পদ্ম ছেড়ে 'হাত' ধরছেন নীতিশ, বিহারের রাজনীতিতে পালাবদল ঘটিয়ে সনিয়াকে ফোন জেডিইউর
'যাঁরা মদ্যপান করেন, তাঁরা ভারতীয় নন, মহাপাপী', মন্তব্য নীতিশের