
Operation Sindoor: মাত্র ২৫ মিনিট। এইটুক সময়ের মধ্যেই গুঁড়িয়ে গেল পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের সবচেয়ে কুখ্যাত কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটি। যে জঙ্গিঘাঁটিতে ২৬/১১ জঙ্গি হামলায় একমাত্র জীবিত জঙ্গি আজমল কাসব (Ajmal Kasab) এবং এই হামলার অন্যতম চক্রান্তকারী ডেভিড কোলম্যান হেডলি (David Coleman Headley) প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, সেসবও মাটিতে মিশে গেল। মঙ্গলবার গভীর রাতে 'অপারেশন সিঁদুর'-এর (Operation Sindoor) মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদে মদত দিয়ে চলা পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দিল ভারত। সামরিক বাহিনী মোট ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের চারটি জঙ্গিঘাঁটি আছ। বাকি পাঁচটি জঙ্গিঘাঁটি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের। বাহাওয়ালপুরে (Bahawalpur) কুখ্যাত জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের (Jaish-e-Mohammed) ঘাঁটি। সেই ঘাঁটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। মুরিদকে (Muridke) অঞ্চলে অপর এক কুখ্যাত জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার (Lashkar-e-Taiba) প্রধান ঘাঁটি। সেই ঘাঁটিও ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে ভারত।
পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে যে জঙ্গিঘাঁটিগুলি ধ্বংস করা হয়েছে সেগুলি হল-
১. শাওয়াই নাল্লা ক্যাম্প, মুজফফরাবাদ- ভারত-পাক সীমান্ত থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই জঙ্গিঘাঁটি লস্কর-ই-তইবার। ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর সোনমার্গে হামলা, ২৪ অক্টোবর গুলমার্গে হামলা এবং সম্প্রতি পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো জঙ্গিরা এই ঘাঁটি থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েছিল।
২. সৈয়দনা বিলাল ক্যাম্প, মুজফফরাবাদ- এটি হল জইশ-ই-মহম্মদের লঞ্চপ্যাড। এই জঙ্গিঘাঁটিতে আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা, জঙ্গলে দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকার প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।
৩, গুলপুর ক্যাম্প, কোটলি- নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ৩০ কিমি দূরে এই জঙ্গিঘাঁটিতে লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিরা প্রশিক্ষণ নিত। এই ঘাঁটি থেকেই জঙ্গিরা জম্মু ও কাশ্মীরের রজৌরি ও পুঞ্চ জেলায় ছড়িয়ে পড়ত। সেই জঙ্গিরা ২০২৩ সালের ২০ এপ্রিল, ২০২৪ সালের ৯ জুন পুঞ্চে তীর্থযাত্রীদের উপর হামলা চালিয়েছিল।
৪. বার্নালা ক্যাম্প, ভীমবের- নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ৯ কিলোমিটার দূরে এই জঙ্গিশিবিরে আগ্নেয়াস্ত্র, আইইডি, জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার কৌশল শেখানো হত।
আব্বাস ক্যাম্প, কোটলি- নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে এই জঙ্গিঘাঁটিতে লস্কর-ই-তইবার ফিদাঁয়ে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত।
পাকিস্তানে যে জঙ্গিঘাঁটিগুলি ধ্বংস করা হয়েছে সেগুলি হল-
১. সরজল ক্যাম্প, সিয়ালকোট- ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে এই জঙ্গি শিবির থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে চারজন পুলিশকর্মীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
৭. মেহমুনা জয়া ক্যাম্প, সিয়ালকোট- ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে হিজবুল মুজাহিদিনের (Hizbul Mujahideen) অন্যতম বড় ঘাঁটি ছিল। এখান থেকে জঙ্গিদের কাঠুয়ায় পাঠানো হত। এখানেই ২০১৬ সালে পাঠানকোটে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
৮. মার্কাজ তইবা, মুরিদকে- ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত এই জায়গায় লস্কর-ই-তইবার অন্যতম বড় ঘাঁটি ছিল। এখানেই কাসব ও হেডলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
৯. মারকাজ সুভানআল্লাহ, বাহাওয়ালপুর- এখানে জইশ-ই-মহম্মদের বড় ঘাঁটি ছিল। মৌলানা মাসুদ আজহার এখানেই জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিত। এখানেই জইশের প্রধান ঘাঁটি ছিল। এখানে নতুন জঙ্গি নিয়োগ করা হত এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হত। জঙ্গিনেতারাও এখানে বৈঠক করত।
এর আগেও ভারতের সশস্ত্রবাহিনী সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে। তবে সেই স্ট্রাইক করা হয়েছিল পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে। এবারই প্রথম পাকিস্তানে স্ট্রাইক করা হল।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।