রাস্তার পাশেই পড়েছিল ৫০টিরও বেশি বস্তা, খুলতেই বের হল নিহত আর আহত বানরের দেহ। শিউরে দেওয়া নৃশংসতা কর্নাটকের হাসান জেলায়।
ফের ভারতের বুকে এক ভয়াবহ পশু-নিষ্ঠুরতার ঘটনা ঘটল। বৃহস্পরতিবার, কর্ণাটকের হাসান জেলার চৌদানাহল্লি গ্রাম থেকে মিলল বস্তাবন্দি ৩৫ টিরও বেশি বানরের মৃতদেহ। আরও ২০টি বানর একইভাবে বস্তাবন্দি এবং গুরুতর আহত অবস্থায় থাকলেও, তারা প্রাণে বেঁচে গিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মতে ৫০টিরও বেশি বানরকে প্রথমে বিষ খাওয়ানো হয়েছিল। তারপর তাদেরকে বস্তাবন্দি করে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। তারপর ওই অবস্থাতেই রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
রাস্তার পাশে অতগুলি বস্তা পড়ে থাকতে দেখে চৌদানাহল্লির কয়েকজন গ্রামবাসীর কৌতূহল হয়। কিন্তু, বস্তার মুখ খুলতেই তাঁরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তারা দাবি করেছেন, বস্তাবন্দি অবস্থাতেই ওই বানরদের উপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হয়েছে। তাঁরা একে একে সব বানরগুলিকেই বস্তা থেকে বের করেন। যে, বানরগুলি বেঁচেছিল তারা শ্বাস নিতে পারছিল না, হাঁপাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বিন্দুমাত্র নড়াচড়া করার ক্ষমতাও ছিল না। বর্বরোচিত এই আচরণে আহত ২০ টি বানরকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রামবাসীরা জল দিয়েছিলেন। তাঁরাই পুলিশ ও বন দফতরকে খবর দেন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন বন দফতরের কর্মীরা। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ বাহিনীও। ভয়াবহ অত্যাচারের পরও টিকে থাকা আহত বানরগুলিকে দ্রুত পশু হাসপাতালে পাঠানো হয়। মৃত বানরকে কবর দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরে, ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান দফতরের পদস্থ কর্মকর্তারাও। তাঁরাও এই ঘটনার পৃথক তদন্ত করবেন। তাঁদের প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রত্যেকটি বানরকেই বিষ দেওয়া হয়েছিল। তবে কে বা কারা কেন, কী উদ্দেশ্যে এই বর্বর অত্যাচার চালালো তা এখনও অস্পষ্ট।
এর আগে, ২০২০ সালে কেরলে একটি গর্ভবতী হাতিকে ফলের মধ্যে পটকা পুড়ে খেতে দেওয়া হয়েছিল। বাজিটি ওই হস্তিনীটির মুখের মধ্যেই ফেটে গিয়েছিল। সাতদিন ধরে ওই পোড়ার যন্ত্রণা সহ্য করে, শেষে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের নাম ডুবিয়েছিল। তারপর আরও একবার একইরকম পশু নিষ্ঠুরতার ঘটনা ঘটল।