গত রবিবার থেকে জ্বলছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি
বাসিন্দারা বলছেন আগে কখনও এমনটা দেখেননি
তবে এই কঠিন সময়েই উজ্জ্বল হচ্ছে মানবতা
বিভেদকামীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে ঐক্য
গত রবিবার থেকে সিএএ নিয়ে সংঘর্ষে জ্বলছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি। গত তিনদিনে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত ২০০-রও বেশি। এদিন দিল্লি হাইকোর্ট বলেছে চলতি ঘটনাপ্রবাহ ১৯৮৪-র দাঙ্গার দিকে এগোচ্ছে। সিএএ-কে ঘিরে শুরু হওয়া সংঘর্ষ ক্রমে সাম্প্রদায়িক রঙ নিতে শুরু করেছে। এইরকম এক অস্থির সময়ে বিভেদকারী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে ভারতের চিরন্তন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ। ঐক্যকেই শক্তি হিসেবে ব্যবহার করছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- দিল্লির পরিস্থিতিতে উদ্বেগে আমেরিকাও, ট্রাম্প ফিরতেই জারি করা হল সতর্কতা
যেমন উত্তর দিল্লির বিখ্যাত গুরুদ্বার 'মজনু কা টিলা'। হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত পরিবারদের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের জন্য তারা গুরুদ্বারের দরজা খুলে দিয়েছে। সেখানে তাদের সেবাযত্ন করা হচ্ছে। রাতের সজাগ থাকছেন গুরুদ্বারের কর্মীরা। অনেকেই হিংসা বিধ্বস্ত এলাকা থেকে ছুটে আসছেন এখানে আশ্রয় নিতে। শুধু 'মজনু কা টিলা'ই নয়, উত্তর পূর্ব দিল্লির প্রায় সবকটি গুরুদ্বারেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শুধু গুরুদ্বার নয়, বহু জায়গা থেকেই সম্প্রীতির টুকরো ছবিগুলো উঠে আসচে। দিল্লির যমুনা বিহারের বাসিন্দারা যেমন বলছেন, তাঁরা এ জাতীয় হিংসা দিল্লিতে আগে কখনও দেখেননি। তাঁরা এখন একসঙ্গে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন। শুধু মুখে নয়, কাজেও করে দেখিয়েছেন। মঙ্গলবার বাজার এলাকায় বাইরে থেকে এসে জড়ো হয়েছিল বেশ কিছু দুর্বৃত্ত। বাসিন্দারাই তাদের সেখান থেকে হঠিয়ে দিয়ে ওই অঞ্চলে অশান্তি তৈরির চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন - 'ইনশআল্লা, ইহাঁ পার আমন হোগা', হিংসা-ধ্বস্ত দিল্লিকে ভরসা দিলেন ডোভাল
নেটদুনিয়ায় অনেকেই হানাহানির দিল্লিতেও সম্প্রীতির উষ্ণ ছোঁয়া পাওয়ার কাহিনি শেয়ার করেছেন। একজন জানিয়েছেন, উত্তর পূর্ব দিল্লির এক হিংসা ধ্বস্ত এলাকায় সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে টহল দিচ্ছেন, যাতে বাইরে থেকে লোক ঢুকে কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের উপর মানুষদের বাড়িতে হামলা না করে।
আরও পড়ুন - অগ্নিগর্ভ দিল্লিতেও অদম্য কপিল, দিনভর বিজেপি নেতার টুইটে উস্কানির বন্যা
ঔপন্যাসিক নীলাঞ্জনা রায় জানিয়েছিলেন, সিলামপুরের দলিত সম্প্রদায়ের মানুষরা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে অবরোধ গড়ে তুলেছেন। অন্য সম্প্রদায়ের প্রতিবেশীদের তাদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন। তিনি এরও এক গুরুদ্বারের কথা জানিয়েছেন, যারা সব সম্প্রদায়ের মানুষকে তাদের গুরুদ্বারে আশ্রয় দিচ্ছে।