গোটা দেশ এখন লাদাখ নিয়ে উত্তাল। গালওয়ান উপত্যকা রক্তাক্ত ভারতীয় জওয়ানদের রক্তে। এই অবস্থায় চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের পরবর্তী রূপরেখা নির্ধারণ করতে আজ সর্বদল বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভার্চুয়াল এই বৈঠক শুরু হবে বিকেল ৫টায়। থাকবেন সনিয়া গান্ধী, শরদ পওয়ার ,সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, চন্দ্রবাবু নাইডু, জগনমোহন রেড্ডি সহ সকল বিরোধী দলের নেতৃত্বরাই। প্রধানমন্ত্রীর ডাকা এদিনের সর্বদলীয় বৈঠকে থাকছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যার সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকার ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সঙ্কটের সময়ে তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস দেশের পাশেই আছে, একথাও জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো বলেছেন, "সঙ্কটের এই মুহুর্তে আমরা দেশ ও আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করছি। এই সময় যৌক্তিকভাবেও এটি একটি সঠিক সিদ্ধান্ত" ।
আরও পড়ুন: গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে আহত হয়েছিলেন ৭৬ জন জওয়ান, এবার বিশদে তথ্য প্রকাশ করল ভারতীয় সেনা
এদিকে লাদাখ সীমান্ত রক্তাক্ত হতেই বিরোধীরা নিশানা করতে শুরু করেছে কেন্দ্রকে। লাদাখে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষকে মোদি সরকারের বিদেশনীতির ‘পাহাড়প্রমাণ ব্যর্থতা’ বলে ইতিমধ্যে সুর চড়াতে শুরু করেছে কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, এত দিন প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে নীরব ছিলেন কেন? কেনই বা সীমান্তের পরিস্থিতি খোলসা করছে না কেন্দ্র? অনেকের ধারণা, এই চাপের মুখে বাধ্য হয়েই সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মোদী। এই পরিস্থিতিতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের প্রধানকেই আজকের বৈঠকে থাকার জন্য অনুরোধ করেছে কেন্দ্র। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধি, বিএসপি সুপ্রিমো মায়াবতী-সহ একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের বৈঠক নিয়ে ফোন করেন স্বয়ং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতি ও বৈঠকে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁদের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
জানা যাচ্ছে বৈঠকে লাদাখের গালনওয়ানের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলিকে অবগত করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিয়ে বিরোধীদের থেকে পরামর্শও চাইবেন মোদী। লাদাখ সীমান্ত সমস্যা মোকাবিলায় দেশের একতা, সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে সব দলকেই পাশে পেতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।যদিও বিরোধী দলগুলির আশঙ্কা, সীমান্ত-সংঘাতকে অস্ত্র করে ফের একবার জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলতে পারে বিজেপি। তার জেরে অনেকটাই চাপা পড়ে যেতে পারে করোনা সামলাতে কেন্দ্রের ব্যর্থতা। অগ্রাধিকারের তালিকায় পিছিয়ে যেতে পারে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রসঙ্গও।