পালানোর আগে ধর্মপ্রচারক ‘গ্রন্থি’-র ছেলের বিয়ের পাগড়ি ছিনিয়ে নিয়েছিলেন অমৃতপাল সিং, নিজের মোবাইল না নিয়ে ‘গ্রন্থি’-র মোবাইল থেকেই সমর্থকদের কল করে দিয়েছিলেন বিশেষ নির্দেশ।
বর্তমানে তিনি পলাতক। রাজ্যে প্রায় ৮০ হাজার পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকলেও তিনি ‘দেশ ছেড়ে’ পালিয়ে গিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে আদালতে, সে বিষয়ে পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগকে তীব্র ভর্ৎসনাও করেছেন বিচারপতি। কিন্তু, তাঁকে পাকড়াও করার জন্য যখন রুদ্ধশ্বাসে চেষ্টা চালাচ্ছেন পঞ্জাব পুলিশ, তখনই পলাতক খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংকে নিয়ে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতিমধ্যেই জানা গেছে, ১৮ মার্চ পালিয়ে যাওয়ার আগে তিনি কোথায় গিয়েছিলেন এবং কীভাবে ছক কষেছিলেন।
জলন্ধর জেলা থেকে পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আগে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে ওই জেলারই এক গুরুদ্বারে প্রবেশ করেছিলেন স্বঘোষিত ‘শিখ ধর্মগুরু’ অমৃতপাল সিং। সেই সময়ে ওই গুরুদ্বারে সেখানকারই ‘গ্রন্থি’ (অর্থাৎ, ধর্মপ্রচারক)-এর ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বিয়েতে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনরা অমৃতপালকে দেখে চিনতে পারেননি। তাঁরা তাঁদের অতিথি ভেবে নিয়েই অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন । ভেতরে ঢুকেই ভোল পালটে ফেলেন অমৃতপাল, তিনি বন্দুক বের করে উপস্থিত ‘গ্রন্থি’ সহ সমস্ত মানুষকে ভয় দেখিয়ে খাবার এবং জামাকাপড় দাবি করেন।
শুধু তাইই নয়, খাবার জামাকাপড়ের পাশাপাশি তিনি ‘গ্রন্থি’-র ফোনটিও কেড়ে নিয়ে নিজের দলীয় সমর্থকদের কল করতে থাকেন এবং তাঁদেরকে ২টো মোটরবাইক নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেন। এরপর নিজের পাগড়ি খুলে রেখে ‘গ্রন্থি’-র ছেলে, অর্থাৎ নববিবাহিত তরুণের মাথার গোলাপি পাগড়িটি পরে নিয়ে ধর্মীয় বেশভূষা ছেড়ে সাধারণ শার্ট পরে নেন অমৃতপাল। গুরুদ্বারের ‘গ্রন্থি’ পুলিশকে জানিয়েছেন যে, একটি ব্রেজ়া গাড়িতে চড়ে এসেছিলেন অমৃতপাল এবং তাঁর দলীয় কর্মীরা, গুরুদ্বার থেকে প্রায় ১০০ মিটার দূরে তাঁরা গাড়িটি পার্ক করেছিলেন। তাঁদের কাছে বন্দুক, তরোয়াল সহ বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র ছিল। বন্দুক দ্বারাই তিনি ভয় দেখাতে শুরু করেছিলেন। ফোন কল করার পর তিনি ‘গ্রন্থি’-র মোবাইলটিও ভেঙে ফেলেন, যাতে পুলিশ তাঁর খোঁজে কোনওভাবেই কারুর নাগাল না পেতে পারে। প্রায় ১ ঘণ্টা মতো গুরুদ্বারের ভেতর বিয়ের অনুষ্ঠানে ভয় দেখানো ও অশান্তি সৃষ্টি করার পর সেখান থেকে পালিয়ে যান ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ দলের নেতা।
আরও পড়ুন-