ওই হুমকি ফোনে বলা হয়েছে, যে বিচারপতিরা মামলাটির শুনানিতে রয়েছেন, তাঁরা যেন শিখ কৃষকদের শাস্তি দিতে প্রধানমন্ত্রীকে সাহায্য না করেন। ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী হিংসার কথাও উল্লেখ করেছে বলে অভিযোগ।
পঞ্জাবে (Punjab) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) কনভয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা (Security) নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এমনকী, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টেও (Supreme Court)। এদিকে এই মামলায় এবার হুমকি ফোন পাচ্ছেন শীর্ষ আদালতের আইনজীবীরা (Lawyer)। আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয় পঞ্জাবের উড়ালপুলে আটকে থাকার ঘটনায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মামলায় হুমকি ফোন পেয়েছেন। এই মামলার শুনানি যাতে না করা হয় তার জন্য তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
প্রাথমিকভাবে অভিযোগ উঠছে, খালিস্তানপন্থী সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস (Sikhs for Justice) এই হুমকি ফোন করেছে। বেশ কয়েকজন আইনজীবীর অভিযোগ, তাঁরা সোমবার সকাল ১০ টা ৪০ মিনিট নাগাদ একটি অটোমেটেড ফোন পান। অভিযোগ, ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি দাবি করছে, প্রধানমন্ত্রীর ভাটিন্ডা থেকে ফিরোজপুরের যাত্রাপথে বিঘ্ন ঘটাতে কৃষকদের অবরোধের জন্য দায়ি ছিল এসএফজে গোষ্ঠী। দেশের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হওয়ার ঠিক আগেই এই হুমকি ফোন করা হয়। এনিয়ে পুলিশেও অভিযোগ জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আরও পড়ুন- মোদীর নিরাপত্তা ভঙ্গ ইস্যু,চার সদস্যের প্যানেল গঠন সুপ্রিম কোর্টের
ওই হুমকি ফোনে বলা হয়েছে, যে বিচারপতিরা মামলাটির শুনানিতে রয়েছেন, তাঁরা যেন শিখ কৃষকদের শাস্তি দিতে প্রধানমন্ত্রীকে সাহায্য না করেন। ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী হিংসার কথাও উল্লেখ করেছে বলে অভিযোগ। আইনজীবীরা যে ফোন পাচ্ছেন তা ব্রিটেনের একটি নম্বর থেকে করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। মূলত +৪৪৭৪১৮৩৬৫৫৬৪ নম্বর থেকে ফোন পাচ্ছেন তাঁরা।
৫ জানুয়ারি পঞ্জাবে একাধিক প্রকল্পের (Various Project) উদ্বোধনের জন্য সকালে ভাতিন্ডায় (Bathinda) নেমেছিলেন মোদী। এরপরেই শুরু হয় যাত্রাপথের বিভ্রাট (Security breach)। ভাতিন্ডা থেকে হেলিকপ্টারে হোসেনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মৃতিসৌধে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, বৃষ্টি এবং দুর্বল দৃশ্যমানতার কারণে, প্রায় ২০ মিনিট ধরে অপেক্ষা করতে হয় মোদীকে। কিন্তু, তারপরও আবহাওয়ার কোনও উন্নতি হয়নি। তখন বলা হয়েছিল সড়কপথে তিনি গন্তব্যে পৌঁছাবেন। এরপরেই পঞ্জাব পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে। যাত্রা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রীর। কিন্তু, হুসাইনিওয়ালায় জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধ থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে, যখন প্রধানমন্ত্রীর কনভয় একটি ফ্লাইওভারে পৌঁছয় ঠিক সেই সময় দেখা যায় যে কয়েকজন বিক্ষোভকারী (Agitation) রাস্তা অবরোধ করেছে। এই অবরোধের (Roadblock) জেরে আটকে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর কনভয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট কনভয় আটকে থাকে ফ্লাইওভারে। এভাবে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলে ক্ষুদ্ধ হয়ে নিজের যাবতীয় কর্মসূচি বাতিল করে ফের ভাতিন্ডা বিমানবন্দরে ফিরে যান তিনি। এরপরই বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতে শুরু করে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক (Union Home Ministry) দাবি করে, ফিরোজপুরের ওই ঘটনা আসলে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় বড়সড় গলদ। পঞ্জাব সরকার তথা পঞ্জাব পুলিশ যৌথভাবে এই গাফিলতির জন্য দায়ী। এনিয়ে তদন্তের দাবিতে মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টেও।
এদিকে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মামলায় একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি নিয়োগের নির্দেশ দেয় আদালত। কমিটিতে ডিজিপি চণ্ডীগড়, জাতীয় তদন্ত সংস্থার (NIA) ইনস্পেক্টর জেনারেল, পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং অতিরিক্ত ডিজিপি পঞ্জাবও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।