পাকিস্তানি মহিলা সীমা হায়দার অনলাইন গেমিংয়ের সময় ইউপির নয়ডার বাসিন্দা শচীন মীনার প্রেমে পড়েছিলেন। এরপর পাকিস্তান থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে ভারতে আসেন সীমা। ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে সীমা হায়দারকেও গ্রেফতার করা হয়।
প্রেমের টানে পাকিস্তান ছেড়ে ভারতে আসা সীমা গোলাম হায়দারকে নিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে মুম্বই পুলিশকে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে যে কন্ট্রোল রুম একটি হুমকি কল পেয়েছিল। যেখানে কলকারী পাকিস্তানি নাগরিক সীমা হায়দার পাকিস্তানে না ফিরলে পুলিশকে ২৬/১১ জঙ্গি হামলার জন্য প্রস্তুত থাকার হুমকি দিয়েছিল।
মুম্বাই পুলিশ ও ক্রাইম ব্রাঞ্চ বিষয়টি তদন্ত করছে। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে যে কলকারী ২৬/১১-এর মতো সন্ত্রাসী হামলার জন্য প্রস্তুত হওয়ার হুমকি দিয়েছিল এবং উত্তর প্রদেশ সরকারকে দায়ী করেছিল। মুম্বই পুলিশ কন্ট্রোল রুম এই ধরনের অনেক কল পায় এবং পুলিশ এখন তদন্ত করছে যে কলগুলি আসল নাকি জাল।
গ্রেফতার করেছে নয়ডা পুলিশ
পাকিস্তানি মহিলা সীমা হায়দার অনলাইন গেমিংয়ের সময় ইউপির নয়ডার বাসিন্দা শচীন মীনার প্রেমে পড়েছিলেন। এরপর পাকিস্তান থেকে পালিয়ে নেপাল হয়ে ভারতে আসেন সীমা। ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে সীমা হায়দারকেও গ্রেফতার করা হয়। এই ঘটনায় শচীনকে গ্রেফতারও করেছিল নয়ডা পুলিশ। যদিও পরে আদালত থেকে দুজনকেই জামিন দেওয়া হয়।
প্রাণে মেরে দেওয়ার হুমকির কথা জানিয়েছেন সীমা হায়দার
সীমা তার চার সন্তানকে নিয়ে ভারতে এসেছেন। বর্তমানে তিনি শচীনের বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন। পাকিস্তানে ফেরত পাঠালে জীবনের বিপদের কথা জানিয়েছেন সীমা। সীমার প্রথম স্বামী ভারত সরকারের কাছে তার স্ত্রী ও সন্তানদের ফেরত পাঠানোর আবেদন জানিয়েছেন। যার জবাবে সীমা বলেন, তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হলে সেখানেই তাকে হত্যা করা হবে। তিনি নিজের ইচ্ছায় হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে শচীনকে বিয়ে করেছেন।
শচীন বলেছেন যে তারা দুজনেই ২০১৯ সালে অনলাইন গেম PubG খেলার সময় একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। প্রথমে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম হয় দুজনের মধ্যে। সীমার রাজমিস্ত্রি স্বামী সৌদিতে থাকতেন। তাই সন্তানদের নিয়ে তাঁকে একাই থাকতে হত। সেই একাকিত্ব জন্ম দেয় প্রেমের। অবশেষে অনেক পরিকল্পনা করে তিন বছরের প্রেমের পর চার সন্তানের হাত ধরে পাকিস্তান ছেড়ে তরুণ প্রেমিকের জন্য ভারতে অনুপ্রবেশ করেন সীমা। নেপাল হয়ে গোপনে ভারতে প্রবেশ করেন তিনি।
চলতি বছরের মার্চ মাসে নেপালে দেখা হয় দুজনের। যেখানে দুজনেই বিয়ে করেন। এরপর দুজনেই নিজ নিজ দেশে ফিরে যান। ১৩ মে নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করে শচীনের বাড়িতে পৌঁছেছিলেন সীমা। বেশ কয়েক দিনের লুকোচুরির পর গত ৪ জুলাই পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পেশায় মুদি দোকানের কর্মী প্রেমিক সচিনকেও গ্রেফতার করা হয়। সীমাকে থাকতে দিয়েছেন বলে গ্রেফতার হন সচিনের বাবা। সীমার সন্তানেরাও তাঁর সঙ্গে জেল হেফাজতে ছিল। তবে গত শুক্রবার দু’জনেই জামিন পেয়েছেন।
জেল থেকে বেরিয়েই সীমা জানিয়েছিলেন, তিনি আর পাকিস্তানে ফিরতে চান না। প্রেমিককে বিয়ে করে থেকে যেতে চান ভারতেই। নিজেকে ইতিমধ্যে ভারতীয় বলেও দাবি করে বসেছেন সীমা। তাঁর দাবি, অন্তর থেকে তিনি ভারতীয় সংস্কৃতি এবং হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করে ফেলেছেন। সচিনের পরিবারের কথা ভেবে নিরামিষ খেতেও শুরু করেছেন তিনি।