হিন্দুধর্মের অন্যতম পবিত্র গ্রন্থ গীতা। অন্য ধর্মের অনেক ব্যক্তিও গীতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু ভাগবত গীতা নিয়েই এবার বিতর্কিত মন্তব্য করলেন স্লোভেনিয়ার দার্শনিক স্লাভোজ জিজেক।
ভাগবত গীতাকে অন্যতম অশ্লীল ও বিরক্তিকর ধর্মগ্রন্থ হিসেবে আখ্যা দিলেন স্লোভেনিয়ার দার্শনিক স্লাভোজ জিজেক। তাঁর দাবি, ইহুদি গণহত্যার পক্ষে সাফাই দেওয়ার জন্য গীতাকে ব্যবহার করেন নাৎসি জার্মানির রাজনীতিবিদ হেইনরিখ হিমলার। জিজেকের এই মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গীতার নানা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর আগে কেউ এভাবে গীতাকে অশ্লীল বলে আখ্যা দেননি। গীতাকে কেন অশ্লীল আখ্যা দিচ্ছেন, সে বিষয়ে অবশ্য ব্যাখ্যা দেননি জিজেক। তবে তিনি বলেছেন, গীতার আদর্শ ও বাণী ঘৃণা করেন। এ প্রসঙ্গে 'ওপেনহাইমার' ছবির কথাও উল্লেখ করেছেন জিজেক। এই ছবির একটি দৃশ্যে ভাগবত গীতা পাঠ করার সময় যৌন সঙ্গমে রপ্ত ছিলেন অভিনেতা-অভিনেত্রী। এ বিষয়েও মতামত প্রকাশ করেছেন জিজেক।
'ওপেনহাইমার' নিয়ে কটাক্ষ
'ওপেনহাইমার' ছবির বিতর্কিত দৃশ্য নিয়ে কটাক্ষের সুরে জিজেক বলেছেন, ‘ওপেনহাইমার একটি ভালো ছবি। রাজনৈতিক অংশটি খুব ভালোভাবে দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে যেভাবে কমিটি দেখানো হয়েছে এবং ওপেনহাইমারকে যেভাবে দেখানো হয়েছে, সেটি খুব সুন্দর। কিন্তু ভাগবত গীতার আধ্যাত্মিক অংশটিকে আমি ঘৃণা করি। ভারতে কলঙ্ক তৈরি হয়েছে বলেই সবাই ওপেনহাইমারের কথা মনে রেখেছে। ফ্লোরেন্স পাফ ও ওপেনহাইমার প্রথমবার যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়। ফ্লোরেন্স ভাগবত গীতা পাঠ করতে বলেছিল না ওপেনহাইমার নিজে সেটি পাঠ করেছিল সেটা আমি জানি না। ভারতীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ওরা বলতে শুরু করে, নোংরা কাজ। আপনারা কীভাবে যৌন দৃশ্য দেখাতে পারেন? আমি ভারতীয়দের সঙ্গে একমত, তবে অন্যভাবে। সবচেয়ে অশ্লীল, বিরক্তিকর ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে একটি সুন্দর যৌন দৃশ্য নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’
গীতায় গণহত্যার সাফাই!
জিজেকের দাবি, হিমলারের পকেটে সবসময় গীতা থাকত। তিনি ইহুদিদের হত্যার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য গীতার শ্লোকের আশ্রয় নিতেন। তিনি বলতেন, জন্তু না হয়ে উঠলে ইহুদি শিশু ও অন্যান্য ব্যক্তিদের হত্যা করা সম্ভব নয়। গীতায় এর ব্যাখ্যা আছে বলেও সাফাই দিতেন হিমলার। যদিও গীতায় গণহত্যার কথা বলা হয়নি। হিংসার কোনও ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, ফলের আশা না করে কর্ম করে যেতে হবে। এই শ্লোক কীভাবে অশ্লীল হতে পারে, সেটা অনেকেরই বোধগম্য হচ্ছে না। জিজেক অবশ্য নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এতে গীতার প্রতি তাঁর ঘৃণাই প্রকাশ পেয়েছে।
আরও পড়ুন-