'সংসদীয় গণতন্ত্রের মর্যাদাকে ধূলোয় মেশানো হল', তৃণমূল থেকে কংগ্রেস-সিপিএমকে আক্রমণ রাজনাথের

  • তীব্র ভাষায় বিরোধীদের সমালোচনা করলেন রাজনাথ
  • রাজ্যসভায় কৃষি বিল ২০২০ পাশ করানো নিয়ে উত্তেজনা
  • রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের চেয়ারের উপরে আক্রমণ
  • এটা সংসদীয় গণতন্ত্রের উপরে আঘাত, বললেন রাজনাথ

Asianet News Bangla | Published : Sep 20, 2020 3:10 PM IST / Updated: Sep 20 2020, 09:22 PM IST

 কৃষি বিল ২০২০ পাশ-এর সময় রাজ্যসভায় হওয়া হট্টগোল ও ভাঙচুর-এর ঘটনায় তীব্র ক্ষুব্ধ সরকার। রবিবার সন্ধ্যায় এক সরকারিভাবে ডাকা এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়ে দিলেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেই সঙ্গে রবিবার দুপুরে রাজ্যসভায় যা ঘটেছে তাকে এককথায় দুঃখজনক, দূর্ভাগ্যজনক এবং লজ্জানক বলেও মন্তব্য করেছেন রাজনাথ। এটা সংসদীয় গণতন্ত্রের সম্মানকে ধূলোয় মেটানোর সামিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। রাজনাথ সাফ জানিয়ে দেন কৃষি বিল ২০২০-এর জন্য কৃষকদের আয় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অথচ, ভুল তথ্য পেশ করে কৃষকদের বিভ্রান্ত করছেন বিরোধীরা। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দেশের কৃষকদের সর্বনাশ করতেও পিছপা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন রাজনাথ। 

আরও পড়ুন- রাজ্যসভায় ডেরেকের আচরণের নিন্দায় বিজেপি, একই সঙ্গে নিশানায় বাম-কংগ্রেসও

রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের পদ যিনি অলঙ্কিত করেন তিনি দেশের উপরাষ্ট্রপতি। বিরোধীরা তাঁদের উন্মত্তার সময় সেই সেই চেয়ারের মর্যাদাকেও আমল দেয়নি বলে অভিযোগ করেন রাজনাথ। এই ঘটনা এককথায় সংসদের ঐতিহ্য এবং গরিমাকেও কলুষিত করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সংসদীয় ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি বলেও জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী। 

রাজ্যসভায় কৃষি বিল  ২০২০ নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন কৃষিমন্ত্রী। রাজ্যসভার সিলমোহরের জন্য রবিবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি বিল পেশ করা হয়। এরপর থেকেই বিরোধীরা এই দুই বিল নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে শুরু করে কংগ্রেস, সিপিএম, শিরোমণি আকালি দল, টিডিপি, শিবসেনা- সকলেই প্রতিবাদ করেন এই বিল পেশের। তারা দাবি তোলেন এই বিল পেশের আলোচনা সোমবার পর্যন্ত মুলতুবি রাখার। এমনকী, আরও গভীরভাবে আলোচনার জন্যা তা সিলেক্ট কমিটি-তে পাঠানোর আর্জি জানায় কৃষি বিল ২০২০-র বিরোধিতা করা রাজনৈতিক দলগুলি। রাজ্যসভায় সেই সময় অধিবেশন পরিচালনা করছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা রাজ্যসভার সহকারী চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং। তিনি বিরোধীদের দাবি না মেনেই বিল পেশের জন্য কৃষিমন্ত্রীকে মোশন দেন। এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের ডেরেক ওব্রায়েন, দোলা সেন, অর্পিতা ঘোষ থেকে শুরু করে অন্যান্য বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাংসদরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এমনকী মোদী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে তাঁরা। এখানেই শেষ নয় আক্রমণাত্মকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন রাজ্যসভার রুলবুক ছিঁড়ে ফেলে চেয়ারম্যানের দিকে ছুঁড়ে দেন বলে অভিযোগ। এমনকী বিরোধী সাংসদরা রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের টেবিলেকাছে উঠে পড়ে অন্যান্য কাগজপত্র ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের মাইক ভেঙে দেয় বলেও অভিযোগ।  

আরও পড়ুন- রাজ্যসভায় কৃষি বিল পাশকে 'সন্ধিক্ষণ' বললেন প্রধানমন্ত্রী, মোদীর কথায় লাভাবন হবেন কৃষকরা

রাজ্যসভায় বিরোধীদের এই হইহট্টগোল এবং চেয়ারম্যানকে আক্রমণ করা নিয়ে সন্ধ্যায় উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, মানব সম্পদ ও উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর, কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল, সামাজিক বিচার ও কল্যাণমন্ত্রী তাবরচাঁদ গেহলট, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুমন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি-রা। এদের সঙ্গে এক বিস্তারিত আলোচনা করেন উপরাষ্ট্রপতি। রাজ্যসভায় চেয়ারম্যানের চেয়ারের উপর বিরোধীদের হামলা যে সংসদীয় গণতন্ত্রের উপরে আঘাত তা জানিয়ে দেন তিনি। সরকারিভাবে এই বার্তা দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ারও কথা বলেন তিনি। এরপরই সরকারিভাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মিলিত হন রাজনাথ-সহ উপরাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করা মন্ত্রীরা।  

আরও পড়ুন- প্রবল বিক্ষোভের মধ্যেই রাজ্যসভায় পাস কৃষি বিল, সুর চড়িয়ে ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ তৃণমূলের ডেরেকের

রাজনাথ জানিয়েছেন, তিনি যে রিপোর্ট পেয়েছেন তাতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবেই কৃষি বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরপর বিরোধীরা যে যুক্তিতে রাজ্যসভায় উত্তেজনা তৈরি করেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করা হচ্ছে। রবিবারের ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্ত সাংসদদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন রাজনাথ। 

Share this article
click me!