বাবা জেলবন্দি, পালিয়েছে মা - ফুটপাতে নেমে আসা কিশোরকে ছেড়ে যায়নি শুধু পোষ্য কুকুর

বাবা জেলবন্দি হওয়ার পরই তাকে ছেড়ে গিয়েছিল মা

সে ফুটপাতে নেমে এলেও তাকে ছেড়ে যায়নি তার পোষা কুকুর

দুজনে একে অপরের দেখা শোনা করত

একটা ভাইরাল ছবিই বদলে দিল তাদের ভবিষ্যত

amartya lahiri | Published : Dec 16, 2020 10:27 AM IST / Updated: Dec 16 2020, 07:04 PM IST

যখন সে মাথার উপর থেকে ছাদ হারিয়েছিল, তখন তার সবটা বোঝার মতোও বয়স হয়নি। তাই কোথায় তার বাড়ি, তা মনে নেই। শুধু সে জানে, তার নাম অঙ্কিত। তার বাবা কোনও এক অপরাধ করে কারাগারে বন্দি। আর তারপর তার মা তাকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে ফুটপাতেই তার জায়গা হয়েছে। শুধু ছেড়ে যায়নি তার একমাত্র বন্ধু, পোষা কুকুর ড্যানি। তাকে জড়িয়ে ধরেই উত্তরপ্রদেশের মুজাফ্ফরনগরের এক ফুটপাতে, পাতলা একটা কম্বল জড়িয়ে ঘুমায় ৯-১০ বছর বয়সী ছেলেটা।

একসময় স্কুলে পড়াশোনা করা অঙ্কিত এখন জীবনধারণের জন্য কখনও বেলুন বিক্রি করে, কখনও এক স্থানীয় চায়ের দোকানে কাজ করে। অঙ্কিত এবং ড্যানি - দুজনেরই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সেই চায়ের দোকানের মালিক। তিনি জানিয়েছেন ড্যানি কখনই অঙ্কিতের পাশ ছাড়ে না। অঙ্কিত যতক্ষণ তাঁর দোকানে কাজ করে, দোকানের এক কোণে বসে থাকে ড্যানি। আর অঙ্কিতের আত্মমর্যাদাও দারুণ, চুরি করে বা চেয়েচিন্তে কিছু নেওয়ার অভ্যাস নেই তার। এমনকী ড্যানির জন্য দুধটাও সে চায়ের দোকান থেকে অর্থের বিনিময়েই নিয়ে থাকে।    

চলতি মাসের শুরুতে অঙ্কিত ও ড্যানির ফুটপাতে শুয়ে ঘুমানোর এরকমই একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। সেই ছবি হাজার হাজার নেটিজেনদের মনকে নাড়া দিয়ে গিয়েছিল। আর তারপরই তার এই বেদনাদায়ক কাহিনি প্রকাশ্যে আসে। আর তাপরই স্থানীয় প্রশাসনকে ওই কিশোরের খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেন মুজাফফরনগর-এর এসএসপি অভিষেক যাদব।

আরও পড়ুন - ভারতে আর চলবে না চিনা নজরদারি, টেলিকমে সুরক্ষা বাড়াতে বিরাট সিদ্ধান্ত মোদী সরকারের

আরও পড়ুন - জুয়ায় হেরে গিয়ে বউকে গণধর্ষণের অনুমতি, গুণধর স্বামী পরে অ্যাসিড ঢালল 'শুদ্ধ করতে'

আরও পড়ুন - 'ডান্স মহামারি'-র কথা শুনেছেন কখনও, আক্রান্তরা এত বেশি নাচে যে শেষে তাদের মৃত্যু হয়

চলতি সপ্তাহের সোমবার, পুলিশ অঙ্কিতের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে। তাকে আপাতত জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা তার প্রিয়জনদের সন্ধানের চেষ্টা করছেন। এর জন্য সংলগ্ন সব জেলার বিভিন্ন থানায় অঙ্কিতের ছবি পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে জেলার মহিলা ও শিশু কল্যাণ বিভাগকেও জানানো হয়েছে। শীলা দেবী নামে অঙ্কিতের পরিচিত স্থানীয় এক মহিলা বাড়িতে তার থাকার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। তার পরিবারের খোঁজ না মেলা পর্যন্ত একটি বেসরকারী স্কুলে নিখরচায় তার পড়াশোনা করারও ব্যবস্থা করে দিয়েছে প্রশাসন।

 

Share this article
click me!