প্রজাতন্ত্র দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস, দুই দিনেই দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় ঠিকই, কিন্তু, এই দুই দিনের পতাকা উত্তোলনের মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে।
ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে মহান তাৎপর্য বহন করে প্রজাতন্ত্র দিবস এবং স্বাধীনতা দিবস। মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীন দেশের নির্মাতাদের মহান আত্মত্যাগকে স্মরণ করেন সমগ্র ভারতবাসী। কুচকাওয়াজ এবং দেশপ্রেমে ভরপুর থাকে এই দুটো দিনই।
১৫ আগস্ট এবং ২৬ জানুয়ারি , উভয় তারিখেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার মধ্যে মিল থাকলেও, দুটির উদযাপনে একটু ভিন্নতা আছে। স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসে পতাকা উত্তোলনের মধ্যে রয়েছে বিশেষ পার্থক্য ।
যদিও উভয় দিনেই ভারতের জাতীয় পতাকাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানো হয়, যা দেখতে একই রকম হতে পারে, তবে, কীভাবে সেই পতাকাটি উত্তোলন করা উচিত, সেই সম্পর্কে দুটি দিনের অনুষ্ঠানের মধ্যে একটি পার্থক্য রয়েছে।
পতাকার অবস্থানও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলে তা বেঁধে রাখা হয় খুঁটির একেবারে তলায়। দেশের প্রধানমন্ত্রীই সেই দিনটির ঐতিহাসিক ঘটনাকে সম্মান জানানোর জন্য জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন । অন্যদিকে, প্রজাতন্ত্র দিবসে পতাকাটি উত্তোলন করার সময়, পতাকাটি বন্ধ করে খুঁটির একদম ওপরের দিকে বেঁধে রাখা হয়। ওইদিন পতাকাটি না তুলে, শুধুমাত্র খুলে দেওয়া হয়। এই কাজ সম্পন্ন হয় দেশের রাষ্ট্রপতির দ্বারা। প্রজাতন্ত্র দিবস হল সেই দিন, যেদিন ভারতে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল।
স্বাধীনতা দিবসে, ঔপনিবেশিক আধিপত্য থেকে মুক্ত হয়ে ভারতে একটি নতুন জাতির উত্থানের ইঙ্গিত দেয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন। সেজন্য, ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে পতাকা উত্তোলনের জন্য একেবারে খুঁটির নিচ থেকে দড়ি টানা হয়।
আরেকদিকে, ১৯৬০ সালে যখন ভারতে প্রজাতন্ত্র হয়েছিল, তখন দেশ ইতিমধ্যেই স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল । সেই কারণে পতাকাটি একদম নিচ থেকে উপরে নিয়ে যাওয়া হয় না, শুধুমাত্র খুলে দেওয়া হয়।
১৯৪৭ সালে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবসের দিন স্বাধীন ভারতের কোনও রাষ্ট্রপতি ছিল না। লর্ড মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ভারতের গভর্নর জেনারেল, রাষ্ট্রপতির সমতুল্য পদ তাঁর ছিল। কিন্তু, তিনি ব্রিটিশ সরকারের একজন উপনিবেশিকের প্রতিনিধি হয়ে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করতে পারতেন না। ফলে, এই কাজ প্রথম থেকেই করে আসছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী।