কী করণে কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেন জ্যোতিরাদিত্য, চলছে উত্তর খোঁজার পালা

শুধুই কী মুখ্যমন্ত্রীত্বের লোভ না অন্য কোনও কারণ 
রাজ্যসভার সাংসদ হতে চার জ্যোতিরাদিত্য 
কী কারণে কংগ্রেস ছাড়লেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
সনিয়া গান্ধিকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন রাজ্যের জন্য কাজ করা সম্ভব হচ্ছিল না

Asianet News Bangla | Published : Mar 10, 2020 9:55 AM IST

কংগ্রেসের সদস্য থেকে আর রাজ্যের সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজ করতে পারছে না। নতুন ভাবে শুরু করতে চান। তাই দলের সাধারণ সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি। সনিয়া গান্ধিকে লেখা পদত্যাগ পত্রে তেমনই লিখেছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। বেশ কয়েক দিন ধরেই চলছিল জল্পনা চলছিল জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। সেই জল্পনাকে প্রায় সত্যি করেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের পরই ইস্তফা দিয়েছেন। কিন্তু কেন? 

আরও পড়ুনঃ জ্যোতিরাদিত্যর দলত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেসের প্রতি সিন্ধিয়া পরিবারের আনুগত্য শেষ

রাহুল প্রিয়াঙ্কার অত্যান্ত ঘনিষ্ঠ নেতা হিসেবেই পরিচিত ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। রাহুলের নেতৃত্বে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইতে সর্বদা সামনের সারিতে দেখা গেছে তাঁকে। কিন্তু তাল কাটে মধ্যপ্রদেশ নির্বাচনের পরই।  রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ে লাভের পর থেকেই শুরু হয়ে যায় চাপান উতোর। মধ্যপ্রদেশে ভোট লড়াই প্রধান সেনাপতির ভূমিকা গ্রাহণ করেছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। কিন্তু মেলেনি প্রাপ্ত সম্মান। কারণ জয়ের পরেই দলের ভাঙন রুখতে ৭৩ বছরের কমল নাথের হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের দায়িত্ব। যাতে কিছুটা হলেও আপত্তি ছিল রাহুল গান্ধির।  তারপর থেকেই রাজ্যরানীতিতে রীতিমত কোনঠাসা ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। গত লোকসভা নির্বাচনে গুনা আসন থেকে প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন। হারের পর্যালোচনা করতে গিয়ে সামনে এসেছে দলেরই অন্তর্ঘাত। অথচ দীর্ঘ দিন ধরেই এই আসন দখলে রেখেছিল সিন্ধিয়া পরিবার। একটা সময় বিজায়রাজে এই আসন থেকেই জিতে ছিলেন। পরে তাঁর ছেলে মাধবরাও এই কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী হন। ২০০২ সাল  থেকেই গুনার সাংসদ ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। আরও পড়ুনঃ রাহুলের তরুণ ব্রিগেডের বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন, সেখান থেকে কেন পদ্মে গমন গোয়ালিয়রের মহারাজার

রাহুল গান্ধি দলের সভাপতির পদ ছেড়ে দেওয়ার পর থেকে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতেও গুরুত্ব হারিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। উত্তর প্রদেশে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে তাঁকেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রচারের আলো পুরোটাই টেনে নিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। সেখানে ম্রিয়মাণ জ্যোতিরাদিত্য। তবে তাঁর এই সিন্ধান্ত রীতিমত সংকটে ফেলে দিয়েছে কংগ্রসকে। কারণ তিনি একা দল ছাড়েননি।  তাঁর অনুগামী ১৭বিধায়কই ইস্তফা পত্র নিয়ে প্রস্তুত রয়েছেন। এই পরিস্তিততে কী করে সরকার বাঁচাবেন কমল নাথ, তাই নিয়ে চলছে দফায় দফায় বৈঠক। 

সামনেই রাজ্যসভা নির্বাচন। আর মধ্যপ্রদেশ থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী হতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য। ইতিমধ্যেই দিল্লির বাতাসে উড়েছে সেই জল্পনাও। অভিযোগ জ্যোতিরাদিত্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া যেমন আটকে দিয়েছিলেন প্রবীন কংগ্রেস নেতা কমল নাথ, তেমনই কংগ্রেসের টিকিটে তাঁর রাজ্যসভায় যাওয়া আটকাতে পথে নেমেছিলেন আরও এক প্রবীন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং। কেউ কেউ বলছে তিনি নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রাভঙ্গ করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন।  তবে জ্যোতিরাদিত্যের বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনায় বিস্মিত নন প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী নটবর সিং। তিনি বলেছেন রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হতে পারেন জ্যোতিরাদিত্য। 

জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দল ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই দল বদলের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তাঁর অনুগামী ১৯ বিধায়ক। সেই দলে রয়েছে কয়েকজন মন্ত্রীও।  তবে মোদি-অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠকের পর সিন্ধিয়ার দল ছাড়ার সিন্ধান্তে খুশির হাওয়া বিজেপিতে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেছেন কংগ্রেসের থাকাকালীন সিন্ধিয়া ছিলেন মহারাজ। এখন তিনি মাফিয়া হয়ে গেছেন। অন্যদিকে সিন্ধিয়াকে নিয়ে মোদি অমিত শাহর বৈঠকের মাঝেই ট্যুইট করেন কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝাঁ, তিনি বলেন নেতৃত্ব কারও কাছেই এক কাপ চা বা কফির মত হতে পারে না। আর তাঁর এই মন্তব্যের পরই কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে নেট দুনিয়ায়। 
 

Share this article
click me!