কেন মুসলমানদের সিএএ থেকে দূরে রাখা হল? মোদী সরকারের প্ল্যানিং কী! জেনে নিন অজানা তথ্য

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দুই কক্ষেই পাস হয়েছিল কিন্তু তখন তা কার্যকর করা হয়নি, তবে চার বছর পরে এই আইনটি পুরো দেশে কার্যকর করা হল। এই আইন আসার ফলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আগত অমুসলিমরা সহজেই ভারতের নাগরিকত্ব পাবে

Parna Sengupta | Published : Mar 13, 2024 5:28 AM IST / Updated: Mar 13 2024, 10:59 AM IST

লোকসভা নির্বাচনের তারিখ কয়েকদিনের মধ্যে ঘোষণা হতে চলেছে এবং নির্বাচনের ঠিক আগে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সারা দেশে কার্যকর করা হয়েছে। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে দুই কক্ষেই পাস হয়েছিল কিন্তু তখন তা কার্যকর করা হয়নি, তবে চার বছর পরে এই আইনটি পুরো দেশে কার্যকর করা হল। এই আইন আসার ফলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আগত অমুসলিমরা সহজেই ভারতের নাগরিকত্ব পাবে, অর্থাৎ এই তিন দেশের হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান ও পার্সি ধর্মের মানুষ শরণার্থী হিসেবে ভারতে বসবাস করছেন, থাকছেন, তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবেন। এটি উল্লেখযোগ্য যে যারা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ বা তার আগে ভারতে এসে বসতি স্থাপন করেছেন। কোনো বৈধ নথি বা ভিসা ছাড়াই এই ধরনের উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া যেতে পারে।

মুসলিমরা কেন এই আইন থেকে বঞ্চিত?

এখন প্রশ্ন হল শুধু অমুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রয়োজন কেন, মুসলিমদেরকে তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হল না কেন? এই আইন থেকে মুসলিমরা কেন বঞ্চিত হলো তা জানা জরুরি?

সরকারের যুক্তি ছিল, এইসব দেশে সংখ্যালঘুরা কমছে এবং ধর্মের ভিত্তিতে তারা নিগৃহীত হচ্ছে, তাই তাদের জন্য এই আইন। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে এই তিন দেশে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা সত্যিই কমেছে কি না?

১৯৫১ সালে যখন পাকিস্তানে আদমশুমারি পরিচালিত হয়েছিল, তখন সেখানে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল ৮৫.৮ শতাংশ এবং অমুসলিম জনসংখ্যা ছিল ১৪.২ শতাংশ। সে সময় পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) অমুসলিমদের জনসংখ্যা ছিল ২৩.৪ শতাংশ এবং পশ্চিম পাকিস্তানে (আজকের পাকিস্তান) ৩.৪৪ শতাংশ। এরপর ১৯৭২ সালে পাকিস্তানে আদমশুমারি হয় এবং সে সময় বাংলাদেশ একটি নতুন দেশে পরিণত হয়। ১৯৭২ সালের আদমশুমারি অনুসারে, পাকিস্তানে অমুসলিমদের জনসংখ্যা ৩.২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। আজ থেকে মাত্র সাত দিন আগে, পাকিস্তানে ২০১৭ সালের আদমশুমারি পরিচালিত হয়েছিল, সেই সময়ে পাকিস্তানে অমুসলিমদের জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ৩.৫৩।

পাকিস্তানে অমুসলিমদের সংখ্যা বাড়েনি বা খুব বেশি কমেনি, বরং উল্টো বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।২০১১ সালে বাংলাদেশে যখন আদমশুমারি করা হয় তখন অমুসলিমদের জনসংখ্যা কমে ৯.৪ শতাংশে নেমে যায়। তার মানে অমুসলিমদের জনসংখ্যা, যা ১৯৫১ সালে ২৩.৪ ছিল, এখন ৯.৪ হয়েছে।

আফগানিস্তানের রিপোর্ট কি?

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরের মতে, ১৯৭০-এর দশকে আফগানিস্তানে ৭ লাখের বেশি হিন্দু ও শিখ বসবাস করত, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এই জনসংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজারেরও কম। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮ সালে আফগানিস্তানে মাত্র ৭০০ হিন্দু ও শিখ পরিবার অবশিষ্ট ছিল। সেখানে গৃহযুদ্ধের কারণে বহু মানুষকে সেখান থেকে পালাতে হয়েছে।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।

Share this article
click me!