স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সিএএ নিয়ে জনগণের একটি অংশের উদ্বেগ রয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের বিরুদ্ধে এটি প্রয়োগ করা হবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) নিয়ে গোটা দেশেই উত্তাল। বাড়ছে আন্দোলন। এই অবস্থাতেই ভারতীয় মুসলিমদের আস্বস্ত করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র সরকার। সেখানে বলা হয়েছে সিএএ নিয়ে ভারতীয় মুসলিমদের চিন্তা করার বা ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছ, সিএএ তাদের নাগরিকত্বকে কোনওভাবেই প্রভাবিত করবে না। তাদের কাছ থেকে নথি চাওয়ার কোনও কথা বলা হয়নি জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে। পাশাপাশি বলা হয়েছে ভারতের ১৮ কোটি মুসলিমের সঙ্গে এই সিএএ আইনের কোনও সম্পর্ক নেই। এই মুসলিমরা ভারতের হিন্দুদের মতই সমান অধিকার ভোগ করতে পারবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে সিএএ নিয়ে জনগণের একটি অংশের উদ্বেগ রয়েছে। কিন্তু মুসলমানদের বিরুদ্ধে এটি প্রয়োগ করা হবে বলে যে কথা বলা হচ্ছে যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইসলাম একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম হওয়ায়, ধর্মীয় ভিত্তিতে ঘৃণা বা হিংসা ছড়াতে পরামর্শ দেয় না। এই আইন নিপীড়নের বিরুদ্ধে সহনুভূতি ও ক্ষতিপুরণের কথাই বলেন। ইসলামকে নিপীড়নের নামে কলঙ্কিত হওয়া থেকে রক্ষা করার কথা বলে। কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই আইনের মাধ্যমে পাকিস্তান , অফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে আসা নির্যাতিত হিন্দুদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোনও ভারতীয় মুসলিমের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও কথা বলা হয়নি।
অন্যদিকে এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, এই আইনের মাধ্যমে কোনও ব্যক্তির নাগরিত্ব কেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়নি। পাশারাশি হায়দরাবাদের জনসভা থেকে অমিত শাহ দাবি করেন, সিএএ নিয়ে ওয়েসি, খাড়গে, রাহুল গান্ধীরা মিথ্যা কথা বলছেন। তিনি আরও বলেন, এই আইনের মাধ্যমে কোনও সংখ্যালঘু নাগরিকত্ব হারাবে না। তিনি আরও বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি সিএএতে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কোনও বিধান নেই।'
আইন পাশ হওয়ার চার বছর পরে সোমবার বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আই বস্তবায়নের জন্য একটি বিজ্ঞপ্ত জারি করেছে মোদী সরকার। সিএএ - এই প্রথম ভারতে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে এই আইনের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সংসদে সিএএ আইন পাশ করা হয়েছে। তারপর এই আইন নিয়ে একাধিক বিতর্ক রয়েছে। গোটা দেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল। ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্য হয়েছিল। এই আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যারা ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে আগে ভরতে এসেছিল তাদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একজন মুখপাত্র বলেছেন, যোগ্যব্যক্তিরা একটি সম্পূর্ণ অনলাইন মোডে নাগরিকত্বের আবেদন জমা দিতে পারেন। এরজন্য একটি ওয়েব পোর্টাল সরবরাহ করা হয়েছে। তবে আবেদনকারীদের কাছ থেকে কোনও নথি চাওয়া হবে না। হিন্দু, শিখ, জৈন,বৌদ্ধ, পার্সি, এবং খ্রিস্টানদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।