শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তালিবানদের আটকাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আহমে মাসুদ বিশ্বের কাছে সাহায্য চাইলেন। আগেরবারেও তালিবানরা সহজে পা রাখতে পারেনি পঞ্জশিরে।
তালিবানরা কাবুল দখল করছে এক সপ্তাহ হয়ে গেল। কিন্তু এখনও পুরোপুরি আফগানিস্তান কব্জা করতে পারেনি। পাঞ্জশির উপত্যকা- এখনও তালিবানদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আফগিনিস্তান জাতীয় ফ্রন্টের নেতা আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে তাবিলানদের টক্কর দিচ্ছে পাঞ্জশির। আহমাদ মাসুদ জানিয়েছেন 'আত্মসমর্পণ' এই শব্দটি তাঁর শব্দভাণ্ডারে নেই। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে তিনি তালিবানদের আক্রমণ প্রতিহত করবেন। তালিবানদের মোকাবিলা করার জন্য আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র দাবি চেয়েছিলেন তিনি। এবার বিশ্ববাসীর কাছে তালিবান বিরোধী যুদ্ধের জন্য সমর্থন দাবি করেছেন।
মাসুদ আহমদ বলেন তিনি শাহ মাসুদের পুত্র। শাহ মাসুদ একটা সময় পাঞ্জশিরের সিংহ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ৯ সেপ্টেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেন্ড সেন্টারে হামলার ঠিক দুদিন আগে মরক্কোর বাসিন্দা আল কায়দা জঙ্গি তাঁকে হত্যা করে। সেই সময়ও শাহ মাসুদ দীর্ঘ দিন ধরেই তালিবানদের প্রতিহত করে ছিলেন। বরাবরই তালিবন বিরোধী হিসেবে পরিচিত শাহ মাসুদ ও তাঁর অনুগামীরা। পাঞ্জশির উপত্যকা এমনই যে ১৯৯০ দশকের গৃহযুদ্ধের সময়ও তালিবানরা সহজে কব্জা করতে পারেনি। সোভিয়েত রাশিয়াও এই এলাকায় তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
মাসুদ জানিয়েছেন , আমার বাবা, কমান্ডার মাসুদ আমাদের জাতীয় নায়ক। উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি তাঁর বাবার স্থান দখল করেছেন। তবে আফগানদের স্বাধীনতার জন্য তাঁরা নিরন্ত্রণ লড়াই চালিয়ে যাবেন। তিনি আরও বলেছেন 'আমার সঙ্গেই আমার সঙ্গীরা অস্ত্র হাতে দেশের জন্য রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছি।তালিবানদে দাসত্ব কখনই স্বীকার করে নেব না।' আফগানিস্তানের বাকি সব উপজাতীদেরও তিনি আফগানিস্তান ন্যাশানাল ফ্রন্টের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ফ্রান্স, ইউরোপ, আমেরিকা আর আরব-দুনিয়কেও তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন,। তিনি বলেছেন ২০ বছর আগে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে লড়াইতে তারা অনেকেই সাহায্য করেছিল। এখন কী তালিবান বিরোধী যুদ্ধে তারা সহযোগিতার হাত এগিয়ে দেবে। তালিবানদের সহযোগিতারা করার উদ্দেশ্যে হল তালিবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হেরে যাওয়ায়। পাশাপাশি তিনি বলেন তালিবানদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাঞ্জশির। পঞ্জশিরের মানুষ তালিবানদের বিরুদ্ধে কখনই অস্ত্র ত্যাহ করবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কাঁটাপথে চিনের অর্থনৈতিক সম্পদ বাড়ছে দ্রুত গতিতে, বেজিং কি পারবে তা ধরে রাখতে
Viral Video: জাতীয় পাতাকা রাখে তালিবানদের 'কুনজরে' আফগান ব্যক্তি, পিছমোড়া করে বেঁধে শাস্তি
তালিবান সুপ্রিমো আখুনজাদাকে নিয়ে জল্পনা, পাকিস্তান সেনার হেফাজতে বলে দাবি ভরতীয় গোয়েন্দাদের
অনেকেই মনে করছেন আফগানিস্থানের বিদ্রোধী ভাইস প্রেসিডেন্ট আরমুল্লাহ সালের সঙ্গে মাসুদ কথা বলছেন। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ট যোগাযোগও রয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাসুদ সালেহকে পুরোপুরি সমর্থন করেছে। সালেহও আফগানিস্তানে তালিবানদের আধিপত্য মানতে নারাজ। তবে বর্তমানে তিনি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে আরবের কোনও একটি এলাকায়। তিনি উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেও জানিছেন সামুদ।
কাবুল থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে উত্তর আফগানিস্তান। আফগান রাজনীতিতে বরাবরই ফ্যাক্টর পঞ্জশির। ভৌগলিক অবস্থান এই একালাকে কৌশলগত দিত থেকে অনেক এগিয়ে রেখেছে।উত্তর দিকে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন। পঞ্জশির নদীর ওপর তৈরি শরু পথই একমাত্র ভরসা। দোড় লক্ষ জনসংখ্যার এই এলাকা তাজিক জাতিগোষ্ঠীর। তালিবানরা পাশতুল। উপত্যকার পান্না খুবই বিখ্যাত- আন্দোলনে আর্থআমদানিতে সাহায্য করে। তালিবান দখলের আগে পঞ্জশির কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে স্বায়ত্ব শাসন দাবি করেছিল। ন্যাটোর কাছেও পঞ্জশির ছিল নিরাপদ এলাকা। একটা সময় পঞ্জশির চিন ও তাজিকিস্তান সীমান্ত পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করেছিল। নিজের স্বাধীনতা অক্ষুন্ন রাখতে বর্তমানে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।