ইউনিসেফের তরফ থেকে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের বাল্যবিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা নিয়ে সংস্থা রীতিমত উদ্বিগ্ন। একই সঙ্গে বলা হয়েছে বিশ্বস্ত সূত্রে সংস্থার হাতে এমন রিপোর্টও রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে চড়া যৌতুক দিনে মাত্র ২০ দিনের সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকেও বিয়ের জন্য কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
খাদ্যের সংকটে এমনিতেই ধুঁকছে আফগানিস্তান (Afghanistan)। সেই খাদ্য আর অর্থ সংকটই তালিবান (Taliban) অধিকৃত আফগানিস্তানে ডেকে এনেছে নতুন বিপদ। দেশটিতে দেদার বিক্রি হচ্ছে কন্যা সন্তান। অনেক সময় আঁতুড় ঘর ছাড়ার আগেই বাকদান পর্ব সারা হয়ে যাচ্ছে সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের। আর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে থাকা আফগানরা তুলনায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়াদের থেকে কিনে নিচ্ছে তাদের কন্যা সন্তান। ভয়ঙ্কর এই রিপোর্ট প্রকাশ করে রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের তরফ থেকে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের বাল্যবিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা নিয়ে সংস্থা রীতিমত উদ্বিগ্ন। একই সঙ্গে বলা হয়েছে বিশ্বস্ত সূত্রে সংস্থার হাতে এমন রিপোর্টও রয়েছে যেখানে বলা হয়েছে চড়া যৌতুক দিনে মাত্র ২০ দিনের সদ্যোজাত কন্যা সন্তানকেও বিয়ের জন্য কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তালিবানদের দখবের আগেও আফগানিস্তানে বাল্যবিবাহের হার ছিল অনেকটাই বেশি। ২০১৮-২০১৯ সালের মধ্যে হেরাত ও বাগদিস প্রদেশে ১৮৩টি বাল্যবিবাহের রেকর্ড রয়েছে সংস্থার হাতে। ৭ মাসের শিশু থেকে শুরু করে ১৭ বছরের মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করা রয়েছে।
তালিবানরা আফগানিস্তান দখলের পর থেকেই সংকট শুরু হয়েছে আফগানিস্তানে। দেশটিতে নগদ অর্থের পরিমাণ খুবই কমে গেছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। কাজ হারিয়েছেন প্রচুর মানুষ। দুবেলার খাবার জোগাড় করাটাই এখন কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে অধিকাংশ আফগানবাসীর কাছে। তার ওপর কন্যা সন্তানের জন্ম নতুন বিপদ ডেকে আনছে তালিবানি জমানায়। তারণ তালিবানদের বিষ নজর এড়িয়ে একটি কন্যা সন্তানকে পড়াশুনা শেখানোটাই কঠিন। তারপর ওপর করাও রীতিমত সমস্যার। পদে পদে বিপদে ওঁত পেতে রয়েছে। সেই কারণে আর কন্যাসন্তানকে নিজেদের সঙ্গে রেখে নতুন কোনো বিপদের ঝুঁকি নিতে রাজি হচ্ছে না পরিবারের সদস্যরা। সেই কারণেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে আফগান কন্যা।
Farmer Protest: প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ না করলেও পারতেন, মহাপঞ্চায়েতে বললেন কৃষক নেতা
Mamata Banerjee On BSF: 'গায়ের জোরে এলাকা দখল করতে দেব না', দিল্লি যাওয়ার আগে তোপ মমতার
Miracle: 'মৃত ব্যক্তি' শ্বাস নিল মর্গের ফ্রিজারে, অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী সরকারি হাসপাতাল
তবে বিয়ের নাম করে ধনী আফগানরা কন্যা সন্তান কিনলেও সেই সন্তানকে কতটা লালনপালন করে বড় করে তুলবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একটি সূত্র দাবি করছে ধনী আফগানও সেই কন্যা সন্তানকে আরও চড়া দামে বিক্রি করে দিতে পারে। একাধিক সমাজকর্মী মনে করেন, এভাবে বিদেশেও পাচার হয়ে যাতে পারে আফগান শিশু কন্যারা।
করোনাভাইরাসের মহামারি, চলমান খাদ্য সংকট, আর্থিক অনটন- সবমিলিয়ে আসন্ন শীতকালে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারেও আশঙ্কা করা হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০২০ সাল থেকেই আফগানিস্তানের অর্ধেক জনসংখ্যা আর বিশুদ্ধ পানীয় জল পাচ্ছে না। গোটা দেশেই অভাব রয়েছে পুষ্টিকর খাবারের। যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলবে বলেও সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দাবি প্রবল আর্থিক সংকট আফগান কিশোরীদের আরও সমস্যায় দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত আফগান কিশোরীরা স্কুলে যেতে পারে না। বন্ধ তাদের লেখা পড়া। কিন্তু বাল্যবিবাহ আর শিশু শ্রম থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শিক্ষাই অন্যতম সুরক্ষা বলয়। ইউনিসেফের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে দেশের সবথেকে দরিদ্র পরিবারে বাল্যবাবাহের ঝুঁকি কমাতে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ধর্মীয় নেতাদেরও বিষয়টির দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানায়িছে সংস্থা।