নরেন্দ্র মোদীর আগে ভারতে তাঁর মতো উন্নয়ন কেউ করতে পারেনি: পাকিস্তানের সংবাদপত্রে চাঞ্চল্যকর দাবি শাহজাদ চৌধুরীর

‘বিশ্বের দুই বিরোধী সামরিক পরাশক্তি ভারতকে তাদের ‘বন্ধু’ বলে দাবি করে। এটা একটা কূটনৈতিক অভ্যুত্থান নয়তো কী?’ পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া সংবাদপত্রে এমনই চাঞ্চল্যকর মত প্রকাশ করলেন শাহজাদ চৌধুরী। 

Web Desk - ANB | Published : Jan 15, 2023 9:29 AM IST / Updated: Jan 15 2023, 03:00 PM IST

'নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানের জন্য একটি ঘৃণ্য নাম হতে পারে, কিন্তু তিনি ভারতকে ব্র্যান্ড তৈরি করার জন্য এমন কিছু করেছেন, যা তাঁর আগে কেউ করতে পারেনি।’ ‘বিশ্বের দুই বিরোধী সামরিক পরাশক্তি ভারতকে তাদের ‘বন্ধু’ বলে দাবি করে। এটা একটা কূটনৈতিক অভ্যুত্থান নয়তো কী?’ পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনে এমনই চাঞ্চল্যকর মতামত প্রকাশ করলেন প্রখ্যাত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক শাহজাদ চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত কীভাবে উন্নতির চূড়ায় পৌঁছেছে, তার প্রশংসা করে, শাহজাদ চৌধুরী 'দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন' পত্রিকার জন্য লিখেছেন যে, বিশ্বে প্রভূত সামরিক শক্তিসম্পন্ন দুটি বিরোধী দেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া, দুজনেই যদি ভারতকে তার ‘বন্ধু’ বলে দাবি করে, তাহলে সেটা ভারতের জন্য অবশ্যই এক ব্যাপক কূটনৈতিক অভ্যুত্থান।

ভারতের বৈশ্বিক অবস্থানকে গণনা করে, তিনি উদাহরণ দিয়েছেন যে, ভারতই সেই একমাত্র দেশ যে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের জন্য আমেরিকার জারি করা নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার সাথে স্বাধীনভাবে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারে।

তিনি লক্ষ্য করেছেন যে, বিশ্বব্যাপী নিজের প্রভাব প্রসারিত করেছে ভারত। এখানে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিই হোক বা তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক বাহিনীই থাকুক, ভারত ক্রমাগত নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে।

উল্লেখ্য, ভারত বনাম পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব সারা বিশ্বের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য দুই দেশ একে অপরকে পরোক্ষে ‘শত্রু’ তকমাও দিয়ে থাকে। তাই, পাকিস্তানের তরফ থেকে ভারতের জন্য প্রশংসাসূচক বার্তা আসা প্রায় অসম্ভব। বিশেষ করে যখন পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ‘কাশ্মীর’ কার্ডের দিকে মনোনিবেশ করে। শাহজাদ চৌধুরী গণনা করেছেন যে, সৌদি আরব, যে দেশকে পাকিস্তান নিজের ‘ভাই’ হিসেবে দেখে, সেই দেশ ভারতে ৭২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু, নিজের ‘ভাই’-এর কাছেই মাত্র ৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ চাওয়ার জন্য ইসলামাবাদকে ‘ভিক্ষা’ করতে হচ্ছে।

মোদী প্রশাসনকে তার পূর্বসূরিদের সাথে তুলনা করে, বিশ্লেষক পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, মনমোহন সিং-এর নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের অধীনে ২৫২ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ভারতের বৈদেশিক ভাণ্ডার প্রধানমন্ত্রী মোদীর অধীনে ৬০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। তাঁর মতে, ভারতের জিডিপির আকার তিন ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি হওয়ার ঘটনাটি এই স্মরণীয় অগ্রগতির প্রমাণ, এর দ্বারাই ভারত বিশ্বের তাবড় বিনিয়োগকারীদের পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। তিনি এও মনে করেন যে, পাকিস্তান ও ভারতের অন্দরের ব্যবধান এখন অপূরণীয়।

জম্মু ও কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা প্রদানকারী সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করার সময় পাকিস্তান কীভাবে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের দ্বারা রাজনৈতিকভাবে চালিত হয়েছিল তা স্মরণ করে শাহজাদ চৌধুরী বলেন যে, ভারত 'জনসংখ্যার ধীরে ধীরে পরিবর্তন'-এর কাজটি অবিরামভাবে অব্যাহত রেখেছে।

বিশ্লেষক চৌধুরী এও উল্লেখ করেছেন যে, নরেন্দ্র মোদী ভারতকে এমন জায়গায় নিয়ে এসেছেন যেখানে, দেশটি ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছিল। 'ভারত অতি দক্ষতার সাথে পাকিস্তানকে নিজেদের স্ক্রিপ্টে একটি ফুটনোটের মতো ছোট করে দিয়েছে’, তিনি বলেন, ইসলামাবাদ ভারতের প্রতি নিজের নীতি পুনঃনির্মাণ করে এবং চীনের সাথে একটি ত্রিদেশীয় ঐক্য তৈরি করে সম্পূর্ণ এশিয়াকে বৃহত্তর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু যদি এটা না করা হয়, তাহলে পাকিস্তান একটি ‘ঐতিহাসিক ফুটনোট’-এই পরিণত হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন-
মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল নেপাল, ছুটির সকালে প্রাণ হারালেন অন্তত ১৬ জন যাত্রী
‘কেন্দ্রের সমস্ত প্রকল্পের টাকা লুঠ করছে রাজ্য’, বলছে বাম-বিজেপি, ‘কেন্দ্রের টাকা দেওয়ারই ক্ষমতা নেই’, তোপ তৃণমূলের

Share this article
click me!