গাড়িটি তালিবানদের কাছে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মার্কিন সেনার নজর এড়াতে আর গাড়িটি মোল্লা ওমরের স্মারক রেখে দিতে চেয়েছিল। আর সেই কারণেই এতদিন ধরে তারা গাড়িটি লুকিয়ে রেখেছিল।
তালিবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের বিশেষ প্রিয় গাড়ি ছিল টয়োটা। ৯-১১র টুইন টাওয়ার হামলার পর সেই গাড়ি টার্গেট ছিল মার্কিন সেনার। কিন্তু দীর্ঘ তল্লাশি চালিয়েও মার্কিন সেনা সেই গাড়ির কোনও সন্ধান পায়নি। রীতিমত ব্যর্থ হয়েছিল। এতদিন পরে আফগানিস্থানের তালিবান সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রীর নির্দেশে মাটির খুঁড়ে বার করা হয়েছে সেই গাড়িটি। প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে সেই গাড়িটি মাটির তলায় লুকিয়ে রেখে দিয়েছিল তালিবানরা। এতদিন পরে তা গোপন ডেরা থেকে বার করে আনা হয়।
মোল্লা ওমরের গাড়িটি তালিবান কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার ওমারি কবর দিয়েছিল। চলতি সপ্তাহে সেই ব্যক্তি গাড়িটি মাটি খুঁড়ে বার করা নির্দেশ দিয়েছে। গাড়িটি জাবুল প্রদেশের একটি গ্রামের বাগানে পুঁতে রেখেছিল তালিবানরা। জাবুল প্রদেশের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক রহমতুল্লাহ হাম্মাদ সংবাদ সংস্থা এএফপি কে জানিয়েছে গাড়িটি এখনও ভালো অবস্থায় রয়েছে। শুধুমাত্র সামনের দিকের অংশটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাড়িটি তালিবানদের কাছে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মার্কিন সেনার নজর এড়াতে আর গাড়িটি মোল্লা ওমরের স্মারক রেখে দিতে চেয়েছিল। আর সেই কারণেই এতদিন ধরে তারা গাড়িটি লুকিয়ে রেখেছিল। ২০০১ সাল থেকেই গাড়িটি মাটির তলায় পোঁতা ছিল। তালিবান মিডিয়া সেল একটি ছবি প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে তালিবানরা বেলচা দিয়ে মাটি খুঁড়ে সেটি পুঁতে রেখেছিল। হাম্মাদ জানিয়েছে, তালিবান সরকার চাইছে গাড়িটি আফগানিস্তানের জাতীয় জাদু ঘরে ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে রেখে দিতে।
কান্দাহারের মোল্লা ওমর তালিবান সংগঠনের প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৯৯৬ সালে একটি রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের পর কট্টোরপন্থী ইসলামী আন্দোলনকে ক্ষমতার শিখরে নিয়েছিলেন। দেশে ইসলামী আইনের কঠোর ব্যাখাও আরোপ করা হয়েছিল তাঁরই নেতৃত্বে।
আফগানিস্তান তখন ওসামা বিন লাদেন ও ১১ সেপ্টেম্বর হামলার স্থপতি আল কায়দাসহ জিহাদি গোষ্ঠীর প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। জিহাদিদের স্বর্গরাজ্য ছিল আফগানিস্তান। সেইসময় তালিবানরা ওসামাকে মার্কিন সেনার হাতে তুলে দিতে রাজি না হলে মার্কিন বিমানবাহিলা আফগানিস্থানে হামলা চালায়। সেটাই শুরু মার্কিন সেনার আফগান আগ্রাসনের। তারপর তালিবানদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তৈরি হয় নতুন আফগান সরকার।
তালিবান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন সেই সময়ই মোলাল ওমর এই টয়োটা করোলায় করেই কান্দাহার থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন। তারপর তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপন করে ছিলেন। ২০১৩ সালে গোপন ডেরায় থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও তালিবানরা দীর্ঘদিন তাঁর মৃত্যুর কথা চেপে রেখেছিল। পরে তা প্রকাশ করে। কিন্তু তখনও মার্কিন সেনার কাছে থেকে ওমরের গাড়িটি বাঁচাতে বিশেষ তৎপর ছিল তালিবানরা।
দুই দশক ধরে রক্তক্ষয়ী বিদ্রোহ দমনের প্রচেষ্টার পর, ওয়াশিংটন গত বছর তার শেষ সৈন্য প্রত্যাহার করে নিয়েছিল যখন তালেবানরা দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, কাবুল দখল করে এবং ক্ষমতায় ফিরে আসে।
আরও পড়ুন ঃ
রাজ্যের একের পর এক বিস্ফোরণ, অমিত শাহকে চিঠি লিখে NIA তদন্তের দাবি শুভেন্দুর
নূপুর শর্মার মাথা কেটে ফেলার হুমকি, রাতের অন্ধকারে গ্রেফতার আজমেঢ় দরগার ধর্মগুরু
আনন্দ শর্মা- জেপি নাড্ডা দীর্ঘ বৈঠক, নতুন করে উস্কে দিল কংগ্রেস নেতার দল বদলের জল্পনা