এত 'অশ্লীল' গ্রামের নাম, যে ফেসবুক আটকে দেয় - নাম বদলাতে প্রশাসনে আবেদন বাসিন্দাদের

সুইডেনের (Sweden) গ্রামটি ছবির মতো, হ্রদের পাশে অবস্থিত। তবে, নামটা এমন যে 'অশ্লীল' বলে সেন্সর (Censor) করে ফেসবুক-সহ (Facebook) অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি।
 

Web Desk - ANB | Published : Jan 19, 2022 4:26 PM IST / Updated: Jan 19 2022, 10:04 PM IST

সুইডেনের (Sweden) এক ছবির মতো পাহাড়ি গ্রাম, ঝকঝকে হ্রদের পাশে অবস্থিত। ইনস্টিটিউট ফর ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড ফোকলোরের (Institute for Language and Folklore) তথ্য অনুসারে, সেই ১৫৪৭ সালে প্রথম গ্রামটির নাম সরকারি খাতায় নথিভুক্ত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, হ্রদের ধারে খাড়া পাহাড়ে অবস্থিত এই গ্রাম। অথচ, বর্তমানে গ্রামের বাসিন্দারা চাইছেন গ্রামের সেই ঐতিহাসিক নামটা বদল করা হোক। এই মর্মে সরকারিভাবে তাঁরা আবেদনও করেছেন সুইডেনের ন্যাশনাল ল্যান্ড সার্ভেতে (The National Land Survey of Sweden)। এই সংস্থার হাতেই ক্ষমতা রয়েছে সুইডেনের কোনও জায়গার নাম বদলের। গ্রামবাসীরা নাম বদলাতে চাইছেন, কারণ তাঁদের গ্রামের নামটা ফেসবুক থেকে শুরু করে অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে 'অশ্লীল' বলে সেন্সর (Censor) করে দেওয়া হয়।

কী নাম তাদের গ্রামের? মাত্র ১১টি বাড়ি বিশিষ্ট সুইডিশ গ্রামটির নাম 'ফাকে' (Fucke)। হ্রদটির নামও একই, ফাকে হ্রদ। (Fucke Lake)। যার সঙ্গে খুবই মিল রয়েছে ইংরাজি 'ফাক' (Fu*k) শব্দের। যা সঙ্গম কথাটির একটি ইংরাজি অশ্লীল প্রতিশব্দ। এই কারণেই গ্রামের নামটির ঐতিহাসিক শিকড় থাকা সত্ত্বেও, গ্রামবাসীরা যখনই তাঁদের গ্রাম সম্পর্কে ফেসবুকে লিখতে যান কিংবা অনলাইনে কোনও ব্যবসা করতে যান, তাদের সেই অনলাইন পোস্ট সেন্সর করা হয়। অশ্লীলতার অভিযোগে সরিয়ে নেওয়া হয় তাদের দেওয়া অনলাইন বিজ্ঞাপনগুলি। কারণ 'ফাক' কথাটি ফেসবুক ও অন্যান্য অনলাইন মাধ্যমের অ্যালগোরিদমে নিষিদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত করা আছে।  আর বারবার অনলাইন সেন্সরের আওতায় পড়ে বাসিন্দারা এখন ক্লান্ত। আর তাই তাঁরা চাইছেন, গ্রামটির নাম পরিবর্তন করে 'ডালসরো' রাখতে, সুইডিশ ভাষায় যার অর্থ 'শান্ত উপত্যকা'।

আরও পড়ুন - কালো মহিলার নগ্ন ছবি বলেই কি ডিলিট, ইনস্টাগ্রামের বিরুদ্ধে উঠল বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগ, দেখুন

আরও পড়ুন - শুধু আছে লাইনে দাঁড়ানোর ধৈর্য্য, দিনে ১৬০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন এই ব্যক্তি

আরও পড়ুন - UP Elections 2022: হারার জন্যই ভোটে লড়েন হাসনুরাম - ৯৩বার হেরেছেন, লক্ষ্য ১০০

তবে, সুইডেনের এই গ্রামের বাসিন্দাদের মনোবাঞ্ছা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। প্রথমত, প্রক্রিয়াটি সময় সাপেক্ষ, আগামী গ্রীষ্মকালের আগে এই বিষয়ে উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তারপর রয়েছে নাম বদলের নিয়ম কানুন। কোনও স্থানের নামবদলের জন্য আবেদনপত্রটি সুইডেনে স্বীকৃত নিয়ম অনুসারে লিখতে হবে। ব্যতিক্রমী কোনও কারণ না থাকলে কোনও স্থানের বর্তমানে ব্যবহৃত নাম সাধারণত পরিবর্তন করা হয় না। বিবেচনা করা হবে, নতুন নাম তৈরি করা হলে, আগে যে নামটি ছিল, তার উপর কী প্রভাব পড়বে। তাই, যদি কোনও জায়গার নাম দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারে থাকে, তাহলে তা পরিবর্তনের জন্য বড় মাপের কারণ থাকতে হবে।

বস্তুত, সুইডিশ ভাষাটাই এমন, যে এখানকার বেশ কিছু গ্রাম বা ছোট শহরের নাম শুনলে ইংরাজি ভাষায় অশ্লীল বলে মনে হতে পারে। যেমন এই দেশে 'হাম্প' (Hump) নামে শহর রয়েছে, আছে ফাকবাই (Fjuckby) নামে গ্রাম। ২০০৭ সালে এই গ্রামের ১৫ জন বাসিন্দা তাদের গ্রামের নাম পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু, তাদের আবেদন মানেনি কর্তৃপক্ষ। তবে অস্ট্রিয়ায়, ফাকিং (Fuc*ing) নামে একটি শহরের বাসিন্দারা কিন্তু সরকারের কাছে আবেদন করে ২০২১ সালের জানুয়ারিতেই, শহরের নাম পরিবর্তন করে ফুগিং (Fugging) করেছেন। 

এই অবস্থায় 'ফাকে' গ্রামের নাম বদলে 'ডালসরো' হয় কিনা, সেটাই দেখার। এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, তাঁদের গ্রাম খুবই সুন্দর গ্রাম। বাসিন্দারা সকলেই এখানে থাকতে পছন্দ করেন, কেউ অন্যত্র যেতে চান না। কিন্তু, সবাই চাইছেন গ্রামের নামটা যাতে পরিবর্তন করা হয়। নাহলে তাদের ব্যবসা খুব মার খাচ্ছে।
 

Share this article
click me!