
তাক লাগানের রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা। অ্যান্টার্কটিকার হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বরফে ঢাকা ধুধু প্রান্তরে ফলালেন তরমুজ। সাধারণ যা গরমকাল ও গরমের দেশের ফল হিসেবেই পরিচিত। রুশ বিজ্ঞানীরা সেই অসাধ্য সাধন করে কৃষিক্ষেত্রে মাইলফলক অতিক্রম করলেন বলেও দাবি গবেষকদের।
লাইভ সায়েন্সের তথ্য অনুসারে পোল অব কোল্ডে অবস্থিত রাশিয়ান গবেষণাকেন্দ্র ভস্টক স্টেশনে এই যুগান্তকারী প্রচেষ্টা রুশ বিজ্ঞানীদের চেষ্টায় সাফল্যের মুখ দেখেছে। এই স্থানটি বিশ্বের শিতলতম স্থান হিসেবে চিহ্নিত। এখানে সাধারণ তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের ১২৮ . ৬ ডিগ্রি ফারেনাইট নিচে বা হিমাঙ্কের ৮৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
বিজ্ঞানী আর ইতিহাসবিদদের দাবি তরমুজ প্রাচীনকাল থেকেই চাষ হত সুদানে। প্রায় ৪ হাজার ৩০০ বছর আগে সেখানে তরমুজ চাষের প্রামাণ পাওয়া গেছে। মিশরের একাধিক সমাধিচিত্রতেও তরমুজ চাষের প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশেই তরমুজ চাষ হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বরফ বা শীতের মধ্যে তরমজু চাষের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এবার সেই অসাধ্যই সাধন করতে বরফে ঢাকা অ্যান্টার্কটিকাকে বেছে নিয়েছিলেন রুশ বিজ্ঞানীরা। তাতেই তারা সফল।
অনুদানহীন মাদ্রাসায় নজর রাজ্য সরকারের, সমীক্ষার প্রস্তাব মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের
বিজ্ঞানীরা ভোস্টক স্টেশনের গ্রিনহাউসকে তরমুজ চাষের জন্য সহায়ক মরুদ্যানে রূপান্তরিত করেছিল। বায়ুর তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে করে বিজ্ঞানীরা এই ফল চাষ করেন। রীতিমত খাটাখাটনি করে তরমুজ গাছ লালনপালন করেন। তারা গ্রিন হাউসকেই তরমুজ গাছের সহায়ক তৈরি করে নিয়েছিলেন।
মহাকাশে যদি কোনও মহাকাশচারীর মৃত্যু হয়? জানুন সেই কী করা হয় সেই অভিযাত্রীর দেহ
রুশ বিজ্ঞানীরা তরমুজ চাষের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে গ্রিনহাউসের স্বতন্ত্রকেও চ্যালেজ্ঞ হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। কারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, অক্সিজেনের ঘাটতি এই সব কিছু জেনেও তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়েছিল। সেখানে বরফঢাকা প্রান্তর- মাটির বড়ই অভাব। তাই মাটির পরিবর্তে একটি পালতা স্তরে তারা তরমুজের বীজ বপণ করেছিলেন। প্রাকৃতিক সূর্যালোকের মত বিশেষ আলোরও ব্যবস্থা করেছিবেন। গবেষণার জন্য গাছের প্রজনন ও ম্যানুয়ার পরাগ সংযোগও করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
Viral Video: মানুষ থেকে কুকুর হলেন ছেলেবেলার শখ মেটাতে, জাপানিকে নিয়ে সরগরম সোশ্যাল মিডিয়া
তরমুজের চারা লাগানোর প্রায় ১০৩ দিন পরে তারা প্রথম ফল দেখতে পান। একএকেটি তরমুজের ওজন প্রায় ১ কিলোগ্রাম, ব্যাস ৫ ইঞ্চি। এই কৃতিত্ব অ্যান্টার্কটিক কৃষিতে বিজয়ের ক্রমবর্ধমান সিরিজ যোগ করে। ২০২০ সালে, ভোস্টক স্টেশনের গবেষকরা ডিল, তুলসী, পার্সলে, আরগুলা এবং বাঁধাকপি সহ বিভিন্ন উদ্ভিদ সফলভাবে লালন-পালন করেছেন। যদিও এর আগে কোরিয়ান বিজ্ঞানীরাও এই এলাকায় অনেক কিছু চাষের চেষ্টা করেছিল। কিছুকিছু ক্ষেত্রে তারা সাফল্যও পেয়েছিল। যদিও এখন মহাকাশেও লঙ্কা উৎপাদন করে তাক লাগিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।