হাতে সময় মাত্র কয়েকদিন, এর পরেই বাঙালীর সর্ববৃহৎ উৎসব দুর্গা পূজার প্রারম্ভ। কৈলাস থেকে বাপের বাড়িতে মেয়ের আগমন ঘিরে বহু আগে থেকেই বিভিন্ন বারোয়ারী থেকে সার্বজনীন ক্লাব গুলোতে ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। মেয়েকে বাড়িতে বরন করার মধ্যেও প্রত্যেকবার দেখা মেলে নতুনত্বের। দক্ষিণ কলকাতার এমনই এক বিখ্যাত সার্বজনীন পূজা আয়োজকের নাম চেতলা অগ্রণী। প্যান্ডেল থেকে শুরু করে মূর্তি, অন্দর সজ্জা থেকে বাহির প্রতি ক্ষেত্রেই দেখা মেলে বৈচিত্রের। এ মহাযজ্ঞের আরম্ভ জুন মাসের ৮ তারিখ থেকে বাঁশ বাধার মধ্যে দিয়ে। এবারে চেতলা অগ্রণীর শারদীয়া থিম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা “কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে”। এই চলার পথ শিল্পী অনির্বাণ দাসের ভাবনায়, শিল্পকলায়, সজ্জায় পেয়েছে এক অনন্য মাত্রা। কলকাতার ঐতিহ্য, ইতিহাস, তার পথ চলা সবই এক সাথে করে শিল্পের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরছেন এবারের পূজায়। হাওড়া ব্রীজ থেকে শুরু করে ভিক্টোরিয়ার মত স্থাপত্য, রাজভবন থেকে বাঙালীর গড়ের মাঠ। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল ; এক কথায় কলকাতা যে যে কারণে তিলোত্তমা, প্রায় তার সবটাই ধরা পরতে চলেছে চেতলা অগ্রণীর এবারের শারদীয়াতে।
দেখে নিন - নাম লেখাননি এখনও, দেরি না করে অংশ নিন এশিয়ানেট নিউজ শারদ সম্মান ২০১৯-এ
কলকাতা যান্ত্রিকতায় হারিয়ে গেছে বলে অনেকের যে ভাবনা, তাকে নস্যাৎ করার এক অনন্য প্রচেষ্টার দেখা মেলে এই প্যান্ডেলে। লাল কালো রঙের আগেকার ডাক বাক্স থেকে শুরু করে নানা পটের চিত্র দিয়ে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে চারিপাশ। কলকাতা আর্ট কলেজের দশ থেকে বারো জন নিজেদের তুলিরটানে জীবন্ত করে তুলছে চলমান কলকাতার ছবিকে।
মাটির হাঁড়ি থেকে শুরু করে প্লাইয়ের তৈরি ঘর, থার্মকল কেটে প্যান্ডেলের দেওয়ালে “কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে” কবিতাকে তুলে ধরা; এ সমস্ত শিল্পকলা যে সাধারন মানুষদের অনেক বেশি আকৃষ্ট করে তুলব এবারের পূজায় তা বলাই বাহুল্য। প্যান্ডেলের মূল অংশে মাথার উপরে থার্মকলে গড়া গণ্ডার বাড়িগুলো, সাথে করে রাস্তা যত অজগর সাপ ; কবিতাকে যেন শিল্পকলার মাধ্যমে চোখের সামনে নিয়ে আসার এক অভূতপূর্ব চেষ্টা চেতলা অগ্রণীর মধ্যে। এখনকার বিনুরাও যে অবাক হবে, অবাক হয়ে যে “চেয়ে দেখো” “চেয়ে দেখো” বলে উঠবে সে নিয়ে আয়োজকরা আশাবাদী।
আরও পড়ুন- সাবেকিআনা এবং আধুনিকতার সংমিশ্রণে বাংলার প্রাচীন চালচিত্রের দেখা মিলবে দেশপ্রিয় পার্কে
এবারে থিম যেহেতু “কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে”, সে ক্ষেত্রে প্যান্ডেলের গঠন অনেকটাই আঁটোসাটো। যেহেতু মানুষের ভিড় হয় প্রচুর, সেই কথা মাথায় রেখে প্রায় আঠার থেকে কুড়িটা মত এসি প্যান্ডেলের ভেতরে লাগান হবে। সাধারন মানুষের জাতে নুন্যতম অসুবিধে না হয় প্যান্ডেল পরিক্রমা করার সময়, সেই কথা মাথায় রেখেই এই সিধান্ত নেও্যা হয়েছে বলে আয়জকেরা জানান।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন যেমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে, সেই সাথে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ভলিন্টিয়ারও থাকবে পুলিশ প্রশাসনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।