অনুব্রতকে দু'বার তলব করেছে সিবিআই। কিন্তু, একবারও হাজিরা দেননি তিনি। বরং অসুস্থতার কথা জানিয়ে এড়িয়ে গিয়েছেন হাজিরা। তারপরই গতকাল রক্ষাকবচের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় (Post Poll Violence Case) হাইকোর্ট (Kolkata High Court) স্বস্তি পেলেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। এই মামলা উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে। মামলার শুনানির সময় তিনি সিবিআইকে (CBI) জানান, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রত মূল অভিযুক্ত নন। তাঁর নাম এফআইআরে (FIR) নেই। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। এমনকী, তাঁকে গ্রেফতার (Arrest) করতে পারবে না সিবিআই। তবে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত (Investigation) জারি রাখতে পারবে সিবিআই। আর সিবিআই ডাকলে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে অনুব্রতকেও। তাঁকে বোলপুর (Bolpur) বা দুর্গাপুরে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) ফলপ্রকাশ হয় ২ মে। তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা সামনে আসছিল। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত হতে হচ্ছিল বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের। আর অভিযোগ তোলা হচ্ছিল শাসকদলের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। একইভাবে ২ মে ফল ঘোষণার দিন বীরভূমের ইলামবাজারে বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলার তদন্তভার নেয় সিবিআই। তারপর গ্রেফতার করা হয় বেশ কয়েকজনকে। কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ইলামবাজার পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ-সহ একাধিক তৃণমূল নেতাকে। তারপরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রতকে।
আরও পড়ুন- অসুস্থ অনুব্রত, ভর্তি এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে
ইতিমধ্যেই তাঁকে দু'বার তলব করেছে সিবিআই। কিন্তু, একবারও হাজিরা দেননি তিনি। বরং অসুস্থতার কথা জানিয়ে এড়িয়ে গিয়েছেন হাজিরা। তারপরই গতকাল রক্ষাকবচের জন্য কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আজ সেই মামলার শুনানি হয় বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে। তখনই হাইকোর্ট জানায়, অনুব্রতর বিরুদ্ধে তদন্ত জারি রাখতে পারবে সিবিআই। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। পাল্টা সিবিআইকে সবরকম সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছেন কেষ্ট।
আরও পড়ুন- 'তৃণমূলের' জয় বলতে গিয়ে মুকুলের মুখ ফসকে বেরোল 'বিজেপি', চরম অস্বস্তিতে অনুব্রত
এদিকে অনুব্রতকে সিবিআই তলব করার পরই তা নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল তৃণমূলের চেয়ারপার্সন হওয়ার পরই এনিয়ে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিলেন তিনি। বলেন, "যখনই একটি করে নির্বাচন সামনে আসে তখনই সিবিআই এবং ইডির তৎপরতা বাড়ে। সব মুখ বন্ধ করার জন্য, যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে একটি কথাও না বলতে পারা যায়। সামনেই বীরভূমের নির্বাচন রয়েছে। তার জন্যই নোটিশ পাঠিয়েছে কেষ্টকে। এমনিতে রাজনৈতিকভাবে পারবে না। তৃণমূল নেতাদের সিবিআই এবং ইডিয়ের তলব করা হয় শুধুমাত্র নির্বাচনের আগে, যাতে তাদের নিয়ে কথা বলার সুযোগ পায় বিরোধী পক্ষ।"
আরও পড়ুন- বিধানসভায় বাম-কংগ্রেস জোট না করলে বিজেপি আরও কম আসন পেত, বলছেন অনুব্রত