ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে বিজেপির শীর্ষ নের্তৃত্ব। কারও মুখে সত্যমেব জয়তে, আইনের জয়জয়কারে মাতল বিজেপি।
ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেন বিজেপির শীর্ষ নের্তৃত্ব। কারও মুখে সত্যমেব জয়তে, কেউ বা আইনের জয়জয়কারে মেতেছেন। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর এদিন হাইকোর্টের রায়ের পরেই মমতার সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন দিলীপ-শুভেন্দু-মালব্য সহ একঝাক বিজেপি নেতা-নেত্রী।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'পশ্চিমবঙ্গে একুশের নির্বাচনের পর যা হয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জার। মুখ্য়মন্ত্রী বা এই সরকার এটা মানতে চাননি। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট সেটা মেনেছে। সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে সিট গঠন করতে বলেছে। সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে পুরো বিষয়টি দেখা জন্য আবেদন জানিয়েছেন। যাঁরা অত্যাচারিত হয়েছেন, তাঁরা আশা করি এবার বিচার পাবেন। আর যারা দোষী তাঁদের শাস্তি হবে। এটা খুশির বিষয় নয়, এটা অধিকার। বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
দিলীপ ঘোষ আরও বলেছেন,' বিজেপি করার অপরাধে ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। এখনও প্রচুর মানুষ ঘরছাড়া। তাঁরা চাষের জমিতে চাষ করতে পারছে না। তাঁদের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি তিনি পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আরও বলেছেন,' পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয় না। পুলিশের সামনেই আমাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে। মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে।'
অপরদিকে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক রায়ের শিরোপা দিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, শাসকদল বাংলাকে রাজনৈতিক হিংসার পরীক্ষাগার বানিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় ৫ সদস্যের বেঞ্চের আজকের ঐতিহাসিক রায়, তাঁদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়। সুতরাং এটা প্রমাণিত যে বিচার বিভাগ হল সংবিধান ও গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ।'
বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেনন জানিয়েছেন, 'কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর, এটা স্পষ্ট যে পশ্চিমবঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল।তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা বিজেপি সমর্থকের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। অনেককে হত্যা করেছে, নিরীহ মহিলাদের ধর্ষণ করেছে। এবং রাজ্য সরকার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।' অমিত মালব্য টুইট করে নথির উপরে আন্ডার লাইন করে জানিয়েছেন, ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে এফআইআর রেজিস্ট্রেশনই নেওয়া হয়নি।'
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার আদৌ NHRC-রিপোর্টের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে রাজ্য়ের অভিযোগ ধোপে টিকল না। কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে যে, জাতীয় মানবধিকার কমিশনের রিপোর্টে যে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ জানিয়েছে রাজ্য, তা মোটেই সঠিক নয়। আদালত সকল অভিযোগের তথ্য খতিয়ে দেখেছে। পাশাপাশি ভোট পরবর্তী হিংসায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। ছয় সপ্তাহের পর সিবিআই রিপোর্ট জমা দেবে কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নির্দেশেই সিট গঠন করতে হবে। আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে রিপোর্ট।
কলকাতা হাইকোর্ট রায়ে খুশি বিজেপি নেত্রী শ্রীরুপা মিত্র চৌধুরীও। তিনি বলেছেন, সত্যমেব জয়তে। ' ন্যায়বিচারের কাছে মানুষের প্রবেশাধিকার একটি শক্তিশালী গণতন্ত্রের চাবিকাঠি।'হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন রীতেশ তিওয়ারি। তাঁর মুখেও 'সত্যমেব জয়তে।' বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল টুইটে আইন-সংবিধানের পক্ষে জয়সূচক বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছেন, 'রাজনীতিতে হিংসা করা যাবে না। মানুষের জন্য বিচার। গণতন্ত্রের জন্য বিচার। সংবিধানের বিজয়।আইনের জয়।'
হাইকোর্টের রায়ে খুশি বিজেপি নেতা রাজু বিস্তাও। তিনিও টুইটে তথ্য শেয়ার করেছেন, আদালত এনএইচআরসি কমিটির উদ্ধৃত অন্যান্য সমস্ত মামলা আদালতের তত্ত্বাবধানে থাকা বিশেষ তদন্ত দলের (এসআইটি) কাছেও পাঠিয়েছে।' রাজ্য বিজেপির তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, 'কলকাতা হাইকোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছে বিজেপি। হাইকোর্টের এই রায়, রাজ্যের পুলিশ এবং প্রশাসনের রাজনীতিকরণ, নিষ্ক্রিয়তা এবং ব্যর্থতাকেই স্পষ্ট করেছে। এই রায় রাজ্যের অত্যাচারিত এবং বঞ্চিত হওয়া সমস্ত মা-বোনেদের জয়।'
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে
আরও দেখুন, মাছ ধরতে ভালবাসেন, বেরিয়ে পড়ুন কলকাতার কাছেই এই ঠিকানায়
আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে
আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস