উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ ফিরহাদকে, খতিয়ে দেখা হবে কলকাতার সব কারখানা-গুদাম

ট্যাংরার গুদামে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। বলেন, "ট্যাংরার ওই চামড়ার গুদামে কীভাবে আগুন লাগল, কেন এত ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হল তা খতিয়ে দেখতে সেখানে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। সেখানে কী কী জিনিস ছিল, কী থেকে আগুন এত ভয়াবহ হয়ে উঠল এই সব বিষয় নিয়ে তদন্ত হবে।"

Web Desk - ANB | Published : Mar 13, 2022 10:53 AM IST

শনিবার ট্যাংরার (Tangra fire incident) মেহের আলি লেনের গুদামে আগুন লাগে। প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে সেই আগুন। আর এই আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ে তদন্তের (constitutes a high power committee) জন্য কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমে (Firhad Hakim) একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 

কী করবে সেই কমিটি? 
উচ্চপর্যায়ের এই কমিটি তৈরি করা হবে দমকল, পুলিশ ও কলকাতা পুরনিগমকে নিয়ে। কলকাতার সব কারখানা ও গুদামের বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে এই কমিটি। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী আমাকে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ, দমকল ও কলকাতা পুরনিগমকে নিয়ে এই কমিটি তৈরি করা হবে। কলকাতা শহরে এইরকম ঘিঞ্জি এলাকায় কতগুলো কারখানা বা গোডাউন রয়েছে তার একটা তালিকা তৈরি করা হবে। সেই কারখানা বা গোডাউনগুলোতে দমকলের অনুমতি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। এই কারখানাগুলোতে আগুন লাগলে তা ভয়াবহতা কতটা হতে পারে তার খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। সেই অনুযায়ী একটা রিপোর্ট তৈরি করা হবে। এই ফায়ার সেফটি কমিটিতে দমকলই থাকবে প্রধান। আর তার সঙ্গে পুরনিগম ও পুলিশ থাকবে।" 

আরও পড়ুন- ট্যাংরার অগ্নিকাণ্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন, উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

ট্যাংরার গুদামে আগুন নিয়ে ফিরহাদের মন্তব্য
ট্যাংরার গুদামে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, "ট্যাংরার ওই চামড়ার গুদামে কীভাবে আগুন লাগল, কেন এত ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হল তা খতিয়ে দেখতে সেখানে ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে। সেখানে কী কী জিনিস ছিল, কী থেকে আগুন এত ভয়াবহ হয়ে উঠল এই সব বিষয় নিয়ে তদন্ত হবে। তবে ওই গুদামে শুধুমাত্র যদি রেক্সিন থাকত তাহলে আগুন এতটা ভয়াবহ হত না। কারণ রেক্সিন পুড়তে এক থেকে দু'ঘণ্টা সময় লাগে। তারপর ধীরে ধীরে নিভে যায় আগুন। ফলে সেখানে ঠিক কী ছিল যার জন্য এতক্ষণ ধরে জ্বলল আগুন তা ফরেন্সিক করে দেখতে হবে। না হলে বলা যাবে না।"  

আরও পড়ুন- ট্যাংরায় বিদ্ধংসী আগুন, নেভাতে গিয়ে আহত ৩ দমকল কর্মী

কী হয়েছিল গতকাল?
গতকাল সন্ধে ৭টা নাগাদ ট্যাংরার একটি গুদামে আগুন লাগে। গুদামটি ঘিঞ্জি এলাকায় হওয়ার ফলে আগুন নেভাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় দমকলকে। দ্রুত ছড়িয়েও পড়তে থাকে আগুন। আগুনের (Fire) লেলিহান শিখা এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে যে দমকলের (fire brigade) ১৬টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়েও আগুনকে বাগে আনতে পারছিল না। রেক্সিন, ফোম, কাপড়ের গুদাম হওয়ার আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ও তীব্রতা ক্রমেই বৃদ্ধি পায়। পুরো গুদামটি আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায়। আগুনের তীব্রতায় একটা সময় পড়ে ভেঙে পড়ে যায় টিনের ওই গুদাম। কালো ধোয়া গ্রাস করে ফেলেছিল গোটা এলাকাকে। আর এই আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হন ৩ জন দমকল কর্মী। এরপর প্রায় ১৬ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে যান পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। এছাড়া গতকাল রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু (Sujit Basu) এবং সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee)। এছাড়া আজ সকালে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান ফিরহাদও। 

আরও পড়ুন- ফের শহরের বুকে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড, দমকলের ১০টি ইঞ্জিনের চেষ্টাতেও এখনও নেভেনি আগুন, আহত ২

এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কলকাতার পুলিস কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, "কী থেকে আগুন লাগল, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ফরেন্সিক টিমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরই জানা যাবে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে জরুরি নথিপত্রের বিষয়টি দেখা হবে।"

Share this article
click me!