গভীর রাতে এসেছিল গাড়ি, 'মেরে ফেলে দেব, কেউ খুঁজেই পাবে না', কাদের কথা শুনে ফেলেন অর্জুনের মা

রাত তখন ১২টা পেরিয়েছে। যুবনেতার মৃত্যুর রাতেই অর্জুনের বাড়ির সামনে এসে দাড়িয়েছিল একটা ধূসর রঙের গাড়ি। 'মেরে এমন জায়গায় ফেলে দেব, কেউ খুঁজেই পাবে না', ছেলে বেরোনোর পরেই এমন কথা নিজে কানে শুনেছিলেন মা। অর্জুন চৌরাশিয়ার মৃত্যু নিয়ে আরও ধোঁয়াশা বাড়ল। 

Web Desk - ANB | Published : May 8, 2022 9:25 AM IST / Updated: May 08 2022, 03:02 PM IST

অর্জুন চৌরাশিয়ার মৃত্যু নিয়ে আরও ধোঁয়াশা বাড়ল। যে রাতে অর্জুন মারা যান, সেই রাতে অর্জুনের বাড়ির সামনে একটা জটলা শোনা গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন অর্জুনের মা রেশমি চৌরাশিয়া। এমনকি ওই দিন আর ছেলে বাড়িতে ফেরেননি বলে দাবি মায়ের। তবে কি কেউ অর্জুনকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। এই প্রসঙ্গে অর্জুনের মা বলেন, ওই দিন বাড়িতে শোয়নি অর্জুন। কাজের জন্য বাড়িতে এসেছিল। আবার তাড়াতাড়ি চলে যায়। তখনই বাড়ির সামনে একটা জটলা শুনি। তবে কাউকে দেখতে পাইনি। কিন্তু আমি নিজের কানে শুনেছি, কেউ বলছে, তোকে মেরে এমন জায়গায় ফেলে দেব, কেউ খুঁজেই পাবে না। এতটুকুই শুনতে পেয়েছিলাম। এরপরেই আমরা ছেলেকে খুঁজতে শুরু করি। সারা রাত ধরে ওকে খুঁজি। থানায় যাই। কিন্তু পুলিশের কোনও সহযোগিতা পাইনি।যেদিন ওই কথা শুনি, সেইদিনই যদি এই ঘটনা না ঘটত, তাহলে হয়তো কিছু মনে হতো না।' 

রাত তখন ১২টা পেরিয়েছে। যুবনেতার মৃত্যুর রাতেই অর্জুনের বাড়ির সামনে এসে দাড়িয়েছিল একটা ধূসর রঙের গাড়ি। ১২ টা ১৫ থেকে রাত ৩ অবধি ওই এলাকাতেই দাঁড়িয়েছিল গাড়িটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি এর আগে ওই গাড়িটিকে কেউ এলাকায় দেখেননি। কে বা কারা কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিল, তাও পরিষ্কার নয়। স্থানীয় একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে ওই গাড়িটি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। এরপরও গাড়ির আড়ালে কারা লুকিয়ে ছিল, এনিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইতিমধ্যেই গাড়িটির বিষয় নিয়ে পুলিশেকে জানানো হয়েছে। এখন সিসিটিভির সূত্রে ধরে কাউকে চিহ্নিত করা যায় নাকি, সেটাই বড় বিষয়।

আরও পড়ুন, আত্মহত্যা করেছিলেন অর্জুন ? সামনে এল বিজেপি নেতার ময়নাতদন্তের বিস্ফোরক রিপোর্ট

অর্জুনের আত্মীয়রা প্রশ্ন তুলেছেন, অর্জুনের উচ্চতা ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি।তাই যে জায়গায় দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে বেশ খানিকটা গর্ত করা হলেও মাটিতে ঠেকে থাকত অর্জুনের দেহ। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, অর্জুনের গলায় যে গামছার ফাঁস লাগানো ছিল, সেটা ছেঁড়া , বেঁধে জোড়া করার চেষ্টা করা হয়েছে। এইসব দেখেই অর্জুনের মৃত্যু আত্মহত্যা নয় বলে দাবি করেছে আত্মীয় স্বজনরা। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আবার বলছে অন্য কথা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে যে, অর্জুন আত্মহত্যাই করেছিলেন। খুনের কোনও ইঙ্গিত প্রাথমিক রিপোর্টে মেলেনি। ময়নাতদন্তে উঠে আসা তথ্য অনুযায়ী, অর্জুন চৌরাসিয়ার দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। কোনও ধস্তাধস্তি চিহ্ন মেলেনি বিজেপি যুব নেতা অর্জুনের শরীরে। এর থেকে প্রাথমিকভাবে খুনের প্রমাণ বা চিহ্ন মেলেনি।

আৎও পড়ুন, অর্জুন চৌরাসিয়া আসলে কে ? কেন এত ধুন্ধুমার কাশীপুরে, যুব নেতার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিতর্ক

প্রসঙ্গত, বিজেপির নেতার দেহ উদ্ধার পরেই তৈরি হয় রহস্য। ঘটনাস্থলে পৌছে যান বিজেপি কল্যাণ চৌবে। দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি কর্মী সমর্থক ও পরিবারে সদস্য। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে প্রথম বচসা, পরে ধস্তাধস্তি রণক্ষেত্রে চেহারা নেয় এলাকায়।  ধুন্ধুমারের মাঝেই অর্জুনের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায় পুলিশ। এরই মাঝে হাইকোর্টে ময়নাতদন্ত স্থগিতে আরজি জানিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।কাশীপুরে নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সাংবাদিকদের বলেন, 'ভারতীয় জনতা পার্টি নিহত অর্জুন চৌরাসিয়ার পরিবারের পাশে থাকবে। এই ঘটনায় নবান্নর থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে', এবং সিবিআই তদন্তের দাবি জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। 

আরও পড়ুন, আজই ঘূর্ণাবর্ত রূপ নিতে পারে সাইক্লোন অশনিতে, কলকাতাতেই প্রস্তুত এনডিআরএফ-র ১৭ টিম

Read more Articles on
Share this article
click me!