এবার করোনা আতঙ্কেও উঠে এল হিন্দু-মুসলিম 'বিদ্বেষ'। খোদ বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য়ে শুরু হয়েছে জোর বিতর্ক। সম্প্রতিএক সভায় দিলীপবাবু বলেন, যারা আল্লার ভরসায় রয়েছেন, তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন।
লকডাউনে তালা পড়ে গেছে রেড লাইট এরিয়ায়, ত্রাণ চেয়ে আর্জি দেহ পসারিণীদের.
এতদিন তর্কটা ছিল করোনায় রাজনীতিকরণ নিয়ে। লকডাউনেও রাজপথে কেন মুখ্য়মন্ত্রী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দাবি করেন,খোদ মুখ্য়মন্ত্রী লকডাউন ভাঙলে রাজ্য়বাসী তো নিয়ম ভাঙবেই। আসলে চাল, ডাল দিতে নেমে রাজনীতি করছেন মুখ্য়মন্ত্রী। তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীরা দান সামগ্রী বিলি করলে দোষ নেই। বিজেপির নেতারা দান করলেই পুলিশ হুমকি দিচ্ছে।
দিল্লির নিজামুদ্দিনের সমাবেশ চিন্তা বাড়াচ্ছে বাংলার, হজ হাউসে আনা হল ৭৬ জনকে.
কিন্ত এবার রাজনীতি ছাড়িয়ে করোনায় মুসলিমদের নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ। ত্রাণ বিলির এক সভায় বিজেপি নেতা বলেন, যারা আল্লার ভরসায় রয়েছেন, তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি লকডাউন উপেক্ষা করে দিল্লির নিজামুদ্দিনের সমাবেশে হাজারেরও বেশি মানুষকে গাদাগাদি করে বসতে দেখা যায়। রাজ্য় থেকেও অনেকে সেই সমাবেশে যোগ দেন। এখন কেন্দ্রীয় সরকার সতর্ক করার পর দিল্লির ধর্মীয় সমাবেশে যোগদানকারীদের চিহ্নিত করেছে রাজ্য় সরকার।
দিদির অনুপ্রেরণায় কাজ করছেন দিলীপ, বিজেপি সভাপতির মুখে একী কথা
করোনা সংক্রমণ নিয়ে যখন দেশজুড়ে আতঙ্ক, তখন এই সমাবেশ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির রাজ্য় সভাপতি। নাম না করে রাজ্য়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য় মুসলিমদেরই দায়ী করেন তিনি। দিলীপবাবু বলেন, বিদেশ থেকে বহু মানুষ এখানে আসছেন। টুরিস্ট ভিসা নিয়ে আসেন। যেহেতু বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত তাই তাঁদের কিছু বলা যাবে না। আর তার পরিণামই আমরা এখন ভোগ করছি। যারা আল্লাহর দয়ায় সুস্থ হবেন বলছেন তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। মন্দির জমায়েত বন্ধ করলেও সেভাবে এগিয়ে আসছে না মসজিদ।
এদিকে বাংলার চিন্তা বাড়াচ্ছে দিল্লির ধর্মীয় সমাবেশ। গতকালই দিল্লির নিজামুদ্দিনে অংশগ্রহণকারী ৫৪ জনকে চিহ্নিত করেছিল রাজ্য় সরকার। নিউ টাউনের হজহাউসে রাখা হয়েচিল তাঁদের। এবার সেই ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা ৭৬ জনকে নতুন করে আনা হল হজ হাউসে। পরিসংখ্যান বলেছে,ওই সভা থেকে আসা ব্য়ক্তিদের সংস্পর্শে এসেছেন এরকম মোট ২১৫ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের সবার ওপরই নজর রাখছে রাজ্য় সরকার।
বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন,রাজ্য় থেকে ৭১ জন নিজামউদ্দিন মসজিদের সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। সেইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ৭১ জনের মধ্যে ৫৪ জনকে ইতিমধ্যেই কোয়ারান্টাইনে পাঠানো হয়েছে। যাদের মধ্য়ে ৪০ জনই বিদেশি। এ বিষয়ে কেন্দ্রের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, এই বিষয়ে রাজ্য়ের কাছে কেন্দ্র আরও আগে বার্তা পাঠাতে পারত।
জানা গিয়েছে, নিজামউদ্দিনের সভা থেকে ফিরে তেলেঙ্গানার ৬ বাসিন্দা করোনায় মারা গিয়েছেন। রাজ্য সরকারের অনুমান, পশ্চিমবঙ্গ থেকে কমপক্ষে একশোজন গিয়েছিলেন দিল্লির ধর্মীয় সভায়। এখন দিল্লি ফেরত সেই মানুষদেরই খুঁজে বেড়াচ্ছে রাজ্য় সরকার। ইতিমধ্যেই রাজ্য় থেকে ওই ধর্মীয় সভায় যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য় দফতর। এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন খোদ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়েছেন, রাজ্য থেকে দিল্লির ধর্মীয় সভায় যাওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তাঁদের সবাইকে করোনা পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে। পাশাপাশি ১৪ দিনের কোয়রান্টিন বাধ্য়তামূলক।