প্রয়াত প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র (Eminent theatre personality Shaoli Mitra passes away)। সকলের অগোচরে শেষকৃত্য সম্পন্ন কলকাতার সিরিটি শ্মশানে (Siriti Crematorium)।
চলে গেলেন প্রখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব শাঁওলি মিত্র (Eminent theatre personality Shaoli Mitra passes away)। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। তবে, হাসপাতালে যাওয়া বা চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়ার বিষয়ে তাঁর তীব্র অনিহা ছিল। অসুস্থতা সত্ত্বেও হাসপাতালে ভর্তি হতে চাননি। এমনকী মৃত্যুর পর, তাঁর মরদেহ যাতে প্রকাশ্যে না আনা হয়, সেই বিষয়েও একটি ইচ্ছাপত্র লিখে গিয়েছিলেন বাংলার আধুনিক যুগের অন্যমত শক্তিশালী নাট্য ব্যক্তিত্ব। এদিন দুপুর ৩টে বেজে ৪০ মিনিটে বেহালার বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কলকাতার সিরিটি শ্মশানে (Siriti Crematorium, Kolkata) অনাড়ম্বরভাবে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।
২০২০ সালে ৭২ বছর পূর্ণ হওয়ার পর, তিনি এক ইচ্ছাপত্র লিখে গিয়েছিলেন। ১৯৯৭ সালে তাঁর বাবা শম্ভু মিত্রের (Shambhu Mitra) মৃত্যুর পরও, একেবারে প্রচারের আলোর বাইরেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়েছিল। একইরকম ভাবে শম্ভু মিত্র এবং তৃপ্তি মিত্রের (Tripti Mitra) কন্যা তাঁর ইচ্ছাপত্রে জানিয়েছিলেন মৃত্যুর পর নিথর শরীরটা প্রদর্শন করতে তাঁর সঙ্কোচ রয়েছে। নাট্য ব্যক্তিত্ব অর্পিতা ঘোষ (Arpita Ghosh) এবং সায়ক চক্রবর্তীকে (Sayak Chakraborty) মানস কন্যা ও মানস পুত্র বলে উল্লেখ করে, শেষ সময়ে তাঁদের পাশে চেয়েছিলেন তৃপ্তি মিত্র। শেষ সময়ে তাঁরা তো ছিলেনই, ছিলেন নাট্য ব্যক্তিত্ব দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ও (Debesh Chatterjee)। শেষকৃত্য় সম্পন্ন হওয়ার পরই, তাঁরা এই মর্মান্তিক খবর প্রকাশ্যে আনেন।
আরও পড়ুন - মমতার পাশে আবার বুদ্ধিজীবীরা, বিজেপির বিরুদ্ধে কী কী বললেন তাঁরা
আরও পড়ুন - নাট্য অ্যাকাডেমি সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মনোজ মিত্র
কলকাতার মঞ্চে একের পর এক মননশীল নাটক উপহার দিয়েছেন শাঁওলি মিত্র। নাথবতি অনাথবত, পুতুলখেলা, একটি রাজনৈতিক হত্যা, হযবরল, কথা অমৃতসমান, লঙ্কাদহন, চণ্ডালী, পাগলা ঘোড়া, গ্যালিলিওর জীবন, যদি আর এক বার - নাটকে তাঁর অভিনয় এখনও সকলের স্মৃতিতে ঊজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। থিয়েটারের পাশাপাশি সিনেমাতেও অভিনয় করেন শাঁওলি। ঋত্বিক ঘটকের 'যুক্তি তক্কো আর গপ্পো' চলচ্চিত্রে বঙ্গবালা চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ২০০৩ সালে বাংলা থিয়েটারে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। ২০১২ সালে অভিনয়ে জীবনব্যাপী অবদানের জন্য তিনি বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারও পেয়েছিলেন। ২০০৯ সালে দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন।
২০০৮-০৯ সালে রাজ্যে বাম সরকারের বিরুদ্ধে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের গণ আন্দোলনের সময়, বাম সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। ডাক দিয়েছিলেন পরিবর্তনের। সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল তাঁর। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাঁকে প্রথমে রবীন্দ্র রচনাবলী দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ২০১২ সালে মহাশ্বেতা দেবী বাংলা অ্যাকাডেমির সভাপতির দায়িত্ব ছাড়ার পর সেই পদে বসেছিলেন শাঁওলি মিত্র। তবে ২০১৮ সালে কাজ করার উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবের কথা উল্লেখ করে এই দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি।
বিস্তারিত আসছে...