বুধবার সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সপ্তাহান্তে কলকাতা সহ উপকূল সংলগ্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে অতিভারী বৃষ্টির সর্তকতা।
বুধবার সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার। আবহাওয়া দফতর (Alipore Weather Office)জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad) আসছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে (Kolkata and South Bengal) পড়বে। তাই ডিসেম্বরের শুরুতেই এদিন বাংলায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। সপ্তাহান্তে কলকাতা সহ উপকূল সংলগ্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে অতিভারী বৃষ্টির সর্তকতা। বুধবার সকালে হালকা শীতের আমেজ শহর কলকাতায়। ১৮ ডিগ্রির নিচে পারদ। বৃহস্পতিবার থেকে ধীরে ধীরে বাড়বে তাপমাত্রা (Teparature) ।
শাহিনের পর এবার ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। সৌদি আরবের দেওয়া এই ঘূর্ণিঝড়ের অর্থ উদার বা মহান। থাইল্যান্ডের নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে বঙ্গোপসাগরে। আবহাওয়া দপ্তরের হিসেব অনুযায়ী এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে জাওয়াদ। দক্ষিণ থাইল্যান্ডের ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ক্রমশ দক্ষিণ আন্দামান সাগরে ঢুকবে। আগামীকাল এটি শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপ রূপে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ দক্ষিণ-পূর্ব পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এ অবস্থান করবে। শক্তি সঞ্চয় করে সেখানেই ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এই গভীর নিম্নচাপ। ঘূর্ণিঝড়ের নাম হবে জাওয়াদ। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এর অভিমুখ হবে উত্তর-পশ্চিম দিকে। শনিবার সকালে এটি উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ অথবা উড়িষ্যা উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা।এর প্রভাবে বাংলার উপকূলে সমুদ্র উত্তাল হবে। শনিবার সকালে সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগ 65 থেকে 80 কিলোমিটার হতে পারে। মৎস্যজীবীদের সতর্কবার্তায় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া নিষেধাজ্ঞা। যারা সমুদ্রের রয়েছেন তাদের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টি এবং উপকূল ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা। শনি ও রবিবার ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের শেষ দিন দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতে কাটবে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের। শুক্রবার আবহাওয়ার পরিবর্তন মেঘলা আকাশ। উপকূলের দুই জেলা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে কিছুটা দক্ষিণ ২৪ পরগনায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। বৃষ্টি বাড়বে শনিবার। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট।শনিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। শনিবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা হাওড়া এবং ঝাড়গ্রামে। সঙ্গে থাকবে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়া।রবিবার বৃষ্টির ব্যাপকতা আরও বাড়বে। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা কলকাতা ঝাড়গ্রাম এবং হাওড়া থেকে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা। রবিবার ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে কলকাতা ঝাড়গ্রাম হাওড়া উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব পশ্চিম মেদিনীপুরে। হুগলি, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান এবং উত্তরবঙ্গের মালদা জেলাতে ও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। এই ছেলে গুলিতে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট থাকবে।
শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার পরিবর্তন কলকাতাতেও। মেঘলা আকাশ সঙ্গে হালকা পূবালী বাতাস বইতে থাকবে। বজ্রগর্ভ মেঘ থেকে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। শনিবার বৃষ্টি হবে কলকাতায়। দু-এক পশলা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইবে কলকাতাতে। রবিবার বৃষ্টি ও ঝড়ের ব্যাপকতা বাড়বে কলকাতায়। ৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা কলকাতা শহরে। হালকা বৃষ্টি চলবে সোমবারেও। এই অসময়ের বৃষ্টিতে বেশকিছু শস্যের ক্ষতি হতে পারে। শুক্রবার এর মধ্যে ধান কাটার ব্যবস্থা করতে পারেন। যারা সরষে ও আলু লাগিয়েছেন জমিতে সেই জমিতে যাতে জল না জমে তার জন্য আগাম ড্রেন কেটে রাখতে পারেন। ঝোড়ো হাওয়া ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ আবহাওয়াবিদদের। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়ার্স। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.৭ ডিগ্রী। স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি উপরে। অপরদিকে, এদিন শহরের বাতাসে জলীয়বাষ্পের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৯২ শতাংশ। সর্বনিম্ন ৪৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।