ইস্তেহার প্রকাশের পর সুব্রত বক্সী বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্লোলিনী কলকাতা গড়ে তুলেছেন। আপনাদের সমর্থন পেলে সেই কাজকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধিরা। আগামীদিনে কলকাতার মানুষ যদি সমর্থন করেন, যেখানে কাজ শেষ করেছে সেখান থেকেই শুরু হবে।'
কলকাতায় পুরভোটের (Kolkata Municipal Corporation Election) আগে হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। ১৯ ডিসেম্বর (19 December) কলকাতা পুরভোট (KMC Election 2021)। ফের কলকাতা পৌরনিগমে বোর্ড গঠন করলে শহরের উন্নয়নের স্বার্থে কী কী করবে তারই তালিকা দিয়ে আজ ইস্তেহার (Manifesto) প্রকাশ করল তৃণমূল (TMC)। শনিবার 'কলকাতার ১০ দিগন্ত' নামে সেই ইস্তেহার প্রকাশ করলেন দলের সভাপতি সুব্রত বক্সী। উপস্থিত ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), সুদীপ মুখোপাধ্যায়। রাস্তায় জল জমে যাওয়া, কলকাতার সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম। তাই সেই বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ইস্তেহারে। পাশাপাশি শহরের অলিতে-গলিতে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর এই ইস্তেহারের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দশ দিগন্ত কলকাতা।’
ইস্তেহার প্রকাশের পর সুব্রত বক্সী বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্লোলিনী কলকাতা গড়ে তুলেছেন। আপনাদের সমর্থন পেলে সেই কাজকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন কলকাতা পুরসভার প্রতিনিধিরা। আগামীদিনে কলকাতার মানুষ যদি সমর্থন করেন, যেখানে কাজ শেষ করেছে সেখান থেকেই শুরু হবে।'
কী কী প্রতিশ্রুতি রয়েছে তৃণমূলের ইস্তেহারে...
এই তালিকায় প্রথমেই রয়েছে নিকাশি ও নর্দমা ব্যবস্থা। যা নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই ভুগতে হয় শহরবাসীকে। সেখানে বলা হয়েছে, বৃষ্টির জেরে অতিরিক্ত জল সমস্যার মোকাবিলা এবং সমাধানের জন্য স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হবে। ২০০টি পাম্প সরবরাহ করার পাশাপাশি পাম্পিং স্টেশন এবং লাইনগুলির মানোন্নয়ন করা হবে। নর্দমাগুলিতে যাতে ব্লকেজ না থাকে, তার জন্য নিয়মিত পরিষ্কার করা হবে। টাইলস ও ফলক দিয়ে উন্মুক্ত নর্দমা ঢেকে রাখা হবে। সেইসঙ্গে রয়েছে জমা জল নর্দমা থেকে খাল পর্যন্ত নিকাশি আদিগঙ্গা সংস্কারের মতো বিষয়।
আরও পড়ুন- বিজেপিকে অনুসরণ করে পুরভোটের ইস্তেহার প্রকাশ করছে তৃণমূল, দাবি দিলীপের
এদিকে নিকাশির পাশাপাশি পানীয় জলের ক্ষেত্রেও জোর দেওয়ার কথা দিয়েছে তৃণমূল। পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে জোড়াবাগান এবং গড়িয়া অঞ্চলে জয় হিন্দ বুস্টার পাম্পিং প্রকল্পের আরও শক্তি বৃদ্ধি করা হবে। এই স্টেশনগুলির ক্ষমতা বাড়িয়ে যাদবপুর এবং টালিগঞ্জে জলের সমস্যা মেটানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
তাছাড়া স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা বলা হয় ঘাসফুল শিবিরের ইস্তেহারে। সমস্ত ওয়ার্ডে স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। নগর পরিষেবায় আরও একটু নজর দিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে আরও উন্নত মানের করে তোলা হবে। ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি তৈরি করা হবে সাবসেন্টার। কলকাতায় ৪টি নতুন নাইট শেল্টার চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই বহু নাইট শেল্টার তৈরি করা হয়েছে। গোটা শহরে মোট আটটি এমন নাইট শেল্টার রয়েছে। সংখ্যা বাড়িয়ে আরও এমন চারটি শেল্টার তৈরি করা হবে। ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ এক একটি শেল্টারে রাত্রিবাস করতে পারবেন।
আরও পড়ুন- শেষ হল পুরভোট মামলার শুনানি, কবে হবে বাকি পুরসভার ভোট
ইস্তেহারে বলা হয়েছে, শহরে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত আলো, সুলভ শৌচালয় এবং পার্কিংয়ের সুবিধা এবং সমস্ত নাগরিক সুযোগসুবিধা দেওয়া হবে। বাজারগুলির মানোন্নয়ন করা হবে। ফ্লাইওভার ও মেট্রোর পিলারগুলির সবুজায়নের প্রসার দেওয়া হবে। বিলুপ্ত লাইটগুলির জায়গায় এলইডি লাইট দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হবে। সমস্ত ওয়ার্ডে সর্বাধিক ৩০ মিটার দূরত্বে রাস্তায় বাতিস্তম্ভ স্থাপন। নারীদের জন্য বিশেষ শৌচালয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
কলকাতার রাস্তায় কোথাও যদি মসৃণতার অভাব থাকে তবে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের পক্ষ থেকে সমস্ত রাস্তা গর্তবিহীন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কারণ রাস্তা খারাপ থাকার জন্য অনেক সময়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন সাধারণ মানুষ। তাই ক্ষমতায় আসার পর এই বিষয়ের উপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া কলকাতায় ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত মাঝে মধ্যেই দেখতে পাওয়া যায়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান বহু মানুষ। তাই এই রোগ নির্ণয়ের জন্য ৩০টি ডেঙ্গু নির্ধারণ কেন্দ্র তৈরি করা হবে শহরে। আর পার্ক, বাজার, ঘাট সংস্কার করে তা পরিমার্জন করা হবে। সেগুলি পরিচ্ছন্ন করার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন পুর প্রতিনিধিরা।
কলকাতা পুরসভার কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যূনতম বেতন, ভালো পরিবেশে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া হবে। আগামী ৫ বছরে বাসিন্দাদের আরও বেশি সুবিধা প্রদানের জন্য কলকাতা পুরসংস্থার পরিষেবাগুলি অনলাইনে পাওয়া সুবিধা করে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।