পরিবার দাবি করেছিল, দমদমের মৃতের সঙ্গে কোনও বিদেশের যোগ নেই। অথচ করোনা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে মুখ্য়মন্ত্রী জানালেন, ইতালি থেকে ফিরেছিলেন দমদমের ৫৭ বছরের করোনা আক্রান্ত। যদিও মুখ্য়মন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বৈঠকে বসেই এর সত্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
দমদমের মৃতের সঙ্গে বিদেশের যোগ, ইতালি থেকে এসেছিল ছেলে-বউমা.
এদিন সর্বদলীয় বৈঠকের কিছুক্ষণের মধ্য়েই মুখ্য়মন্ত্রীর কাছে একটি এসএমএস আসে। তখন মুখ্য়মন্ত্রীকে কিছু বলতে যাচ্ছিলেন বিরোধীরা। হঠাৎই সবার সামনে মুখ্য়মন্ত্রী বলেন,আমার কাছে এই মাত্র খবর এল, সল্টলেকে দমদমের যে ভদ্রলোক ভর্তি ছিলেন, তিনি মারা গেছেন। দমদমের যে পরিবারটা কয়েকদিন আগে ইতালি থেকে ফিরেছিল। ওই পরিবারের যিনি ভর্তি ছিলেন। উনিও ইতালি থেকে ফিরেছিলেন।
ছেলের করোনা বাবা-মায়ের শরীরে, হা হুতাশ করছে সন্তান.
যদিও মুখ্য়মন্ত্রীর বক্তব্য় প্রশ্ন জাগায় বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর মনে। মুখ্য়মন্ত্রীকে তিনি বলেন, দমদমের আক্রান্তের সঙ্গে কোনও বিদেশ যোগ ছিল কিনা তাঁর জানা নেই। অন্য় একটি সূত্র বলছে, সম্প্রতি ওই ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁর ছেলে ও ছেলের বউ। এরা দুজনেই ইতালি থেকে ওই প্রবীণের সঙ্গে ভারতে দেখা করতে আসেন। নিজেই সেই কথা আমরির চিকিৎসকদের জানিয়েছেন করোনায় মৃতের স্ত্রী। এদিন করোনা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে যা শোনা যায় খোদ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মুখে।
করোনা আক্রান্ত 'বাবু'র দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, হাসপাতালে ফল ভুগছে পরিচারিকার পরিবার
জানা গিয়েছে, ৫৫ বছরের দমদমের ওই বাসিন্দার ছেলে আমেরিকায় থাকেন। এরমধ্য়ে বাবার সঙ্গে ছেলের সাক্ষাৎ হয়েছে কিনা তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। আক্রান্ত হওয়ার আগে ছত্তিশগড়ের বিলাসপুরে ঘুরতে গিয়েছিলেন দমদমের করোনা আক্রান্ত। সস্ত্রীক সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের অনুমান, ট্রেন থেকেই ভাইরাস ছড়িয়েছে তাঁর শরীরে। জানা গিয়েছে, আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেসে কলকাতায় ফেরেন আক্রান্ত। ট্রেনেও সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে বলে জানিয়েছিল পরিবারের একাংশ।
সূত্রের খবর, যে ডাক্তার ওই বৃদ্ধকে দেখছিলেন তাঁর কাছে বৃদ্ধের স্ত্রী স্বীকার করেছেন, ইতালি থেকে ফিরছিলেন তাঁদের ছেলে-বউমা। এই খবর জানতে পেরেই ওই হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক হোম কোয়ারানটিনে চলে গিয়েছেন। যে পালমনোলজিস্ট ওই বৃদ্ধকে দেখছিলেন তাঁর প্রথম থেকে বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়েছিল। বৃদ্ধর স্ত্রী'কে কাউন্সিলিং করার পরই বিষয়টি তিনি চিকিৎসককে জানান। নবান্নে মুখ্য়মন্ত্রীর মুখেও সেই এক কথা শোনা যায়।
শোনা যাচ্ছে, জ্বর ও শুকনো কাশি নিয়ে চলতি মাসের ১৬ তারিখে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালেভর্তি হন ওই ব্য়ক্তি। হাসপাতলে তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর ১৯ তারিখ তার রিপোর্ট আসে। সেখানে জানা যায়, তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। সোমবার বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান তিনি। এদিন দুপুর থেকেই অবস্থা সংকটজনক ছিল। তিনি কাজ করতেন ফেয়ার্লি প্লেসে। সেখানকার সব কর্মীদের কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দেওয়া হল। পরিবারের হাতে দেওয়া হবে না মৃত্দেহ। তাঁরাও বর্তমানে চিকিৎসাধীন এম আর বাঙুর হাসপাতালে।