ট্রেনের দরজা থেকে যাত্রীর পড়ে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনার জেরে এবারে নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে মেট্রো রেলে। এবার থেকে মেট্রো রেলের দরজা আটকানোর সময় কোনও যাত্রী জোর করে তা আটকাতে গেলেই এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। অনাদায়ে ছ' মাস পর্যন্ত জেলও হতে পারে যাত্রীদের।
আরও পড়ুন- হাত ঢুকিয়ে মেট্রোর দরজা আটকানো, এবার কি শিক্ষা নেবেন যাত্রীরা
শনিবার সন্ধ্যায় পার্ক স্ট্রিট স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার সময় মেট্রোর দরজাতেই হাত আটকে গিয়েছিল সজলবাবুর। সেই অবস্থাতেই ট্রেন চলতে শুরু করে। দরজায় ঝুলতে থাকা সজলবাবু সুড়ঙ্গের মধ্যে পড়ে যান। থার্ড রেলে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মেট্রো রেলের ইতিহাসে বেনজির এই দুর্ঘটনার পরেই যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে যায়।
আরও পড়ুন-শুরু থেকেই বিভ্রাট, শনিবারের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় কি ভিলেন মেট্রোর নতুন রেক
মেট্রোর গাফিলতি থাকলেও এই ধরনের দুর্ঘটনার জন্য যে যাত্রীদের একাংশের তাড়াহুড়োও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ অনেক যাত্রী ট্রেনের ওঠার সময় শেষ মুহূর্তে শরীরের কোনও অংশ বা ব্যাগ ঢুকিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করেন। যার ফলে ব্যাহত হয় পরিষেবা। এতদিন এইভাবে দরজা খোলার চেষ্টা করলে কোনও শাস্তির নিদান ছিল না। শুধু আরপিএফ কর্মীরা সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে বাধা দিতেন বা সতর্ক করতেন।
কিন্তু গত শনিবারের ঘটনার পরে যাত্রীদের এই প্রবণতা আটকাতে কড়া হচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কারণ মেট্রো কর্তাদের অনেকেরেই ধারণা, সজলবাবুও কোনওভাবে হাতের আঙুল ঢুকিয়ে বন্ধ হওয়া দরজা খোলার চেষ্টা করেছিলেন। যা থেকেই বিপত্তির সূত্রপাত।
রেলের আইনকে হাতিয়ার করেই এই নয়া জরিমানা এবং শাস্তির নিয়ম চালু করছে মেট্রো রেল। জোর করে দরজা খোলার চেষ্টা করতে গিয়ে কোনও যাত্রী ধরা পড়লে তাঁর থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায় করা হবে। অথবা ছ' মাস পর্যন্ত জেলও হতে পারে। ধৃত যাত্রীরা অপরাধ মানতে না চাইলে স্টেশন মাস্টারের কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁদের সিসিটিভি ফুটেজও দেখানো হবে। এই মর্মে বিজ্ঞাপনও দিচ্ছে মেট্রো রেল।
এ দিকে সজল কাঞ্জিলালের মৃত্যুর ঘটনায় এবার কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চাইলেন তদন্তের দায়িত্বে থাকা রেলের সেফটি কমিশনার। সেই মতো যে রেকে দুর্ঘটনা ঘটেছিল তার দরজার সেন্সর ঠিকমতো কাজ করেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে এ দিনই নোয়াপাড়া কারশেডে যায় ফরেন্সিক দল।