'বাংলার মিডিয়াই বাংলাকে হেনস্থা করছে', সোমবার মিলন মেলা প্রাঙ্গনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের রোষের মুখে সংবাদমাধ্যম। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের মিডিয়া কোনও ঘটনা ঘটলেও তদন্ত না হতেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়।
'বাংলার মিডিয়াই বাংলাকে হেনস্থা করছে', সোমবার মিলন মেলা প্রাঙ্গনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের রোষের মুখে সংবাদমাধ্যম। উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে তিন বছরের অপেক্ষার পর আবারও নতুন রূপে খুলে গেল মিলন মেলা প্রাঙ্গন। যার নতুন নাম হল বিশ্ব বাংলা মিলন মেলা প্রাঙ্গন। একসঙ্গে ৩ লক্ষ মানুষ এবার এই প্রাঙ্গনের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারবেন।আর মিলন মেলার এই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েই সংবাদ মাধ্যমের উপর তাঁর রাগ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের মিডিয়া কোনও ঘটনা ঘটলেও তদন্ত না হতেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, 'খবরের চ্যানেলগুলি আর দেখবেন না।'
এর আগেও বহুবার সংবাদ মাধ্যমের দিকে আঙুল তুলতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। বগটুইকাণ্ডের সময় সংবাদমাধ্যমের উপর ক্ষোভ উগরাতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, এখানে মিডিয়াগুলি কোনও ঘটনা ঘটলে, তদন্ত না হতেই ওই ঘটনাকে নিয়ে মতামত শুরু করে দেন। বাংলার পত্রিকা ছাড়া, কর্ণাটক ও দিল্লি থেকে আসা সংবাদমাধ্যমগুলি বিজেপির টাকায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়।
আরও পড়ুন, 'হাঁসখালিতে ছেলেটির সঙ্গে নাকি মেয়েটির লাভ অ্যাফেয়ার ছিল', বললেন মমতা
মমচার আরও অভিযোগ,' বাংলার মিডিয়াই বাংলাকে হেনস্থা করেছে। সঠিক খবর দেখানে হচ্ছে না। বাংলা দেশের মধ্যে সবার আগে, কিন্তু তা নিয়ে প্রচার হয় না। কোথাও একটা চকলেট বোম পড়লেই তাতে তৃণমূল জড়িতে আছে বলে প্রচার শুরু হয়ে যায়। আরশোলা বের হলেও এখানে খবর। বাংলার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন না কেন, প্রশ্ন ছোড়েন মমতা। এরপরে তিনি আরও বলেন, আগুন লাগালে সবার ঘরে লাগে, হঁশিয়ারি দিতে শোনা যায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে।
উল্লেখ্য, এদিন হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডেও সেই মিডিয়াকেই দুষলেন মমতা। ধর্ষণ হয়েছে নাকি অন্য কিছু বোঝারই উপায় নেই, দেহটাই তো পুড়িয়ে দিয়েছে। আর অভিযুক্ত ছেলে যদি কারও সম্পর্কে জড়িয়ে থাকে, সেখানে ছেলের বাবা তৃণমূল করে কিনা, তা টানবার কী দরকার বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে ফের মনে করিয়ে দেন যে, তদন্ত না হতেই ওই ঘটনাকে নিয়ে মতামত শুরু করে দেয় কেন বাংলার মিডিয়া।
প্রসঙ্গত, পুলিশ সূত্রে খবর, ৪ এপ্রিল রাতে জন্মদিনের পার্টিতে ডাকা হয়েছিল ওই নাবালিকাকে। এরপর জন্মদিনে ডেকে তাকে মদ্যপান করায় ব্রজগোপাল। এরপরেই সে এবং তার বন্ধুরা মিলে গণধর্ষণ করে। যৌন নির্যাতন এতটাই হয়েছিল যে, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গ থেকে ব্যাপক রক্তপাত ঘটে। রক্তে ভিজে যায় অন্তর্বাস। রাতে এক মহিলাকে দিয়ে নাবালিকা প্রেমিকাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় সে। অভিযোগ এরপরেই অসুস্থ হয়ে পড়তে শুরু করে ওই নাবালিকা।
আরও পড়ুন, গণধর্ষণকাণ্ডে হাঁসখালিতে বিজেপির ডাকে চলছে বনধ, আজ নির্যাতিতার বাড়িতে যাবে আজ বাম-বিজেপি
এদিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দেয় ব্রজগোপাল। এরপরেই অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার।এদিকে নৃশংসঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। অপরাধ ঢাকতে দেহ সৎকারে বাধ্য করে বজ্রগোপাল। তবে এই ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনে বগটুই, ঝালদার মতোই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবে হাইকোর্ট জানার অপেক্ষায় রয়েছে সবাই। কারণ ইতিমধ্য়েই জোড়া জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছে হাইকোর্টে। শুধুই রাত পেরোনোর অপেক্ষা। মঙ্গলেই শুনানি কলকাতা হাইকোর্টে।