জনসেবার ফসল যে আদপে ভোট বক্সে দেখতে পাওয়া সেই অর্থে যাচ্ছে না তা বামেদের ভোট ক্ষয় থেকেই পরিষ্কার। কিন্তু এত করেও কেন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বাম শিবির? এই প্রশ্ন বর্তমানে বারেবারে ফিরে ফিরে আসছে বাংলার রাজনীতির ময়দানে।
বিধানসভা ভোটে(Assembly vote) খাতা খুলতে না পারলেও পুরভোটে কলকাতার ময়দানে বামেদের ভাগ্যে জুটেছে ২টি আসন। এমনকী ভোট শতাংশের হার বেড়েছে বেশ খানিকটা। তাতেই যেন গোটা রাজ্যজুড়ে নতুন করে অক্সিজেন পাচ্ছে বাম শিবির। এদিকে রাজ্যে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ(second wave of covid) চলাকালীন সময়ে করোনা যুদ্ধে বড় ছাপ রাখে রেড ভলেন্টিয়াররা(Red Volunteers)। শহর হোক বা মফঃস্বল, করোনা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছুটে যায় বাম তরুণ-তরুণীর দল। প্রশাংসাও কুড়ায় সমাজের একটা বড় অংশের মানুষের থেকে। এদিকে এই রেড ভলেন্টিয়ারদের সিংহ ভাগই এসএফআই-ডিওয়াইএফআই কর্মী(SFI-DYFI Workers) বলে পরিচিত ছিল বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু তাদের জনসেবার ফসল যে আদপে ভোট বক্সে দেখতে পাওয়া সেই অর্থে যাচ্ছে না তা বামেদের ভোট ক্ষয় থেকেই পরিষ্কার। কিন্তু এত করেও কেন ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না বাম শিবির? এই প্রশ্ন বর্তমানে বারেবারে ফিরে ফিরে আসছে বাংলার রাজনীতির ময়দানে।
যদিও বাম নেতৃত্বের(Left leadership) দাবি, ভোটের ফলের আশায় তারা কখনওই মানুষের কাজে ঝাপিয়ে পড়েনি। যদিও ভোট পর্ব মিটতেই রেড ভলেন্টিয়ারদের হতাশায় খানিক উল্টো ছবিই ধরে পড়ে। অনেক শীর্ষ স্থানীয় যুব নেতৃত্ব প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগড়ে দেন। এমনকী অনেককেই এও বলতে শোনা যায় এত করেও যখন মানুষের মন জেতা যাচ্ছে না, তখন করেই বা লাভ কী। যা নিয়েও বিস্তর সমালোচনা হয় বিভিন্ন মহলে।
আরও পড়ুন-ভেঙেছে অতীতের সব রেকর্ড, বারেবারেই বঙ্গ রাজনীতির চর্চায় রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত
এদিকে বাম বিরোধীদের একটা বড় অংশকে আবার সিপিএম-র(CPIM) মতো সংগঠনকে এনজিও বলেও কটাক্ষ করতে দেখা যায়। যা নিয়ে তরজা জমে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে। এদিকে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য কলকাতায় ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’ বাহিনী প্রথম তৈরি করে যুব সিপিএম। কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকায় দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয় ৮৩ জন তরুণ-তরুণীর উপর। সেই প্রথম পথচলা শুরু। দিন যত গড়িয়েছে রেড ভলেন্টিয়ারদের পরিচিতিও ততই বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুন-চাই স্থানীয় প্রার্থী, বিধাননগরে তাপস অনুগামীদের বিক্ষোভে বাড়ছে চাপানউতর
এদিকে এবারের কলকাতা পুরভোটে বামফ্রন্টের প্রার্থি তালিকায় ঠাঁই পেতে দেখা যায় ৪০ জন এমন রেড ভলান্টিয়ারদের। তরুণ প্রজন্মের এই কর্মীদের পুরভোটে টিকিট দিয়ে ‘সাদা চুলের’ বামেরা যুব সমাজকে নতুন করে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলেই মত করছে রাজনৈতিক মহল। বাম রাজনীতির প্রতি যুব সমাজের আগ্রহ বাড়াতেই একঝাঁক তরুণ মুখকে তুলে আনা হয়। একই প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিল বিধানসভা ভোটে। তবে তরুণ-তুর্কিদের মাঠে নামিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি বামেরা। গো হারা হেরে গিয়েছেন সৃজন ভট্টাচার্য, প্রতীকুর রহমান, মীনাক্ষি মুখার্জির মতো পরিচিত যুব মুখেরা। একই চিত্র দেখা গিয়েছে পুরভোটের ময়দানেও। আর এখানেই হতাশার চাদড় ক্রমেই গ্রাস করথে বাংলার বাম শিবিরে। এমতাবস্থায় সংসদীয় রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে বামেদের কাজ করা উচিত কিনা সেই প্রশ্নই যেন নতুন করে মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।