সংক্ষিপ্ত
অতীতেও পশ্চিমবঙ্গে, অনেক রাজ্যপাল এসেছেন এবং তাঁরাও নানা রকমভাবে শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতে গিয়েছেন। তবে ধনকড়ের সঙ্গে মমতার সংঘাতে বারাবারেই জাতীয় রাজনীতিরও মূল চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মসনদে বসার পর থেকেই মমতার সরকারকে বিশেষ ভালো চোখে দেখতে পারেনি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়(Governor Jagdeep Dhankar)। অন্যদিকে রাজ্যপালের কাজে বরাবরই অসন্তোষ প্রকাশ করে এসেছে ঘাসফুল শিবির(Trinamool Congress)। ২০১৯ সালের লোকসভা হোক বা বর্তমান সময়, প্রতিক্ষেত্রেই বারেবারে মাথাচাড়া দিয়েছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত(State-Governor conflict)। ২০১৯ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাওয়ের মাঝখান থেকে বাবুল সুপ্রিয়কে(Babul Supriya) উদ্ধার করে আনা, শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক ডাকা, নাম না করেও বার বার এ রাজ্যের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সীমা লঙ্ঘন না করার কথা মনে করিয়ে দেওয়া, জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ড বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের পুলিশের(State police) সমালোচনার মাধ্যমে সেই সময মসনদে বসার ৩ মাসের মধ্যে নিজের স্বরূপ প্রকাশ করতে থাকেন রাজ্যপাল(Governor)। বর্তমানে বালিকে হাওড়া পুরসভা(Howrah Municipality) থেকে বিচ্ছিন্নকরণ নিয়েও সেই সংঘাতের বাতাবরণ জারি রয়েছে।
সহজ কথায় জগদীপ ধনখড় যেন বারেবারেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর কার্যকালে খুব একটা স্বস্তিতে থাকবেন না পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান শাসকরা। প্রসঙ্গত, গত ১৬ নভেম্বর বিধানসভায় বিএসএফ-এর সীমা ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রস্তাব আনে রাজ্য সরকার। নিয়েও প্রকাশ্যে সংঘাত শুরু হয় রাজ্য-রাজ্যপালের মধ্যে। এই সিদ্ধান্তকে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উপর আঘাত বলেও দাবি করে বিধানসভায় প্রস্তাব আনে শাসক দল। এরপরেই, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় প্রশাসনিক পথে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। যা নিয়েও বিস্তপর রাজনৈতিক চাপানউতর তৈরি হয়। এমনকী, এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে চিঠিও লেখেন তিনি৷
তবে অতীতেও পশ্চিমবঙ্গে, অনেক রাজ্যপাল এসেছেন এবং তাঁরাও নানা রকমভাবে শাসক দলের সঙ্গে সংঘাতে গিয়েছেন। কিন্তু এখন যিনি রাজ্যপাল, তিনি প্রকাশ্যে টুইটের পর টুইট করে, সাংবাদিক বৈঠক করে, এমনকী, কখনো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়(Jadavpur University), কখনো বিশ্বভারতীতে(Viswabharati University) গিয়ে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। এই ঘটনা নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। সম্প্রতি হাওড়া পুরসভা (Howrah Municipality) থেকে বালিকে (Bally) আলাদা করার বিলে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Governor) ইচ্ছাকৃত ভাবে সই করেছেন বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। যা নিয়েও চলতে থাকে বিস্তর টানাপোড়েন। যা নিয়েও তৈরি হয় সংঘাতের আবহ।
আরও পড়ুন-গ্রুপ ছাড়তেই শান্তনু-সুব্রতকে কাছে টানার চেষ্টা মমতাবালার, পাল্টা কটাক্ষ সুব্রতর
এদিকে সম্প্রতি আবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে। সূত্রের খবর প্রথম তারিখটি ছিল ২০ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় তারিখটি ছিল ২৩ ডিসেম্বর। এই দুদিন রাজ্যের ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্যকে ডেকে পাঠান আচার্যতথা রাজ্যপাল। কিন্তু, তাঁর আহ্বানে উপাচার্যরা সাড়া দিচ্ছেন না বলে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন জগদীপ ধনকড়। শাসক দলের চাপে পড়েই তারা এই কাজ করছেন বলে দাবি রাজ্যপালের। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি দিনের পর দিন ফাইল ধরে রাখে, বিন্দুমাত্র সহযোগিতার মনোভাব না দেখালে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতেই হবে। আর সেই কারণেই রাজ্যের বিশ্ব বিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার, এমনটাই জানান ব্রাত্য।