শুক্রবার সকালে ফের করুণায়ীতে জমায়েত করেন এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি বাঁধে পুলিশের। প্রথম দফায় পুলিশ জানিয়েছে, ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবার এই ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগলেন সুজন চক্রবর্তী।
করুণাময়ী ইস্যুতে এবার সরব হলেন সুজন চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে বলপূর্বক তুলে দেওয়া হয় ২০১৪ টেট প্রার্থীদের আন্দোলন। ১৫ মিনিটের মধ্যেই ৮৪ ঘন্টার আন্দোলনকে তুলে দেয় পুলিশ। টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় বিক্ষোভকারীদের। তবু ক্ষমতার সামনে মাথা নত করেনি আন্দোলনকারীরা। একদিকে যেমন জোড়ালো হতে থাকে আন্দোলন অন্যদিকে জমায়েত তুলতে বাড়তে থাকে পুলিশের তৎপরতাও। শুক্রবার সকালে ফের করুণায়ীতে জমায়েত করেন এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গেও ধস্তাধস্তি বাঁধে পুলিশের। প্রথম দফায় পুলিশ জানিয়েছে, ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এবার এই ঘটনার প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগলেন সুজন চক্রবর্তী।
শুক্রবার টুইটারে একটি পোস্ট করে রাজ্য সরকারকে 'হিংস্র মমতা প্রশাসন' বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "রাজ্য জুড়ে আন্দোলন জারি থাকছে।" বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা প্রসঙ্গে, তিনি বলেন, "টেট সফল চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীদের উপর, মাঝরাতে পুলিশের বর্বরতা। মহিলাদেরও নিস্তার নেই।" অন্যদিকে বৃহস্পতিবা রাতের ঘটনায় একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পর মুখ্যমন্ত্রীকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে মুখ খুলতে চাননি মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট জবাব "আমি এসব নিয়ে কিছু বলব না। যা বলার ব্রাত্য বলবে। কারণ, আমি তো জানি না ডিটেলস।"
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে আবারও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের সমর্থনে এগিয়ে আসে বাম ছাত্র-যুবরাও। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে বলপূর্বক আন্দোলনরত চাকরীপ্রার্থীদের টেনে হিঁচড়ে জোড় করে তোলার প্রতিবাদে সল্টলেক সিটি সেন্টার থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেয় এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই নেতা-কর্মীরা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, এসএফআই-এর রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান। কিন্তু মাঝপথেই পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় মিছিল। বিধাননগরের কাছে রাস্তার মাঝেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে কার্যত ধস্তাধস্তি বেঁধে যায় মীনাক্ষীদের। একের পর এক আন্দোলনকারীকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ।
পুলিশি ধরপাকড়ের জেরে ফের একবার নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাফ নামানো হয়। মোতায়ন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনীও। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে বিকাশ ভবন চত্ত্বর। পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ গোটা এলাকা।
শুক্রবার প্রকাশ্যে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "বাংলার আন্দোলনকে ভয় পাচ্ছে পুলিশ।" পাশাপাশি তাঁদেরকে অন্যায়ভাবে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়েছে বলেও অভিযোগ জানান তিনি। মীনাক্ষী বলেন, "আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করিনি। আমরা যেখানে বিক্ষোভ করেছি, সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েনি। আমাদের কর্মীদের বলপ্রয়োগ করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ওরা ভুল করছে।" আন্দোলন তুলতে পুলিশি তৎপরতার মাঝেও অনড় মীনাক্ষী প্রতীকরা।
আরও পড়ুন-
২০১৪ বনাম ২০১৭, টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে পালটা আন্দোলনে নামলেন টেট চাকরিপ্রার্থীরাই
ভারতের সীমানায় ‘বিচিত্র’ পরিস্থিতি, মোকাবিলা করতেই ‘অগ্নিপথ’ স্কিম চালু করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার?
‘রানিকে খান খান করে ছাড়ব’, শাসকদলকে কড়া হুঁশিয়ারি সুকান্ত মজুমদারের, প্রয়োজনে অস্ত্র তুলে নেওয়ার বার্তাও