"মুখ্যমন্ত্রী কি ট্রান্স ফোবিক?" বৈষম্যের জবাব চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্না শহরের রূপান্তরকামীদের

গত পাঁচ বছর ধরে এই পুজো হলেও ডাকা হয়নি কার্নিভালে? এই বৈষম্য কেন? প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নার ডাক রূপান্তর কামী সম্প্রদায়ের। ১২ অক্টোবর বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসবেন তাঁরা। উল্লেখ্য এই দিনই ভবানীপুরে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছে তৃণমূল। 
 

Ishanee Dhar | Published : Oct 12, 2022 10:50 AM IST / Updated: Oct 12 2022, 04:23 PM IST

দুর্গাপুজোয় আলোয় সেজে উঠেছিল গোটা শহর। কিন্তু এই আলোর রোশনাই পৌঁছল না ওঁদের ঘরে। নিভৃতেই মা দুর্গার আরাধনা করলেন শররের রূপান্তরকামীরা। রাজ্যের প্রায় সকল পুজো উদ্যোক্তাদের ঘরে সরকারি অনুদানের টাকা পৌঁছলেও বাদ পরেছে ওঁদের পুজো। ডাক পাননি কার্নিভালেও। গত পাঁচ বছর ধরে পুজো করা সত্ত্বেও কেন 'হক'-এর টাকা পেলেন না তাঁরা? প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ প্রতিবাদ কর্মসূচির পরিকল্পনা শহরের রূপান্তরকামীদের একাংশের। 

এই বছরই ইউনেস্কো থেকে হেরিটেজ তকমা পেয়েছে বাংলার দূর্গাপুজা। যা পুজোর জৌলুসকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। রাজ্যের ৪৩ হাজার পুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। বিদায় বেলায় বর্ণাঢ্য কার্নিভালে সেজে উঠেছিল শহর। কিন্তু এই সরকারি সাহায্যের ছিটেফোটাও পায়নি শহরের রূপান্তরকামীদের আয়োজিত পুজো। গত পাঁচ বছর ধরে এই পুজো হলেও ডাকা হয়নি কার্নিভালে? এই বৈষম্য কেন? প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্নার ডাক রূপান্তর কামী সম্প্রদায়ের। ১২ অক্টোবর বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসবেন তাঁরা। উল্লেখ্য এই দিনই ভবানীপুরে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করেছে তৃণমূল। 


এই প্রসঙ্গে এশিয়া নেট নিউজ বাংলার তরফ থেকে  রূপান্তরকামী সমাজকর্মী রঞ্জিতা দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্পষ্ট জানান সঙ্গে এই বৈষম্যের কারণ জানতেই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন তাঁরা। রঞ্জিতা দাস জানান, "মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট যেখানে আমাদের মতো পিছিয়ে পড়া মানুষদের সামাজিকরণের আবেদন জানিয়েছে, এমনকি ন্যাশানাল হিউম্যান রাইটস কমিশনও বলেছে যে ভারতের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টি আমরা, তাহলে আমাদের প্রাপ্য টাকা থেকে কেন আমাদের বঞ্চিত করছে সরকার? আমাদেরই রোজগারের জন্য রাস্তায় দাঁড়াতে হয়। আমাদেরই ভিক্ষা চাইতে হয়। অথচ আমাদের হকের টাকার আমাদের দেওয়াব হচ্ছে না।" পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন "মুখ্যমন্ত্রী কি ট্রান্স ফোবিক?" তিনি এও বলেন "মুখ্যমন্ত্রী যদি সকল রাজ্যবাসীর বাবা মা হন, তাহলে কি তিনি আমাদের বাবা মা নন? তিনি কি বুঝিয়ে দিলেন যে তাঁর আমার সম্প্রদায়ের প্রতি ফোবিয়া আছে? কারণ না আমাদের কার্নিভালে ডাকা হয়, না টাকা দেওয়া হয়।" পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে রূপান্তরকামীদের উন্নয়নের বিষয়ও সরব হন তিনি। উল্লেখ্য, রঞ্জিতা দাস নিজেও দীর্ঘদিন ট্রান্সজেন্ডার বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সেই প্রসঙ্গেও ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি বলেন, "ওখানে কথা বলা মাত্রই আমাকে সরকার বিরোধী হিসেবে দেগে দেওয়া হত।" 

দুর্গাপুজোয় রাজ্যজুড়ে এত আনন্দ এত আয়োজনের থেকে কেন বঞ্চিত করা হল তাঁদের? এই বৈষম্যের বিরোধিতায় সরব হয় মুখ্যমন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতি একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন এই সমাজকর্মী। যাঁদের কোটি কোটি টাকার প্রজেক্ট তাঁদেরকে ৬০ হাজার টাকা করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী 'তেলা মাথায় তেল দিলেন' বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এমনকী বারবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও কেন কোনও উত্তর আসেনি বলেও জানিয়েছেন তিনি।  

এই বৈষম্যের কারণ কি কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "আমারা দলগতভাবে কোনও প্রতিনিধিত্ব চাইনি, তবে বিজেপি, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পুজোয় সামিল হতে চেয়ে বেশ কিছু ফোন এসেছিল। কিন্তু তৃণমূলের পক্ষ থেকে কোনও যোগাযোগ করা হয়নি।" পাশাপাশি তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে হোম চালান বলে কি তাঁদের টাকা দেওয়া হল না, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। অন্যদিকে নিজেদের লড়াইতে যে কোনও ভাবেই রাজনীতির রং চান না তাঁরা সে বিষয়ও স্পষ্ট জানালেন, রঞ্জিতা। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য,"সুপ্রিম কোর্টে আমাদের হয়ে কেউ দাঁড়ায়নি, তাঁরা তখন আমাদের আনন্যাচারাল ভাবত। আমরা খেটে খাওয়া মানুষরা নিজেদের লড়াই নিজেরা লড়েছি। তাহলে আজকে যখন সবাই টাকা পেল, তখন আমাদের সঙ্গে এই বৈষম্য কেন?" নিজেদের প্রশ্নের উত্তর চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসবেন রূপ্যান্তরকামীরা। 

আরও পড়ুন - 

এবার ইডির জালে মানিক ভট্টাচার্য, রাতভর জেরার পর গ্রেফতার প্রাথমিকের প্রাক্তন সভাপতি

বালাসাহেব ঠাকরের প্রকৃত উত্তরাধিকারী কে? উত্তর না মেলায় দুই গোষ্ঠীকেই অন্তবর্তী চিহ্ন আর নাম কমিশনের

জঙ্গিদের গুলিতে গুরুতর আহত 'জুম', জানুন ভারতীয় সেনা বাহিনীর সারমের লড়াইয়ের কথা

Read more Articles on
Share this article
click me!