স্যানিটাইজেশন শুরু হয়েছিল আগেই। রাজ্য়ে করোনা আতঙ্কের জেরে এবার নবান্নে ভিআইপি প্রবেশপথে শুরু হল থার্মাল চেকিং। মন্ত্রী থেকে আমলা সবাইকেই পরীক্ষা করা হচ্ছে শারীরিক টেম্পারেচার।
আপাতত স্বস্তি, করোনা আক্রান্তের বাবা-মায়ের রিপোর্ট নেগেটিভ.
দুপুরেই এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে আগে স্বাস্থ্য় পরীক্ষা করান। নিজে থেকেই আলাদা থাকুন। দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করবেন না। ছেলের বিষয়ে রাজ্য়ের আমলার অবিবেচকের মতো আচরণ প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য় করেছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী। তবে নাম করে কাউকে কিছু বলেননি তিনি।
হাসপাতালে না গিয়ে ছেলে মলে, আমলার শাস্তির দাবি নেটিজেনদের
জানা গিয়েছে, বিদেশ থেকে ফিরে নিষেধ অবজ্ঞা করেই নবান্ন-শপিংমল-ক্লাবে ঘুরে বেড়ান করোনায় আক্রান্ত তরুণ। রবিবার লন্ডন ফেরার পর গত মঙ্গলবার, ১৭ তারিখ, বেলেঘাটা আইডি-তে ধরা পড়ে ওই তরুণের শরীরে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে। তারপরই ওই যুবককে বেলেঘাটা আইডি-র আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে যাদের সংস্পর্শে এসেছেন তাদেরকেও কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকেরা৷ সংক্রামিত তরুণের মা,বাবা এবং গাড়িচালককে আইডি হাসপাতালের কোয়েরান্টিনে রাখা হয়েছে৷
পরিবারে প্রভাবশালী দেখিয়ে সংক্রমণ ছড়াবেন না,রাজ্য়ের আমলাকে সতর্ক করলেন মমতা
বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ওই তরুণের অবস্থা এখন অনেকটাই ঠিকঠাক। অপরদিকে, পরিবারের লোকেদের লালরসের নমুনা সংগ্রহ করে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের তরফে পুনে নাইসেডে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। জানা গিয়েছে মা-বাবার সঙ্গে দুই ড্রাইভারেরও রক্তে করোনার ভাইরাস পাওয়া যায়নি। কিন্তু অপরদিকে রীতিমত ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ওই তরুণের আবাসনের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, লন্ডন থেকে ফেরার পর চৃড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো আচরণ করেছেন ওই তরুণ ও তাঁর পরিবার।
জানা গিয়েছে, রবিবার এয়ারপোর্টে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের পর তাঁকে বেলেঘাটা আইডি-তে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও বিমানবন্দর থেকে সোজা মায়ের সঙ্গে বাড়ি চলে আসেন। তারপর সোমবার, ১৬ তারিখ, সকালে আবাসনে বেরিয়ে সবার সঙ্গে কথা বলেন। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন। সেখান থেকে বাড়ির লোকের সঙ্গে এম আর বাঙুর হাসপাতালে যান। অভিযোগ, মায়ের প্রভাব খাটিয়ে জোর করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসক দেখান তিনি। সেখান থেকেও তাঁকেও বেলেঘাটা আইডি-তে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই তরুণ নিষেধ অমান্য় করে জানায়, সে ভর্তি কোনও হাসাপাতালে ভর্তি হবে না। এরপরই মায়ের সঙ্গে নবান্নে আসেন ওই তরুণ। নবান্নে ঘোরাফেরা করেন। এমনকী তারপর মায়ের সঙ্গে মহাকরণেও যায় ওই তরুণ। তাই এই মুহূর্তে সেই সব জায়গাগুলিই খতিয়ে দেখছে রাজ্য় স্বাস্থ্য় দফতর।
যা নিয়ে প্রকাশ্য়েই নাম না করে মন্তব্য় করেন মুখ্য়মন্ত্রী। বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভিআইপি থেকে এলআইপি সকলকেই সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে যেতে হবে কোয়ারেন্টাইনে। প্রয়োজনে বাড়িতেও নজরবন্দি হয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু অসাবধানতা কিছুতেই তিনি বরদান্ত করবেন না বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ লুকিয়ে যাওয়া চলবে না। সংক্রমণ রুখতে বিদেশ থেকে ফেরা নাগরিকদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে।