সব জল্পনার অবসান। মমতার বাড়ির কালীপুজোয় পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। চোখ ঢাকা ছিল কালো চশমাতে।
আমেরিকা থেকে চোক অপারেশন করে সোমবারই দেশে ফিরেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শারীরিক অবস্থার কারণে তাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সেইসব উপেক্ষা করেই এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়ির কালীপুজোতে পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। চোখে অবশ্যই ছিল কালো চশমা।
চোখের জটিল অপারেশনের জন্য ২৫ দিন আগে আমেরিকা গিয়েছিলেন অভিষেক। ঘনিষ্ট মহলে তিনি জানিয়েছেন কালীপুজোয় তিনি কলকাতায় থাকতে চান। মাত্র ১২ দিন আগে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তারপর থেকেই চিকিৎসকরা তাঁকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছিল। তীব্র ধুলো , আলো আর তাপ এড়ানোর জন্য কালো চশমা দেওয়া হয়েছিল। যাইহোক সোমবার সকালে কলকাতা ফিরেই সন্ধ্যেবেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজোতে উপস্থিত হন। মমতার আশীর্বাদও গ্রহণ করেন।
প্রতিবারের মত এবারও নিজের বাড়ির কালীপুজোয় ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দীর্ঘ দিন ধরেই নিজের বাড়িতে কালীপুজো করেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেও তার অন্যথা হয়নি। এই বিশেষ দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের হাতেই কালীমায়ের জন্য ভোগ রান্না করেন। উপোস করেই তিনি পুজোর আয়োজন করেন আর পুজো দেন।
কোভিড মহামারির কারণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজো ধুমধাম অনেকটাই কম করা হয়েছিল। অথিতির সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। শুধুমাত্র প্রথা মেনে দেবীর আরাধানা করা হত। কিন্তু চলতি বছর মাহামারির প্রকোপ অনেকটাই কম। তাই এবার আগের মতই ধুমধামের সঙ্গেই কালী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। তবে এবার ঘূর্ণিঝড় সিতরাং নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে রাজ্য প্রশাসন। কারণ হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী এই ঝড় দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূলবর্তী এলাকায় ছুঁয়ে বাংলাদেশে যাবে। কিন্তু ঝোড়ো হাওয়া আর প্রবল বৃষ্টি হবে বলেও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। সেই কারণে পুজোর ব্য়স্ততার মধ্যেই তিনি বারবার খোঁজ নিচ্ছে রাজ্যের দুর্যোগ পরিস্থিতি। যোগাযোগ রাখছেন উচ্চপদস্থ আধিকরিকদের সঙ্গে।
বাড়ির কালীপুজোয় ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারই মধ্যে খোঁজ নিচ্ছেন ঘূর্ণিঝড় সিতরাং-এর। নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতা জানিয়েছেন দুর্যোগ মোকাবিলায় সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুর্যোগপূর্ণ এলাকার মানুষকেও সাবধানে থাকতে বলেন। তিনি জানিয়েছেন প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিতরাং বাংলাদেশে ল্যান্ডফল করবে। তাই ভয়ের তেমন কোনও কারণ নেই। তারপরই মমতা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে নিশ্চয়তার কিছুই নেই। যেকোনও সময় যেকোনও ঘটনা ঘটতে পারে। আর সেই কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ল্যান্ডফলের সময় সতর্ক থাকতে হবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানিয়েছেন হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলায় ঝড়বৃষ্টি হবে। আর যতক্ষণ পর্যন্ত সাইক্লোন চলে না যাচ্ছে ততক্ষণ সুন্দরবন ও উপকূলবর্তী এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জারি থাকবে। প্রশাসন যা ব্যবস্থা নিয়েছে তা মেনে নিতে হবে। তাই সাবধানেই থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
বাড়ির কালীপুজোয় আটপৌরে শাড়ি পরে ভোগ রান্নায় ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মধ্যরাতে বাংলার উপকূল পার হবে সিতরাং,রীতিমত গতি বাড়িয়ে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়