হাঁসখালি নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। রাজ্যে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ধারাবাহিক ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
হাঁসখালি গণধর্ষণ কাণ্ডকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। বিরোধীদের নিশানায় শাসক দল তৃণমূল এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই এবার এই ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। রাজ্যে মহিলাদের উপর নির্যাতনের ধারাবাহিক ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট আয়োজিত দক্ষিণেশ্বরের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সৌগত বলেন, "মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় সকলেই চিন্তিত। কোনও জায়গায় কোনও ঘটনা ঘটলে, তৎক্ষণাৎ তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে একদম জিরো টলারেন্স করতে হবে। আমি আশা করব পুলিশ-প্রশাসন এ দিকে নজর রাখবে। যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সেখানে নারী নির্যাতনের একটি ঘটনা ঘটলেও তা লজ্জার।"
আরও পড়ুন- হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে কেস ডাইরি হাতে নিল সিবিআই, আজই নির্যাতিতার বাড়িতে প্রতিনিধি দল
দেগঙ্গা, মাটিয়া, ইংরেজবাজার, বাঁশদ্রোণী, বোলপুর, হাঁসখালি-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নারী নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে। হাঁসখালির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্য পুলিশ। যদিও পরে এই মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। তদন্তেও নেমে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে ঘটনার দায় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে। সেই প্রেক্ষিতেই এ দিন সৌগতবাবুর মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
সৌগতর মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, "সৌগতবাবু ভাল মানুষ। সঠিক কথা বলেছেন। তবে যতটা দৃঢ় ভাবে বলা প্রয়োজন ছিল তা পারেননি। কারণ ক্ষমতায় রয়েছে তাঁরই দল। মুখ্যমন্ত্রী মহিলা না কি পুরুষ, সেটা বিচার্য নয়। কোনও রাজ্যেই মহিলাদের উপর নির্যাতন মেনে নেওয়া যায় না। আচমকা এই ঘটনা হয়নি। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। হাথরস থেকে হাঁসখালির ঘটনার কোনও ফারাক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পশ্চিমবঙ্গ এখন কলঙ্কিত রাজ্য হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। এক জনপ্রতিনিধি হয়ে দায়িত্ব নিয়ে প্রতিবাদ করুন। আরও বেশি দৃঢ়তা দরকার।" এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "সৌগতবাবু যাঁকে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এ রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও তো তিনিই। পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশটা তাহলে কে দেবেন?"
উল্লেখ্য, হাঁসখালিতে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে মাদক খাইয়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ধৃত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে। নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, মূল অভিযুক্ত যুবকের আমন্ত্রণে জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল ওই কিশোরী। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি নাবালিকার মৃত্যুর পর ময়নাতদন্তের আগেই ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার মতোও মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে।