সংক্ষিপ্ত
নদিয়া হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর মামলায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পরিবারের অভিযোগ, বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁদের মেয়ের দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
নদিয়া হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর মামলায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এদিকে ইতিমধ্য়েই হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডের পর মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে রাজ্য-রাজনীতি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যেও। বিতর্ক এটতাই ছড়িয়েছে যে, হাঁসখালি গণধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য অনভিপ্রেত এবং এর যথাযথযোগ্য তদন্ত হওয়া উচিত, কলকাতা হাইকোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হওয়া উচিত, বলে ইতিমধ্যেই এই আবেদন করেছেন এক আইনজীবী। প্রায় রোজ দিনই এক একটা ভয়াবহ নতুন তথ্য উঠে আসছে। হাঁসখালি গণধর্ষণকাণ্ডে এবার পরিবারের অভিযোগের মাধ্যমে উঠে এসেছে একটি ভয়াবহ তথ্য। পরিবারের অভিযোগ, বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁদের মেয়ের দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বন্দুক ঠেকিয়ে তাঁদের মেয়ের দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ
হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর মামলায় ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইোকোর্ট। এদিকে মৃতার পরিবাররে তরফে নতুন কিছু তথ্য সামনে আনা হয়েছে। মৃতার বাবার অভিযোগ, তাঁর বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে মেয়ের মৃতদেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মৃতার জ্যাঠতুতো দাদার অভিযোগ, হুমকি চলতে থাকার ভয়ে দেহটি মাদুরে জড়িয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবার পৌঁছে দেখে ততক্ষণে দেহ পুড়ে ছাই। উল্লেখ্য, তিনি এলাকায় বিজেপি কর্মী বলেই পরিচিত।তবে এই নতুন তথ্য সামনে উঠে আসার পর প্রশ্ন উঠেছে, এই তথ্য তাঁরা আগে কেন জানাননি। কেনই বা এতদিন অবধি সোহেলের বাবা, স্থানীয় তৃণমূল পঞায়েত সদস্য, 'সমরেন্দু গয়ালি বা আরও কারও নামে হুমকি দেওয়া বা ভয় দেখানোর লিখিত অভিযোগ জানানো হয়নি। মৃতার জ্যাঠতুতো দাদা বলেন, এতদিন খুব ভয়ে ছিলাম আমরা, সিবিআই তদন্ত করছে, জেনে সাহস পেলাম।'
আরও পড়ুন, 'ভালোবাসার পর তাঁকে পুড়িয়ে ফেলার অধিকার আছে কি', ধর্ষণকাণ্ডে মমতাকে প্রশ্ন তনুজার
তিন যুবক একে একে কিশোরীকে ধর্ষণ করে
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, সেই বার্থ-ডে পার্টিতে চারজনই মদ্যপান করেছিল। তারপর তিন যুবক একে একে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে মেয়েটি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এলাকারই দুই যুবক এবং এক তরুণী রাস্তা থেকে উদ্ধার করে তাঁকে বাড়ি পৌছে দেন। কিশোরীর মা আগেই জানিয়েছিলেন, মাঝরাতে মেয়ের পেটে খুব যন্ত্রনা হওয়ায় তিন গ্রামীণ এক চিকিৎসকের কাছে ওষুধ আনতে যান, ৫ এপ্রিল ভোর চারটে নাগাদ ফিরে এসে দেখেন, মেয়ে মারা গিয়েছে। মেয়েটির বাবা তখনও কিছু জানতেন না।
'মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে ধর্ষকরা আরও উৎসাহিত বোধ করছে'- অধীর
ইতিমধ্যেই হাঁসখালি গ্রামে গিয়ে মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন শান্তনু ঠাকুর সহ বিজেপির একাধিক নেতা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি দাবি করেছেন, বাংলা যেনও ক্রমশ ধর্ষকদের মৃগয়া ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে ধর্ষকরা আরও উৎসাহিত বোধ করছে।' সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, গণধর্ষণ, খুন , প্রমাণ লোপাটের পুড়িয়ে দেওয়া-এই যা চলছে। মুখ্যমন্ত্রী তার পাশে দাঁড়াচ্ছেন। নির্যাতিতার পাশে তিনি নেই। মেয়েদের নিরাপত্তা দুভাগ্যজনক এবং ভয়ঙ্কর অবস্থায় পৌছে গিয়েছে। '
আরও পড়ুন, 'আরশোলা বের হলেও এখানে খবর হয়', হাঁসখালিকাণ্ড প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মিডিয়াকে নিশানা মমতার
প্রসঙ্গত, সোমবার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে হাঁসখালির ধর্ষণকাণ্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেন , হাঁসখালিতে ধর্ষণ বলবেন না কি প্রেম না অন্তঃসত্ত্বা নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন। আমি পুলিশকে বলেছি, ঘটনাটি কী। ঘটনাটা অত্যন্ত খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু, শুনেছি ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটির নাকি লাভ অ্যাফেয়ার ছিল।' পরিবারের লোকজন তৃণমূলের সদস্য হিসেবে অভিযোগ ওঠার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'কারও বাবা-দাদা যদি তৃণমূল করে আর সেই ছেলে যদি প্রেম করে তাহলে কার কী করার আছে। বাংলার রাজ্যটায় সবাই তৃণমূল। কী করবেন বলুন। তৃণমূলকে টানার কী দরকার। তৃণমূল শুনলেই চোখে সর্ষে ফুল দেখছে।'