'৯৩ শতাংশ মহিলা নিজের পরিবারেই নিরাপদ নন', হাঁসখালি নিয়ে মমতার মন্তব্যের ব্যাখ্যা সুখেন্দুর

হাঁসখালি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে আসরে নামেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তাঁর দাবি, পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যেও সুরক্ষিত নন নারীরা। 

Web Desk - ANB | Published : Apr 13, 2022 12:09 PM IST / Updated: Apr 13 2022, 05:52 PM IST

হাঁসখালির গণধর্ষণ কাণ্ডকে কেন্দ্র করে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। এই ঘটনায় বেশ কিছুটা ব্যাকফুটে রাজ্যের শাসকদল। কারণ এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূল নেতার ছেলের। এদিকে এই পরিস্থিতির মধ্যে বিতর্ক আরও কিছুটা উসকে দেয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য। তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত জারি রয়েছে বিতর্ক। আর তাঁর সেই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। আর মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে আসরে নামেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তাঁর দাবি, পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবদের মধ্যেও সুরক্ষিত নন নারীরা। যা সমাজের চূড়ান্ত অবক্ষয়ের নিদর্শন। 

হাঁসখালি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তা নিয়ে সরব হয় বিরোধীরা। আসলে মৃত ১৪ বছরের কিশোরী গর্ভবতী ছিল কিনা, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল নাকি কোনও প্রেমঘটিত সম্পর্ক ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। আর তাঁর মন্তব্য আগুনে ঘি ঢালার কাজ করে। আর সেই মন্তব্যের ব্যাখ্যা করতে গিয়েই সুখেন্দু শেখর রায় বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, "ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ৩৪,০০০ যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। ৯৩ শতাংশ যৌন হেনস্থার ঘটনা পরিবারের মধ্যে ঘটেছে। সুতরাং একজন মহিলা, নারী, কিশোরী যদি পরিবারের মধ্যে সুরক্ষিত-নিরাপদ না হন, বন্ধু-বান্ধবের কাছে নিরাপদ না হন, তাহলে এটা চূড়ান্ত সামাজিক অবক্ষয়ের নিদর্শন। এটা পুলিশ, মিলিটারি দিয়ে শুধু আটকানো যাবে না। সেজন্য জাগ্রত জনমত দরকার। সেই জনমত তৈরির দায়িত্ব শাসক-বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলের এবং সমস্ত শুভবুদ্ধসম্পন্ন মানুষের।"

আরও পড়ুন- আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বিগ্ন, আজই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা চেয়ে চিঠি রাজ্যপালের

গত ৪ এপ্রিল হাঁসখালিতে নবম শ্রেণির এক কিশোরী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছেলের আয়োজিত জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিল। রাতের দিকে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেন এক মহিলা। সেইসময় অসুস্থ ছিল কিশোরী। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে পরদিন তার মৃত্যু হয়। কিন্তু অভিযুক্তদের চাপে ময়নাতদন্ত বা ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। গত শনিবার তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা। সেই ঘটনায় দু'জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারই মধ্যে মঙ্গলবার সেই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন- আরও ৪ সপ্তাহের স্বস্তি, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় আপাতত সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে না পার্থকে

হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ প্রসঙ্গে সুখেন্দুশেখরের দাবি, কোনও অপরাধীকে রেয়াত করা হয়নি। তৃণমূল চায় যে, হাঁসখালির ঘটনায় সিবিআই দ্রুত তদন্ত শেষ করে দোষীদের কড়া শাস্তি দিক। সিবিআই যাতে দ্রুত তদন্ত শেষ করে, সেই আশা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। 

অবশ্য এই ব্যাখ্যার পরও থামেনি বিতর্ক। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "যার পরিবারে যে রকম মানসিকতা সে সব ঘটনা সেভাবেই দেখে। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আর নারীদের উপর নির্যাতন বন্ধ হওয়া উচিত। আর সে সব না করে পারিবারিক যোগ থাকার তত্ত্ব দিয়ে ধর্ষণকে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।"

Share this article
click me!