সংক্ষিপ্ত
মঙ্গলবার এসএসসি-র গ্রুপ ডি এবং নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।
এসএসসি দুর্নীতি মামলায় আরও কিছুটা স্বস্তিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারণ সিবিআইয়ের কাছে তাঁর হাজিরার মেয়াদ আরও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মেয়াদ চার সপ্তাহ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দকুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে ১৩ মে পর্যন্ত।
মঙ্গলবার এসএসসি-র গ্রুপ ডি এবং নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সিবিআইয়ের কাছে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়েছিল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। এমনকী, জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রয়োজনে পার্থকে গ্রেফতারের ছাড়পত্রও দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে নজিরবিহীনভাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, হাজিরা এড়াতে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভরতি হতে পারবেন না তিনি। কিন্তু, তারপরই এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যান পার্থ। সেখানে গতকাল তাঁর সিবিআই দফতরে হাজিরার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- 'মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সব দুর্নীতি হচ্ছে', পার্থর হাজিরা নিয়ে আক্রমণ বিজেপি-কংগ্রেসের
এরপর বুধবার এই মামলার শুনানিতে পার্থের সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেওয়ার মেয়াদ আরও চার সপ্তাহ বাড়ানোর নির্দেশ দিল আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি এসএসসি সংক্রান্ত শুনানি চলা সমস্ত মামলাতেই চার সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দিল আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১৩ মে।
তবে হাজিরার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হলেও এই মামলা নিয়ে পার্থকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। গতকালই এই ঘটনার জন্য তৃণমূলকে আক্রমণ করেছিল বিজেপি ও কংগ্রেস। আর আজ সকালে এই ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ কটাক্ষের সুরে বলেন, "ধৃতরাষ্ট্র সেজেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর চোখের সামনে সব ঘটেছে। কোনও ব্যবস্থা নেননি। অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের বাকি জীবন যেমন কেটেছে, তেমনই কাটবে।"
আরও পড়ুন- 'টাকা নিয়ে চাকরি হয়েছে রাজ্যে,জবাব দিন পার্থ'- সংবাদমাধ্যমের সামনে বিস্ফোরক আইনজীবী
কেন এসএসসি দুর্নীতি মামলায় নাম জড়াল পার্থর?
উল্লেখ্য়, পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন এসএসসি-র গ্রুপ ডি পর্যায়ে নবম এবং দশম শ্রেণির নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ। এরপর সোমবার গ্রুপ-D নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট পেশ করে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন অনুসন্ধান কমিটি। সূত্রের খবর, রিপোর্টে দাবি করা হয়, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমতিতে যুগ্মসচিব যে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছিল তা বেআইনি। সরকারি নির্দেশ মেনে ওই কমিটি তৈরি হয়নি। প্যানেলে থাকা ৬০৯ জন পাশই করেননি। তা সত্ত্বেও তাঁরা চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। রিপোর্টে এই বিষয়টি জানার পরই পার্থকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, ১৩ মে পর্যন্ত পার্থকে হাজিরা দিতে হবে না।